## আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা-৩৯।লইট্টা শুটকি দিয়ে এচোড় বা কাচা কাঁঠালের ভর্তা।
হ্যাল্লো আমার বাংলা ব্লগবাসী। আশা করি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন। আমি @tithyrani আপনাদের মাঝে হাজির হলাম আজ আমার বাংলা প্রতিযোগিতা-৩৯। শেয়ার করো তোমার ইউনিক ঝাল ভর্তা রেসিপি কনটেস্ট এ অংশগ্রহণের জন্য আমার বানানো ঝাল ভর্তার রেসিপি নিয়ে। আমার বাংলা ব্লগে যেহেতু আমার পথচলা খুব বেশি দিনের নয়, তাই এটি আমার প্রথম কনটেস্ট এ অংশগ্রহণ। এজন্য আমি খুবই এক্সাইটেড এবং আনন্দিত।
আসলে ভর্তা আমাদের খাবারের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। গরম গরম ভাতের সাথে পছন্দের এক-দুই পদ ভর্তা থাকলেই তৃপ্তি সহকারে খাওয়া হয়ে যায়। মাঝে মাঝে অসুস্থ অবস্থায়ও যখন খাবারে অরুচি চলে আসে, মুখে যেনো কোন কিছুরই স্বাদ লাগে না, ঝাল ঝাল ভর্তাই সাহায্য করে রুচি ফিরিয়ে আনতে। অনেকেই আছেন যারা বিভিন্ন রকমের মাছ খান না, বা মাংস পছন্দ করেন না। তবে ভর্তা পছন্দ করেন না- এমন মানুষ আমি তো একজনও দেখি নি। বরং এমন কয়েকজনকে দেখেছি যারা তেমন ঝাল খেতে পারেন না, তবে মজার কোন ঝাল ভর্তা দেখলে আর হুশ থাকে না। খান আবার খেয়ে খেয়ে বলেন, উফফ কী মজা!! 🫢🫢
আজ আমি হাজির হয়েছি, লইট্টা শুটকি দিয়ে এচোড় বা কাচা কাঁঠালের ঝাল ভর্তার রেসিপি নিয়ে।
তো চলুন রেসিপি শুরু করার আগে এক নজরে উপকরণ গুলো দেখে নেই--
উপকরণ
লইট্টা শুটকি
এচোড় বা কাচা কাঁঠাল
পেয়াজ
রসুন
শুকনো মরিচ
কাচামরিচ
আস্ত জিরা
জিরা গুড়া
মরিচ গুড়া
হলুদ গুড়া
সয়াবিন তেল
সরিষার তেল
লবণ
রন্ধনপ্রণালী
প্রথমে শুটকি গুলো ভালো করে পরিষ্কার করে কেটে নিয়েছি। কাটা শুটকি গুলো আগে ৫ মিনিট নরমাল পানিতে ভিজিয়ে রেখেছি। এতে শুটকির গায়ে লেগে থাকা বালি গুলো ঝরে যেতে সুবিধে হয়। সরাসরি গরম পানি আগেই দিলে সেটার সাথে শুটকির অংশও ধোয়া যায়। তাই আমি আগে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে তারপর গরম পানি নিয়ে ৩/৪ বার ধুয়ে শুটকি ভালো করে পরিষ্কার করে নিয়েছি।
কড়াইয়ে পরিমাণ মত সয়াবিন তেল দিয়ে আগে শুকনো মরিচগুলো ভেজে নিয়েছি। তারপর সেই তেল এ পেয়াজ এবং রসুনগুলো লাল করে ভেজে তুলে নিয়েছি।
এবার কাড়াইতে আরেকটু তেল দিয়ে সেই তেলে পরিষ্কার করে রাখা লইট্টা শুটকি দিয়ে ভালো করে ভেজে নিবো। শুটকি ভাজা হয়ে গেলে একটু সাইড করে সেই তেলে আস্ত জিরা ফোড়ন দিবো। জিরা গুলো হালকা ভেজে তারমধ্যে এবার কাচা কাঁঠালের টুকরো গুলো দিয়ে ভালো করে ভেজে নিবো।
(এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, আমি যে কাচা কাঁঠাল গুলো ব্যবহার করছি, তা আসলে আগে থেকে হালকা ভেজে ডীপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করা ছিলো। যেহেতু কাচা কাঠাঁল আমার খুব পছন্দের খাবার, আর সেটা তো সবসময় পাওয়া যায় না, তাই আমি এভাবে সংরক্ষণ করে অনেক দিন পর্যন্ত খেয়ে থাকি। এভাবে সংরক্ষণ করলে স্বাদেও আহামরি কোনো চেঞ্জ আসে না)

