সমবয়সী ক্লাসমেট প্রেম কি সর্বদা কল্যাণকর?

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
❤️আসসালামুআলাইকুম/আদাব❤️

আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে। আশা করছি আমার আজকের ব্লগটি আপনাদের ভালো লাগবে।


couple-4641033_1280.jpg

ছবির উৎস


আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি বাস্তব ঘটনা শেয়ার করতে চলেছি।যখন ইন্টারমিডিয়েটে পড়তাম তখনকার ঘটনা এটা।আমরা যে বাসায় থাকতাম আমাদের পাশেই একটা সিঙ্গেল রুম ছিল।ওই রুমেই থাকতো ওই আপু আর ভাইয়া।আপু আর ভাইয়া দুইজনেই একই ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্ট ছিল।বন্ধু থেকে প্রেমের সম্পর্ক হয় তাদের।আর ভাইয়া ছিল ডিপার্টমেন্ট ফার্স্ট। মানে তাদের ক্লাসে সে সবচেয়ে ভালো স্টুডেন্ট।

যতদূর মনে আছে ওনারা দুইজনই একাউন্টিং বিষয়ে পড়াশুনা করতো।যখন ওনারা অনার্স কোর্সের শেষ বর্ষে তখন বিয়ে করেছিলেন দুজনে।আপুর বাড়ির থেকে বিয়ের চাপ দেওয়ায় তারা পড়াশুনা শেষ হওয়ার আগেই বিয়েটা করে ফেলেছিল।আপু এবং ভাইয়া তাদের বাড়ির লোককে ম্যানেজ করে দুই পরিবারের সম্মতিতেই বিয়েটা করেছিল। ভালো স্টুডেন্ট যেহেতু কোনো ভালো চাকুরি ঠিকই পাবে এটা বলেছিল আপু সবাইকে।

আমরা যখন ওই বাসায় যায় তখন ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাস ।তাদের বিয়েটা হয়েছিল আগের বছরের শেষের দিকে, তখন চার মাস তাদের বিয়ের বয়স ।যেহেতু তারা বিয়ে করে ফেলেছিল,তাই তাদের দুজনের খরচ তো আর বাড়ি থেকে বহন করবেনা এটাই স্বাভাবিক বিষয়।প্রায় তাদের মধ্য অশান্তি দেখা যেত।ওই অল্পদিনের সংসারেই।আমার বান্ধবীরা যে রুমে থাকতো সেই রুম আর আপুদের রুম একদম পাশাপাশি ছিল।তাই শোনা যেত প্রায় চিল্লাচিল্লির শব্দ।তাদের ঝামেলা হতো এজন্যই ভাইয়ার সংসার নিয়ে তেমন একটা সিরিয়াসনেস ছিলনা।তিনি খেলাধুলা করে বেড়াতেন আর মাত্র একটা টিউশন করতেন।আপু অন্য টিউশন করতে বললে করাতেন না।তার নাকি টিউশন করতে ভালো লাগেনা।

সেই সময়ে আপু টিউশন করিয়ে ৭০০০ টাকা ইনকাম করতেন আর ভাইয়া ২০০০ টাকা। এভাবে তাদের চলতে বেশ কষ্ট হতো।আপু তার বাবার বাড়ি থেকে প্রায় সংসার খরচ নিয়ে এসে চালাতেন।এভাবে দিন যেতে থাকে।কিন্তু ভাইয়ার কোনো চেইন্জ আসেনা।আমরা ওই বাসায় তো মেস করে ছয়জন বান্ধবী থাকতাম।একদম দেড় বছর ছিলাম ওখানে।একই অবস্থা ছিল তাদের সংসারে ঝামেলা লেগেই থাকতো।

আপুর সাথে দেখা হলে প্রায় বলতো যে বাড়ির লোকের কথা মতো বিয়ে করে নিলে সুখী হতাম।এখন এতো কষ্ট করতে হতোনা।এই ক্লাসমেট প্রেম গুলোতে যে সমস্যা হয় এগুলো শুনতাম আগে ।কিন্তু আবেগের বশবর্তী হয়ে সেগুলো মাথায় নিইনি। এখন বুঝতেছি জীবন অনেক কঠিন।তোমরা কখনো এই ভুল করোনা। সমবয়সী ক্লাসমেট প্রেম সবসময় কল্যাণকর নয়।এই গল্পটি দিয়ে এটাই বুঝতে পারা যায়।আপনাদের কি মতামত বন্ধুরা সমবয়সী ক্লাসমেট প্রেম নিয়ে কমেন্ট জানতে কিন্তু ভুলবেন না।


ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আজকের মতো এখানেই শেষ করছি বন্ধুরা । আবার নতুন কোন ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো। সেই পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।


❤️আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি❤️
আমি রাহনুমানূর দিশা।আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী।আমি বর্তমান অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনা করছি।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাথে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় থেকে যুক্ত রয়েছি।বাংলা ভাষায় লিখতে, পড়তে এবং নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার ভালো লাগে।এছাড়াও ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতে অনেক ভালো লাগে।অবসর সময়ে গান শুনতে এবং বাংলা নাটক দেখতে পছন্দ করি।


Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

❤️আল্লাহ হাফেজ❤️

Sort:  
 2 years ago 

ভালোবাসা একটা জিনিস প্রাত্যহিক জীবনে ঘটে যাওয়া জীবনের চলার পথের অভাব সেটা আলাদা বিষয়। আসলে একটি কথা আমরা সকলেই জানি অভাব যখন দরজায় এসে দাঁড়ায় ভালোবাসা তখন জানালা দিয়ে বের হয় সেই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন দুজনেই। আবার ভালবাসার মধ্যে যদি অভাব না থাকতো তাহলে হয়তো এই ধরনের চিল্লাচিল্লি বা সমস্যা সৃষ্টি হতো না যাই হোক অর্থই অনর্থের মূল।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

জি ভাইয়া একদম ঠিক বলেছেন আপনি।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

আমার মনে হয় সত্যিকারের ভালোবাসা যদি মানুষটির প্রতি থাকে তবে যে কোন অবস্থায় সেই মানুষটিকে সুখে রাখার চেষ্টা করবে মানুষটি।তাতে বয়স কোন বিষয় নয়।ওই ভাইয়াটির হয়তো আপুর প্রতি ভালোবাসার চাইতে মোহটাই তখন কাজ করেছিল বেশী।