রমজান মাসের স্মৃতিচারণ!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
মুসলমানদের কাছে সবচাইতে পছন্দের মাস রমজান মাস। রহমত বরকত নাজাতের মাস রমজান মাস। এই মাসেই নাজিল হয়েছিল আল কুরআন। আমার জীবনের সবগুলো রমজান মাস কেটেছে আমার এলাকায়। এইবারই প্রথম বাড়ির বাইরে এই মাসটা কাটাতে হবে। বাড়িতে যাব মোটামুটি ২৭ রমজানের পরে। গতদিন যখন পশ্চিম আকাশে রমজান মাসের চাঁদটা দেখা গেল নিজের মধ্যে অন্যরকম একটা অনূভুতির তৈরি হয়েছিল। পুরাতন অনেক কথা মনে চলে আসছিল। আজ সেই কথাগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করে নেব। আমি যকন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি তখন থেকেই আমি রোজা রাখি। আমি সাধারণত রোজা বাদ দেয় না অসুস্থতা ছাড়া। আমার বয়স যখন ১৩-১৪ ঐ সময়ের কথা বলি। প্রথম কয়েকদিন বেশ উৎসাহ নিয়ে সাহরি খেতে উঠতাম।
আমার মায়ের ডাকার আগেই উঠে পড়তাম আমি। কিন্তু তারপর গিয়ে আর উঠতে পারতাম না। মায়ের অন্য ডাকাডাকির পর ঘুম ভাঙত হা হা। রমজানে আমাদের স্কুল ছুটি থাকত। এইজন্য খুব একটা সমস্যা হতো না। দুপুরের নামাজ শেষ করে অনেক সময় এলাকার বন্ধুরা একসঙ্গে আড্ডা দিতাম। আড্ডা দিয়েই দুপুর টা অতিবাহিত করতাম। আসর থেকে মাগরিব পযর্ন্ত ব্যস্ত হয়ে যেতাম ইফতারি তৈরি করতে। অর্থাৎ এটা করতে মাকে সাহায্য করতাম আর কী। এভাবেই চলত। তবে ১৫-১৬ বছর বয়সের দিকে আমরা আরেকটা জিনিসে বেশ ঝুঁকে যায়। আপনারা এটা খারাপ বলতে পারেন। তবে ঐসময় ছেলেমানুষী থেকেই ঐসব করতাম। সাধারণ পুরো রমজান মাস জুড়ে আমাদের তারাবি পড়তে হয়। এটা সুন্নত পর্যায়ের ইবাদত। আমাদের এলাকায় এটা ২০ রাকাত পড়ানো হতো।
আমি এবং আমার অন্য একজন বন্ধু শিমুল এবং আমাদের এক বড় ভাই নাজমুল তিনজন পেছনের দিকে দাঁড়াতাম। নাজমুল ভাই আমাদের বড় হলেও ছোটবেলা থেকেই একসঙ্গে খেলাধুলা ঘোরাঘুরি অনেক দুষ্টুমি করাতে অনেক টা বন্ধুর মতো ছিল। যাইহোক তারাবি ৮ রাকাত শেষ হলেই আমরা তিনজন মসজিদ থেকে বেরিয়ে যেতাম। বাকি নামাজ টা আর পড়তাম না। মসজিদ থেকে বেরিয়ে কখনও আমরা এলাকায় রাতে ঘুরে বেড়াতাম। কখনও চা খেতে যেতাম কখনও বসে আড্ডা দিতাম। মাঝে মাঝে আমাদের সাথে আরও অনেকেই যোগ দিত। এভাবেই এক এক করে রমজান মাস অতিবাহিত হয়ে যেত। শেষের দশ দিনে মনের মধ্যে একটা আনন্দ কাজ করত আবার একটা খারাপ লাগাও কাজ করত। আনন্দ টা ছিল এমন যে কিছুদিন পর ঈদ। খারাপ লাগাটা ছিল আবার একবছর অপেক্ষা করতে হবে এই মাস টার জন্য।
শেষ রোজার দিন ইফতার শেষ করেই সবাই চলে যেতাম ঈদগাহ এর উপরে। সবাআ তাকিয়ে থাকতাম পশ্চিম আকাশে। ঈদের চাঁদের খোঁজ করতাম। এ যেন অসাধারণ এক আনন্দদায়ক মূহূর্ত ছিল। গতকাল কথাগুলো ভেবে মনটা খারাপ হয়ে গেল। এবার সেহেরি ইফতার সব একাই করতে হবে। নিজের পরিবার নিজের বন্ধুদের অনেক মিস করব। এই প্রথম এমন দিন কাটানো লাগছে। এইজন্যই খারাপ লাগাটা কাজ করছে অনেক বেশি। তবে অপেক্ষায় আছি কবে এই রমজান মাসের দিনগুলো শেষ হবে। বাড়িতে গিয়ে সবার সাথে ঈদ উৎযাপন করব। আশাকরি সবাই রমজান মাসে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইবাদত করবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Daily task
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার রমজানের স্মৃতিচারণ সত্যিই হৃদয়ছোঁয়া! ছোটবেলার সেই তারাবির দুষ্টুমি, ঈদের চাঁদ দেখার উন্মাদনা সবকিছুই যেন আমাদের সবার শৈশবের সঙ্গে মিলে যায়। এবার পরিবার ও বন্ধুদের থেকে দূরে থাকলেও, ইনশাআল্লাহ ঈদে তাদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার আনন্দ আরও গভীর হবে। আল্লাহ আপনাকে ধৈর্য দিন এবং রমজানের বরকত দান করুন!আমিন।
পুরুষ মানুষের জীবনটা এমনই ভাই। সবকিছু সহ্য করে এগিয়ে যেতে হয়। একা একা সেহেরি এবং ইফতার করতে একেবারেই ভালো লাগে না। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে করতে হয়। যাইহোক ছোটবেলায় রমজান মাসে খুব মজা হতো। আমারও অনেক স্মৃতি রয়েছে রমজান মাসকে কেন্দ্র করে। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।