কাচা কাঠঁাল গুলো ভালো করে ভাজা হলে এর মধ্যে একে একে লবণ, হলুদ গুড়া, জিরার গুড়া এবং লাল মরিচের গুড়া দিয়ে দিবো। মসলা গুলো কসানোর জন্য খুব সামান্য একটু জল দিয়ে দিবো। খুব বেশি জল এখানে ব্যবহার করা যাবে না, যেহেতু এটা ভর্তা। যতটুকু জল দিয়েছি, তা যেনো ভালোভাবে টেনে নেয় সেটা নিশ্চিত করতে আমি কাঁঠাল গুলো ভালো করে খন্তি দিয়ে চেপে চেপে ভাজবো। এতে করে কাঁঠালের গায়ে কিছুটা জল লেগে থাকলে সেগুলোও শুকিয়ে যাবে।
তারপর ভাজা শুটকি-কাঁঠাল গুলো ঠান্ডা হতে দিবো।
ভাজা শুটকি-কাঁঠাল ঠান্ডা হয়ে রুম টেম্পারেচার এ এলে আমি ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিবো। আমার বাসায় সময়ের প্রয়োজনে শুরু থেকেই আমি ব্লেন্ডারের উপর নির্ভরশীল। বাসায় শিল-পাটা নেই, তাই ব্লেন্ডারেই ব্লেন্ড করে নিয়েছি।অবশ্যই আপনাদের সুযোগ থাকলে শিল-পাঠায় বেটে নিবেন।
এদিকে ভাজা শুকনো মরিচ, পেয়াজ-রসুন ভালো করে একে অপরের সাথে মেখে নিয়েছি।তারপর কাচামরিচ কুচি এড করে দিয়েছি। এই কাচামরিচ গুলো আমার শাশুড়ির নিজের গাছের। দেখতে চিকন হলেও ঝাল অনেকটা বোম্বাই মরিচের ঝালের কাছাকাছি। বাইটে যদি এক টুকরো কাচামরিচ পরে, ভেতরে ভেতরে সে তার কারিশমা দেখিয়ে দিবে টাইপ 🥵🥵। আর তা ছাড়াও আমি শুধু শুকনো মরিচের উপর নির্ভরশীল না থেকে সাথে মরিচ গুড়া আর এই কাচা মরিচ ব্যাবহার করেছি। তাই বোঝাই যাচ্ছে ভর্তায় ঝালের কমতি হবে না 😋
এবারে ব্লেন্ড করা শুটকি-কাচা কাঁঠাল গুলো এড করে ভালো করে হাতে মেখে নিবো। পরিমাণ মত সরিষার তেল মিশিয়ে নিবো। ব্যাস, আমার ঝাল ঝাল লইট্টা শুটকি দিয়ে এচোড় বা কাচা কাঁঠাল এর ভর্তা পরিবেশন এর জন্য একদম তৈরি।
পরিবেশন
এই ছিলো আমার আজকের পরিবেশন। আমি অবশ্য নতুন রাধুনি। তাই হয়তো পরিবেশনেও কিছুটা কাচা। ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ থাকলো। তবে আপনারা কেউ এই ভর্তা করে থাকলে আমাকে অবশ্যই জানাবেন কিন্ত কেমন হয়েছে।
ভর্তা আমাদের খাবারের অবিচ্ছেদ অংশ কিনা জানিনা তবে ভর্তা খেতে ভালোই লাগে । কিন্তু ভর্তা করতে আমার কাছে অনেকটা ঝামেলা লাগে । এজন্য ভর্তা খুব একটা খাওয়া হয় না । আপনার ভর্তা দেখে কিন্তু খেতে মন চাইছে । এঁচোর আমি কোনদিনও খাইনি তবে সবাই দেখি খুব সুন্দর ভাবে রান্না করে খায় আবার ভর্তাও করা যায় দেখছি ।
শুঁটকি ভর্তা আমার ভীষণ প্রিয়। আসলে অনেক সময় আমরা বিভিন্নভাবে শুটকি ভর্তা করি। কিন্তু এভাবে কখনো শুটকি ভর্তা করা হয়নি আপু। লইট্টা শুঁটকি দিয়ে এচোড় বা কাচা কাঁঠালের ভর্তা আমার কাছে একেবারে নতুন মনে হয়েছে। নতুন একটি রেসিপি শিখতে পেরে বেশ ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ আপু। যেহেতু বিভিন্ন সময়ে আপনি শুটকি ভর্তা করে থাকেন, এই রেসিপি ফলো করে যদি কখনো ভর্তা করেন, আমাকে কিন্তু অবশ্যই জানাবেন যে কেমন লেগেছে আপনার...
