লোভনীয় ও মুচমুচে মিষ্টি কুমড়ার চপ / কুমড়ানি।।

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ-
পরম করুনাময় অসীম দয়ালু, মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করছি-

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সদস্য বন্ধুরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর আশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি,আলহামদুলিল্লাহ। আজকে আমি আপনাদের সাথে প্রতিদিনের মতো আবারো রেসিপি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আমার আজকের ব্লগটি হচ্ছে রেসিপি নিয়ে। আজ আমি আপনাদের সাথে মিষ্টি কুমড়ো দিয়ে কুমড়ানি রেসিপি শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের সবার কাছে রেসিপিটি অনেক ভালো লাগবে।

বেগুনি আমরা সবাই পছন্দ করি। তবে যাদের শরীরে এলার্জি আছে তারা বেগুন জাতীয় কোন প্রকার খাবার খেতে পারেন না। তাছাড়া বেগুনি কিন্তু বেগুন ছাড়া হয় না। তবে বেগুনি না খেলেও ভালো লাগে না। তাই যাদের এলার্জি আছে তাদের জন্য একটি এলার্জি মুক্ত ও স্বাস্থ্যকর রেসিপি হলো এই কুমড়ানি রেসিপি। মিষ্টি কুমড়া দিয়ে বেগুনের মতোই বেগুনি অর্থাৎ কুমড়ানি বানানো যায়। মিষ্টি কুমড়ো দিয়ে এই রেসিপিটি বানিয়ে খেলে বেগুনের চেয়েও বেশি স্বাদ লাগে। তাই আমি এই রেসিপিটি বেগুনের পরিবর্তে তৈরি করে প্রায়ই খেয়ে থাকি। আর এই রেসিপিটি এখন আমার পছন্দের একটি তালিকায় যুক্ত হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া আমার স্বামীর অনেক এলার্জি রয়েছে। তাই তিনি এলার্জির কোন খাবার খাননা। তাই আমি বুদ্ধি করে বেগুনের পরিবর্তে মিষ্টি কুমড়ো দিয়ে এভাবে বেগুনি অর্থাৎ কুমড়ানি বানায়। এই রেসিপিটি পরিবারের সবাই পছন্দ করে। কেননা এই রেসিপিটি বেগুনীর চেয়েও সুস্বাদু হয়। তাহলে চলুন বন্ধুরা আপনাদের মাঝে কুমড়ানি রেসিপির প্রত্যেকটি ধাপ শেয়ার করি।

HFcFmHBiAeR2oP8xXotf9GhVZ2UVLfizAkm26SLD9Ksq63W9QCFYJ4RWfJUnuwYDacpgAxcfxkHnf1RqhXXtEQy1BM5QBFNztf7eA25NtxzmoUpH84Ub5WrreZ5mpwKNVn2hj1DzjS6H8mnut1GkZGBEHPjR3Qjph6n4NSUTxibbuAJyUG9tjH.png

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81LwSQQb6zZrvpa6kRc2ijbuxYFpPQYF6CrYPJoBTs85rLBcmqWTF8A6e4HXQ5hEtayZFEdWB47y9FgmBkqdjUJr.jpg

মিষ্টি কুমড়াচার ভাগের এক ভাগ
বেসনএক বাটি
কর্নফ্লাওয়ারএক চামচ
খাবার সোডাএক চিমটি
রসুন বাটাহাফ চামচ
আদা বাটাহাফ চামচ
হলুদের গুঁড়োএক চামচ
জিরার গুড়াহাফ চামচ
এলাচি দারুচিনি গুড়াহাফ চামচ
ধনিয়ার গুড়াহাফ চামচ
সরিষার তৈলপরিমান মত
লবণপরিমাণ মতো

রন্ধন পদ্ধতি

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81LwSQQb6zZrvpa6kRc2ijbuxYFpPQYF6CrYPJoBTs85rLBcmqWTF8A6e4HXQ5hEtayZFEdWB47y9FgmBkqdjUJr.jpg

প্রথম ধাপ-

ছুটো ও মাঝারি সাইজের একটি মিষ্টি কুমড়া নিয়ে নিলাম। মিষ্টি কুমড়াটি চার ভাগের এক ভাগ করে নিলাম। তারপর বেগুনের মতো সাইজ করে পাতলা পাতলা করে কেটে নিলাম। একদম বেগুনির মতোই সাইজ করে নিয়েছি। তারপর ভালোভাবে ধুয়ে একটি বাটিতে রেখে দিলাম।

