আহলান সাহলান হে মাহে রমজান।।

হ্যালো প্রিয় ভাই ও বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আপনাদের সামনে নতুন একটি জেনারেল পোষ্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। সমস্ত প্রশংসা ঐ সত্তার জন্য যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করে পৃথিবীতে প্রেরন করেছেন। সমস্ত প্রশংসা ঐ সত্তার জন্য যিনি আমাদেরকে সুস্থ রেখেছেন, স্বজ্ঞানে জমিনে হাটা চলার সুযোগ করে দিয়েছেন। তিনির নিয়ামত ভোগ করার সুযোগ করে দিয়েছিন। সারাজীবন শুকরিয়া আদায় করলেও আল্লাহর এক ফুটা নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় শেষ হবে না। চলুন এবার মূল আলোচনার দিকে যাওয়া যাক।

Link

আপনারা সবাই জানেন যে আগামী কাল থেকে সারা বাংলাদেশে পবিত্র মাহে রমজান শুরু হবে। রমজান মাস হলো সিয়াম সাধনার মাস। রমজান মাস হলো ধৈর্য ধারন করার মাস। রমজান মাস হলো সংযমের মাস। এই মাসে প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিম ভাই বোনেরা সবাই দিনের বেলা পানাহার থেকে বিরত থাকে। রোজা , তাজবীহ, তারাবীহ, কুরআন তেলায়াত ও অন্যান্য নেক আমল করে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করে।

রোজা হলো ফার্সি শব্দ আরবী হলো সাওম যার অর্থঃ সংযম। রোজা ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মূল ভিত্তির তৃতীয় স্তম্ভ। সুবহে সাদেক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার,পাপাচার, কামাচার এবং সেই সাথে যাবতীয় ভোগ-বিলাস থেকেও বিরত থাকার নাম হলো রোযা। ইসলামী বিধান অনুসারে, প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের জন্য রমযান মাসের প্রতি দিন রোজা রাখা ফরজ,যার অর্থ অবশ্য পালনীয়। শারীরিক সমস্যা,রোগী ও মুসাফির ব্যাক্তিদের জন্য আলাদা আলাদা হুকুম রয়েছে।

মাহে রমজানের রোজা মানুষের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজজীবনে অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে চলার শিক্ষা দেয়। হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি ও আত্ম-অহংকার বোধ ভুলে গিয়ে সুখী, সুন্দর ও সমৃদ্ধিশালী সমাজ প্রতিষ্ঠার মাসই হলো মাহে রমজান। উম্মতে মুহাম্মদীর নৈতিক চরিত্র উন্নত করে সাহাবায়ে কিরামের মতো আদর্শ জীবন গঠন করার প্রশিক্ষণ এ মাসেই গ্রহণ করতে হয়।

রোজা মুসলমানদের আদর্শ চরিত্র গঠন, নিয়মানুবর্তিতা ও আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের শিক্ষা দেয়। সত্যিকার মুমিন হিসেবে গড়ে ওঠার অনুপম শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাস এ রমজানুল মোবারক। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তাকওয়া অর্জন করা। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সব প্রকার নাফরমানি কাজ থেকে দূরে থাকার নামই হলো ‘তাকওয়া’। রোজা বান্দার মনে আল্লাহর ভয়-ভীতি সৃষ্টি করে থাকে। আল্লাহর কাছে বান্দার মান-মর্যাদা নির্ধারণের একমাত্র উপায় তাকওয়া। এটিই মানুষের মনে সৎ ও মানবিক গুণাবলি সৃষ্টি করে।

রমজান মাসে রোজা রাখলে শারীরিক অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পবিত্র রমজান মাসের তারাবীহ,কোরআন তেলায়াত,সাহরী,ইফতার এই বিষয় গুলো সবাইকে অনেক আনন্দ দেয়। রমজান মাসের রোজা নিয়ে আমাদের জীবনে অনেক স্মৃতি রয়েছে। ছোট সময় সাহরী খাওয়ার জন্য সবার আগে ‍উঠে বসে থাকতাম। তবে যেইদিন সময় মত ঘুম থেকে উঠতে পারতাম না,সেই দিন কেউ জাগিয়ে দিতো না। ছোট থাকার কারনে সবাই রোজা রাখতে বারন করতো।