বাহ দারুন একটা ভর্তা রেসিপি করেছেন যা আগে কখনো খাওয়া হয়নি অনেক সুন্দর হয়েছে। বিশেষ করে রেসিপির পরিবেশন টা মুগ্ধ করেছে আমাকে ।ইউনিটূ কিছু দেখলে খুবই ভালো লাগে আপনার জন্য শুভকামনা রইল
প্রথমেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আজকের এই ইউনিক ভর্তা রেসিপি প্রতিযোগিতার জন্য আপনি লইট্টা শুটকি দিয়ে এঁচোড় বা কাঁচা কাঁঠালের বেশ মজাদার ভর্তা রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার রেসিপিটা অনেক বেশি অনেক মনে হলো আমার কাছে। এই ভর্তা গরম ভাত দিয়ে খেতে অনেক বেশি ভালো লাগবে। তবে আপনি নতুন রাধুনী হলেও অনেক সুন্দর ভাবে রেসিপি টা তৈরি করলেন এবং পরিবেশন করলেন। ডেকোরেশন টা অনেক সুন্দর ছিল।
আপনার ডেকোরেশন পছন্দ হয়েছে জেনে খুশি হলাম !
আমি স্কুলে থাকতে গার্হস্থ বিজ্ঞানে এই ডেকোরেশন এর জন্য নাম্বার কম পেতাম 🫣🫣
প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। যেকোন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অনেক নতুন কিছু শিখতে পারা যায়। আসলে গরম ভাতের সাথে যে কোন ভর্তা খেতে ভীষণ ভালো লাগে। তাছাড়া ভর্তা আমার খুবই পছন্দের একটি খাবার। আপনি খুব সুন্দর করে লইট্টা শুটকি দিয়ে কাঁচা কাঁঠালের ভর্তা করেছেন।
আসলে যখন মুখে রুচি থাকে না তখন ভর্তা মুখে রুচি আনতে সাহায্য করে। কাঁঠালের এচোড় দিয়ে এভাবে কখনো ভর্তা করে খাওয়া হয়নি। খুব সুন্দর একটা রেসিপি শেয়ার করেছেন আর প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। ইউনিক একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন আপনি। দেখে লোভ সামলানো যাচ্ছে না। কাঁচা কাঁঠাল দিয়ে এভাবে কখনো ভর্তা করে খাওয়া হয়নি। তৈরি করার পদ্ধতিটা খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। সুস্বাদু ও লোভনীয় একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ওয়াও প্রথমে আপনাকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।লইট্টা শুটকি দিয়ে এচোড় বা কাচা কাঁঠালের ভর্তা। প্রতিটি ধাপ আপনি চমৎকারভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন।শুভকামনা রইল এত সুন্দর একটি পোস্ট উপহার স্বরূপ দেওয়ার জন্য।
লইট্টা শুটকি দিয়ে এচোড় বা কাচা কাঁঠালের ভর্তা রেসিপিটি বেশ ইউনিক একটি রেসিপি। আপনি বেশি ইউনিক একটি রেসিপি আজকে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। এরকম ভর্তা আমি আগে কখনো খাইনি। এটি দেখে অনেক ভালো লাগছে যে আপনি আমার বাংলা ব্লগের ইউনিক ভর্তা রেসিপি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন । অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমিও আনন্দিত। আর বাসায় যদি কখনো এই রেসিপি ফলো করে ভর্তা বানানো হয়, মনে করে জানাবেন কেমন হয়েছে। তাতে আরো বেশি খুশি হবো।
আমার বাংলা ব্লগ প্রতিনিয়ত অনেক মজার মজার প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে।যা থেকে আমরা সবাই নতুন নতুন অনেক কিছু শিখতে পাই।এবারের প্রতিযোগিতার বিষয় টিও অনেক মজার এখান থেকে আমরা অনেক মজাদার ভর্তা রেসিপি গুলো শিখে নিতে পারবো।মনা তোমার এঁচোড় আর শুঁটকি দিয়ে ভর্তা রেসিপি টি একেবারে ইউনিক একটি রেসিপি হয়েছে।এতটাই লোভনীয় লাগছে যে লোভ সামলানো দ্বায় হয়ে গেছে।প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য তোমাকে অনেক অনেক অভিনন্দন ও শুভকামনা জানাই।♥️
ধন্যবাদ দিদিভাই। আমি আমার বাংলা ব্লগের আগের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা গুলোও দেখেছি। আসলেই অনেক ইউনিক ইউনিক আইডিয়া পাওয়া যায় এরকম ইউনিক প্রতিযোগিতা থেকে।