সিলেট ভ্রমণ: রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট (সপ্তম পর্ব)
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
বৃহস্পতিবার, ০৯ ই জানুয়ারি ২০২৪ ইং
রাতারগুল সোয়াম্প আমাদের বাংলাদেশের সিলেটের সুন্দর বন নামে পরিচিত। রাতারগুল সোয়াম্প বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জলাবন। বাংলাদেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি জলাবন রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট জলাবন। এই জলাবন টি প্রায় পাঁচশত একর জমি নিয়ে বিস্তৃত। আসলে এটি ছোট জলাবন হলেও অ্যামাজনের থেকে কোন অংশে কম নেই। কেননা, পুরো বন টি দেখতে অনেক বেশি সুন্দর। আসলে এই বনের দৃশ্য গুলো যদি ড্রোন শুট করা যেত, তাহলে পুরো বনের সৌন্দর্য খুবই সুন্দর ভাবে ফুটে উঠতো। যাইহোক, কোন এক সময় আপনাদের সাথে এই বনের ড্রোন শুট শেয়ার করবো। আসলে এই বনের সৌন্দর্য লিখে প্রকাশ করার মতো নয়। তবে, শীতকালে এই বনের সৌন্দর্য তেমন একটা থাকে না। কেননা, শীতকালে এই বনের মধ্যে তেমন একটা পানি থাকে না।
তাই শীতকাল চলে আসলেই এই বনটি হয়ে যায় আর দশটি বনের মতোই। তবে, যখন এই বনের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি থাকে তখন নৌকার মধ্যে ঘোরাঘুরি করে ও বেশ মজা পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা যখন এই বনের মধ্যে ঘুরতে গিয়েছিলাম, তখন তেমন একটা পানি ছিল না এই বনের মধ্যে। তবু ও আমরা এই বনের সৌন্দর্য উপভোগ করার চেষ্টা করেছি। তবে, আবার আমরা বর্ষার মৌসুমে ঘুরতে যাবো রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টের মধ্যে, এমনটাই ইচ্ছা আছে আমার। যেহেতু আমরা শীতকালের শুরুতে এই বনের মধ্যে ঘুরতে গিয়েছিলাম, তখন আমরা শুধু মাত্র এই বনের সবুজ গাছপালার সৌন্দর্য খুবই সুন্দর ভাবে উপভোগ করেছি। আসলে এই বনের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে সবুজ গাছপালা রয়েছে।
তবে, শীতকালে কিছু কিছু গাছের পাতা একদম ঝড়ে পড়ে গিয়েছিল। আবার, কিছু কিছু গাছের পাতা নতুন করে বের হয়েছিল। আমার কাছে এই বনের প্রতিটি গাছপালা একদম অপরিচিত মনে হয়েছে। কেননা, এসব গাছপালা ইতিমধ্যে আমি কখনো দেখিনি। রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টের মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে গিয়ে প্রথম এই ধরনের গাছপালা গুলো দেখেছিলাম। এই বনের প্রতিটি গাছ লম্বায় অনেক টা বড়। যেহেতু বছরের বেশিরভাগ সময় এই বনের প্রতিটি গাছের নিচে পানি থাকে, তাই প্রতিটি গাছের নিচে অনেক বেশি শিকড়। আসলে এই শিকড় গুলো গাছ গুলো আরো বেশি শক্তিশালী ভাবে ধরে রেখেছে। প্রতিটি গাছের সৌন্দর্য অনেক বেশি সুন্দর।
আগে শুনেছিলাম এই বনের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পশু পাখি রয়েছে। তবে, আমার চোখে তেমন কোন পশুর দেখা মিলেনি। কিন্তু এই বনের মধ্যে প্রচুর পাখি রয়েছে। প্রতিটি পাখি অনেক বেশি সুন্দর।পাখি গুলো গাছের ডালে বসে বসে সব সময় কিচিরমিচির শব্দ করতো। তাদের শব্দ শুনতে বেশ ভালোই লাগছিলো আমার কাছে। আমাদের দেশ থেকে ধীরে ধীরে পাখি গুলো বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তবে, এই বনের মধ্যে এতো পরিমাণ সুন্দর সুন্দর পাখি দেখে বেশ ভালোই লাগছিলো আমার কাছে। বেশ কয়েকটি প্রজাতির পাখি গুলো একত্রিত হয়ে কিচিরমিচির শব্দ করে তারা। যাইহোক, আমরা নৌকায় ঘোরাঘুরি করার মাঝামাঝি সময়ে এক জায়গার মধ্যে দাঁড়িয়ে যাই এবং সেখানে আমরা সকলেই নেমে পড়ি বনের মধ্যে হাঁটাহাঁটি করার জন্য। তবে, অন্যান্য সময়ে এই বনের মধ্যে পায়ে হাঁটার তেমন একটা সুযোগ থাকে না।
কেননা, তখন এই বনের পুরো জায়গার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে। যাইহোক , আমরা বনের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ সময় ধরে হাঁটাহাঁটি করলাম। বনের মধ্যে হাঁটাহাঁটি করতে বেশ ভালোই লাগছিলো আমার কাছে। এরপর আমরা দেখতে পারলাম বেশ কিছু ক্যামেরা ম্যান ক্যামেরা নিয়ে ছবি তোলার জন্য ঘোরাঘুরি করছিল। আমি তাদের কাছে গিয়ে বেশ কয়েকটি ছবি উঠিয়ে নিলাম। ছবি গুলো খুবই সুন্দর হয়েছিল। যাইহোক, আমরা বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করার পর আবার চলে আসি আমাদের নৌকার নিকট। নৌকার মধ্যে উঠে আবার আমরা বনের মধ্যে ঘোরাঘুরি করতে শুরু করলাম। আসলে আমাদের সেখানে যাওয়ার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ঘোরাঘুরি করা এবং বনের সৌন্দর্য উপভোগ করা। যাইহোক, আমরা বেশ কিছুক্ষণ সময় ঘোরাঘুরি করে বাহিরে বের হয়ে আসি।
এটাই ছিল আমার সিলেটের রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট ভ্রমণের শেষতম পর্ব। পরবর্তী পর্বের মধ্যে আমি সিলেটের সাদা পাথর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Device | iPhone 11 |
---|---|
Camera | 11+11 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আজকে দেখতে দেখতে আপনি আমাদের মাঝে সিলেট ভ্রমণের সপ্তম পর্ব শেয়ার করেছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। আসলে ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের জন্য সিলেট একটি গর্জিয়াস জায়গা। আপনার সাতটি পর্বের মাধ্যমে আমি অনেক কিছু দেখতে পেয়েছি এবং অনেক কিছু জানতে পারলাম। ধন্যবাদ
রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট এর ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ইচ্ছে করছে এখনি সেখান থেকে ঘুরে আসি। যদিও কখনও সিলেট ঘুরতে যাওয়া হয়নি তবে সেদিকে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। এমন সুন্দর বনের ভিতরে হাঁটতে খুব ভালো লাগে। বনটি দেখতে অ্যামাজনের থেকে কোনো অংশে কম নয়। মনে হচ্ছে বর্ষাকালে এর সৌন্দর্য দ্বিগুণ বেড়ে যায়। আপনার পোস্ট পড়ে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট এ ঘোরাঘুরির সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।