অন্যকে সম্মান দিলে সম্মান পাওয়া যায়

আমি @arpita007 বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন সকল বাংলাদেশী এবং ইন্ডিয়ান বন্ধু -বান্ধবীগণ? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আজকে ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে আবার নতুন একটি ব্লগ নিয়ে ।

সোর্স

মানবজীবনের প্রকৃত সৌন্দর্য ও সার্থকতা নিহিত থাকে তার চারিত্রিক গুণাবলি এবং কাজের মাধ্যমে। আমরা প্রত্যেকে সমাজের একটি অংশ, এবং আমাদের প্রত্যেকের আচরণ, ব্যবহার ও কাজের মধ্য দিয়েই সমাজে আমাদের অবস্থান নির্ধারিত হয়। একজন মানুষ তার কথাবার্তা দিয়ে সাময়িকভাবে পরিচিতি লাভ করতে পারে, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী সম্মান অর্জনের জন্য প্রয়োজন—ভালো কাজ, সৎ জীবনযাপন এবং মানবিক আচরণ। এজন্যই বলা হয়, ভালো কাজ করুন, সম্মান পাবেন।

সম্মান এমন এক সম্পদ, যা টাকা দিয়ে কেনা যায় না। এটি অর্জন করতে হয় কর্ম, নৈতিকতা ও অবদানের মাধ্যমে। সমাজে যারা সত্যিকারভাবে সম্মানিত, তারা কেউই একদিনে এই মর্যাদায় পৌঁছাননি। তাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে ছিল পরিশ্রম, সততা, মানবসেবা এবং দায়িত্ববোধ। একজন শিক্ষক যদি নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে শিক্ষাদান করেন, তাহলে শিক্ষার্থীরা শুধু তার কাছ থেকে জ্ঞানই পায় না, বরং শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় হৃদয় দিয়ে তাকে সম্মান করে। একজন ডাক্তার যদি রোগীর চিকিৎসা আন্তরিকভাবে করেন, তখন সেই রোগী ও তার পরিবার চিরকাল তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকে। এর নামই হলো প্রকৃত সম্মান।

ভালো কাজ করার জন্য সবসময় বড় মঞ্চ বা সুযোগের দরকার হয় না। ছোট ছোট কাজের মধ্য দিয়েই আমরা মহত্ব প্রকাশ করতে পারি। রাস্তার ধারে ক্ষুধার্ত একজনকে খাবার খাওয়ানো, বৃদ্ধকে রাস্তা পার করে দেওয়া, প্রতিবেশীর বিপদে পাশে দাঁড়ানো—এসব কাজ সমাজে মানবিকতার বার্তা ছড়ায় এবং অন্যদের কাছ থেকে ভালোবাসা ও সম্মান অর্জনের পথ সুগম করে।

এছাড়া, একজন সৎ ও দায়িত্বশীল নাগরিক নিজের কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করে সমাজে ভালো উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো, পরিবেশ সংরক্ষণে সচেতন থাকা, নিজের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করা—এসবই ভালো কাজের অন্তর্ভুক্ত। সমাজে ভালো কাজের অভাব থাকলে অস্থিরতা, অন্যায় এবং অবিচার বেড়ে যায়। আর যখন একজন মানুষ ন্যায়ের পক্ষে, মানবতার পক্ষে এবং সৎ পথে এগিয়ে যায়, তখন পুরো সমাজ তাকে সম্মানের আসনে বসায়।

তবে সম্মান পেতে হলে শুধু বাহ্যিক ভালো কাজ নয়, বরং মনের গভীর থেকে সৎ ও নিঃস্বার্থ মনোভাব থাকতে হয়। অনেকে লোক দেখানোর জন্য ভালো কাজ করেন, যা দীর্ঘমেয়াদে কোনো সম্মান এনে দেয় না। বরং যারা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেন, তাদের সম্মান হয় টেকসই ও অন্তর থেকে উৎসারিত।

ভালো কাজের আরো একটি দিক হলো—এটি অন্যদের মধ্যে ভালো কাজের প্রেরণা জাগায়। একটি ভালো কাজ যেমন সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, তেমনি অন্যদের উৎসাহিত করে অনুরূপ কাজ করতে। ফলে সমাজে একটি গঠনমূলক সংস্কৃতি গড়ে ওঠে, যেখানে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহানুভূতি ও মূল্যবোধ বৃদ্ধি পায়।

অন্যদিকে, যারা খারাপ কাজের সঙ্গে যুক্ত, যেমন দুর্নীতি, প্রতারণা, সহিংসতা কিংবা অন্যের ক্ষতি করা, তারা হয়তো সাময়িক লাভ করতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে সম্মান হারিয়ে ফেলে। মানুষ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, এমনকি নিজের পরিবার ও বন্ধুরাও একসময় তাকে অবজ্ঞা করে। তাই জীবনের প্রকৃত সফলতা শুধু ধন-সম্পদে নয়, বরং সমাজে একজন সম্মানিত মানুষ হিসেবে পরিচিত হওয়ায় নিহিত।

শেষ কথা হলো, ভালো কাজ করার কোনো বিকল্প নেই। একজন মানুষ যত ভালো কাজ করবেন, ততই তিনি মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা অর্জন করবেন। ভালো কাজ আমাদের আত্মিক শান্তি দেয়, সমাজে মর্যাদা বাড়ায়, এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। তাই আসুন, আমরা প্রত্যেকে নিজের অবস্থান থেকে ভালো কাজের মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখি, এবং সত্যিকারের সম্মান লাভ করি।

আমি অর্পিতা নওশিন তিশা। আমি বর্তমানে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছি। আমার শখের মধ্যে রান্না করতে ভালোবাসি এবং গল্পের বই পড়তেও ভালোবাসি । তাছাড়া অবসর সময়ে ছবি আঁকতে,গান শুনতে এবং বিভিন্ন ধরনের কমেডি, থ্রিলার, হরর মুভি দেখতে পছন্দ করি। এছাড়াও হিন্দি ডাবিং করা নাটকগুলো দেখতে পছন্দ করি।