আমার দাদা বেচেঁ থাকতে সাহরীর সময় শেষ হলে জাগিয়ে দিতেন। যেন সাহরী খেলেও রোজা রাখতে না পারি। ছোট সময় শখ করে পাচঁটা সাতটা এমন রোজা রাখতাম। পাড়ার ভাই বন্ধুদের সাথে আলাপ করতাম কে কয়টা রোজা রেখেছে। সন্ধার পরেই সবাই দল বেধেঁ তারাবীহ নামাজ পড়তে মসজিদে চলে যেতাম। রমজান মাসে সম্পূর্ণ কোনআন মাজীদকে একবার বা দুই বার পড়ে শেষ করতাম। এক বার শেষ করলে এক খতম বলা হয়। জীবনের প্রথম রমজান মাসে আমি বিশ দিনে এক খতম দিয়েছিলাম। রমজান মাসে সাধারনত রাতের বেলা মানুষ ঘুমায় না। কেউ না কেউ জেগে থাকেই। সব মিলিয়ে রমজান মাসের অনুভূতি গুলো ধারুন ছিল।

এখন বড় হয়েগেছি, রোজা রাখলেও ব্যস্ততার কারনে সময়ের অভাবে কোনআন মাজীদ তেমন ভাবে আর তেলাওয়াত করতে পারি না। সব কাজ ঠিক ভাবে করলেও কোরআন তেলাওয়াত করতে গেলেই দুনিয়ার সমস্ত অলসতা চেপে বসে। এই মাসে শয়তানকে বন্দি করা হলেও মনের শয়তান তো আর বন্দি হয় না। সে সবসময় ভালকাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে। আমাদের উচিত এই মাসে অন্যান্য কাজ কম করে হলেও যথাযথ ভাবে রমজান মাসের সম্মান রক্ষা করা।

বছরে বারো মাসের মধ্যে মাত্র একবার রহমত বরকত নিয়ে রমজান মাস আসে। এই মাসে ধনীরা রোজা রাখলে গরীবদের খিদার কষ্ট বুঝতে পারবে। ধনীরা অট্রালিকায় থেকে এসির বাতাস খেয়ে গরীবদের কষ্ট বুঝতে পারে না। রোজা রাখলে হয়তো কিছুটা কষ্ট বুঝতে পারবে। তারা কত খাবার নষ্ট করে অথচ তাদের আশে পাশে কত মানুষ না খেয়ে থাকে। তাদের কোন খুজ খবরও রাখে না। এই পবিত্র মাহে রমজানের উসিলায় যদি তাদের মনে একটু দয়া মায়া উদয় হয়।

রমজান মাসের আরেকটি শিক্ষা হলো যাকাত আদায় করা, দান-সদকা করা। যারা নেসাব পরিমান অর্থের মালিক হয়, আর সেই অর্থ যদি নিজের অধিনে এক বছর অতিক্রম হয়,তাহলে তাদের নির্ধারিত পরিমান অনুযায়ী গরীবদেরকে যাকাত দিতে হবে। যাকাত হলো ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ। যাকাত আদায় করা ফরজ,যা অবশ্যই পালনীয়।

Link

বন্ধুরা আজকে এপর্যন্তই। সবার নিকট পবিত্র মাহে রমজানের শিক্ষা বাস্তবায়ন করার আবেনদ রইল। মাহে রমজানে রোজা,নামাজ,সাহরী,ইফতার সঠিক ভাবে পালন করার আহবান রইল। সবার সাথে মাহে রমজানের খুশি শেয়ার করার আবেদন রইল। সবাই ভাল থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।