দ্বিতীয় ধাপ-

পর্যায়ে বেসনের সাথে সবগুলো উপকরণ অর্থাৎ আদা বাটা, রসুন বাটা, জিরা গুঁড়ো, ধনিয়ার গুঁড়ো, হলুদের গুঁড়ো, গরম মসলা গুড়া, লবণ ও খাবার সোডা একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিলাম। তারপর দিয়ে দিলাম কর্নফ্লাওয়ার। সবগুলো উপকরণ একসাথে ভালোভাবে এমন ভাবে মিশিয়ে নিলাম যাতে করে সবগুলো ভালোভাবে মিশে যায়।

তৃতীয় ধাপ-

এ পর্যায়ে মসলা মেশানো বেসনের মধ্যে অল্প করে পানি দিয়ে একটি ব্যাটার তৈরি করে নিলাম। ব্যাটারটি তৈরি করতে গেলে একটু খেয়াল রাখতে হবে।এর মধ্যে যেন বেশি পানি না চলে যায়। এটি একটু ঘনত্ব হবে। তাহলে বেগুনি অর্থাৎ কুমড়ানি গুলো ফুলকো ও মোচ মুছমুছে হবে। আমি ব্যাটারি বানানোর পর প্রায় তিন ঘন্টা রেস্টে রেখে দিয়েছিলাম। যার কারনে মিষ্টি কুমড়ার কমড়ানি গুলো দেখতেও দারুন হয়েছে।

চতুর্থ ধাপ-

এরপর একটি কড়াই এর মধ্যে পরিমাণ মত সরিষার তেল দিয়ে ভালোভাবে গরম করে নিলাম। তারপর কেটে রাখা মিষ্টি কুমড়ার স্লাইস গুলোকে বেসনের ব্যাটারের মধ্যে ভালোভাবে চুবিয়ে তেলের মধ্যে দিয়ে দিলাম।

পঞ্চম ধাপ-

এভাবে চুলার আঁচ মিডিয়াম লোতে রেখে কুমড়ার স্লাইসগুলোকে ভেজে নিলাম। কুমড়ার স্লাইসগুলো তেলের মধ্যে ছাড়ার সময় তেলটা একটু ফেনা ফেনা হয়ে গেছে। কারণ এটা সরিষার তেল। কোন কিছু ভাজাভাজু করলে তপলটা ফেনা ফেনা হয়ে যায়। যাইহোক এভাবে আস্তে আস্তে কুমড়ানি গুলো ভেজে নিলাম। এবার পরিবেশন এর পালা।

পরিবেশন-

রেসিপিটি এতটাই সুস্বাদু হয়েছে যে , আমি আপনাদের মাঝে বলতে পারব না। তবে আমি আশা করি, আপনারা যদি এই রেসিপিটি ট্রাই করেন। তাহলে পরবর্তীতে প্রতিদিন বানিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই। কেমন হলো আমার আজকের রেসিপি। অবশ্যই কমেন্টসের মাধ্যমে জানাবেন। সবার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল। এ প্রত্যাশা রেখে এখান থেকে বিদায় নিতেছি আল্লাহ হাফেজ।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।

ফটোগ্রাফির বিবরণ:

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSj1ATxRsaEvyH89EyziiK3D1ksn1tTDvDwLCveqrhctVcDnDqtNbsqFMtuqD1RetzrgjG.png

ডিভাইসমোবাইল
মডেলরেডমি নোট-৮
শিরোনামলোভনীয় ও মুচমুচে মিষ্টি কুমড়ার চপ / কুমড়ানি
স্থাননিজবাসা, নারায়নগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ।
তারিখ২১- ০৩ -২০২৫
কমিউনিটিআমার বাংলা ব্লগ
ফটোগ্রাফার@titash

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSfQKFP87GjNCaLdCLKkYFWdxRmYuKurkfDpnYWoUUypXiwgziwKKNP24nNC65i32Am8Fp.png

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

আমার পরিচিতি

আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9uuNWjCEgJj5LnknUa3pWA9yop6dT9GDfEUZtz2oDgA9ocMHrCEtkFpngXowo13q8Mn1YvzEMh5bSRg1SNaKSZwbsLwb3YA.png

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siCoMX3by8iWdE4qYzWA7pZHzh4KthdoHPj2eEciPaXhHTdxhx5dKApkU8hxE3mUrybeUbtQCvbs4JC247APSjksrR6prneL2GBtrunMiz4r5CiYySVGKj1e3nT19qBCX5ekz5F.png

5QqP4NVdsPNcDeePyfoZLTLv8efTACU5P6GADTBgMgfXR7uJx5fN91AE46tFfFA7GwMq22wjUwwY5XDyUBMksyZSJGUEyK1Re6UWVZ1PqVR2ntgu73qAW8iDh6yPt8YVsiJ7enc87gmY874JVVHPQo6hSZvUs47FymTjqs43bSUF1Wvtd8T.jpg

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzL1as2zt5nA5iP9iEBmXtJKZZD3SHGtdFKZ13Up5EmSAxpDYtwYvvxyhsR48F5wdZ6ZhgEKtW9w1csKVawJHrqc3fgSkcpz8WsTY1MvhswZsey8zNe3vkwTdKjCivA3Z6dpaPre.png

image.png

Posted using SteemMobile

Sort:  
 3 months ago 

দারুণ একটা রেসিপি। বেগুনের বিকল্প হিসেবে মিষ্টি কুমড়া ব্যবহার করা বেশ চমৎকার আইডিয়া। স্বাস্থ্যকর এবং মুচমুচে কুমড়ানি চায়ের সঙ্গে দারুণ জমবে। রেসিপির ধাপগুলো সুন্দরভাবে বোঝানো হয়েছে। একদিন ট্রাই করতেই হবে! ধন্যবাদ দারুণ একটি আইডিয়া শেয়ার করার জন্য।

 3 months ago 

রমজান মাসে যদিও খাওয়া-দাওয়া কম তবুও ইফতারি অথবা রাতের মুহূর্তের জন্য একটু ভিন্ন স্বাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। দিনশেষে ভিন্ন ভিন্ন আইটেমের খাবারগুলো মনে শান্তি যোগায়। ঠিক তেমনি ছিল আপনার আজকের এই দারুন রেসিপি।

 3 months ago 

মিষ্টি কুমড়ার চপ দেখলে একটা কথা মনে পড়ে যায়!সেটাই এখন আর বলা যাবে না😁তবে মিষ্টি কুমড়ার চপ খেতে আসলে অনেক মজা লাগে।মিষ্টি কুমড়ার চপ তৈরি করার পদ্ধতি আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 3 months ago 

ইফতারিতে বিভিন্ন ধরনের ভাজাপোড়া খেতে সকলেই ভালোবাসে। বেগুনি না ছাড়া ঠিক চলে না। আসলেই অনেকে চুলকানির কারণে বেগুনি খেতে পারেনা। তবে যারা বেগুনি খেতে পারে না তাদের জন্য কুমড়ানি একটি দারুন রেসিপি। বেগুনি পরিবর্তে কুমড়ানি খাওয়া যেতেই পারে। কুমড়ানি তৈরি করার দারুন একটি রেসিপি দিলেন। রেসিপি টা দেখে তো লোভ লেগে গেল। চমৎকার একটি রেসিপি শেয়ার করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপু।

 3 months ago 

মিষ্টি কুমড়ার চপ রেসিপি দেখেছি অনেকের কাছ থেকে কিন্তু কখনো খাওয়া হয়নি। আপনার আজকের শেয়ার করা রেসিপি দেখে তো মনে হচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হবে। রোজার ইফতারিতে এই ধরনের খাবার খেতে খুব ভালো লাগে। তবে ভাজাপোড়া খেতে একটু ভয় কাজ করে কারণ গ্যাস বেড়ে যায় তাই। রেসিপি কালার কম্বিনেশন উপস্থাপনা দেখে অনেক ভালো লেগেছে।

 3 months ago 

মিষ্টি কুমড়ার যে চপ করে খাওয়া যায় সেটা আমি আগে জানতাম না আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে আজকে জানতে পারলাম।তবে দেখে মনে হচ্ছে অনেক বেশি সুস্বাদু হয়েছে। আপনি অনেক সুন্দর করে কুমড়ানি তৈরি করেছেন।

 3 months ago 

এত মজাদার চপ তৈরি করেছেন দেখে তো খুব ভালো লাগলো। দেখে বুঝতেই পারছি এটা খেতে খুব দারুণ লেগেছিল। এরকম মজার মজার চপ ইফতারের জন্য তৈরি করলে কিন্তু খুব ভালো লাগে। আর গরম গরম এবং মুচমুচে হলে তো বেশি ভালো লাগে। ধন্যবাদ এটা এত সুন্দর করে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।

 3 months ago 

এলার্জির কথা বলতে গেলে বেগুনে যেমন এলার্জি ঠিক তেমনি কুমড়োতেও অনেক এলার্জি আছে আপু। হয়তোবা সবাই কুমড়ো খেলে সে এলার্জির প্রভাব হয় না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে কুমড়োর কারণেও এলার্জির সমস্যা দেখা দেয়। যাই হোক তবে বেগুনির বদলে কুমড়ো দিয়ে তৈরি করা বেগুনি খেতে ভীষণ ভালো লাগে। কিছুদিন আগে আমিও কুমড়ো দিয়ে এটা তৈরি করেছিলাম।