বৃষ্টি বন্দনা।
ছোট বেলা থেকেই আমরা পড়ে আসছি বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। ছয়টি ঋতু পালাক্রমে আসে আর যায়। এই ছয় ঋতুর মাঝে সব থেকে বড় হল বর্ষা আর সব থেকে ছোট হল বসন্ত। শুধু কেতাবি কথা বার্তায় নয় ছোট থেকে বিষয়টি অনুভব ও করে আসছি।কিন্তু কিছুদিন যাবৎ আসলে কিছুদিন নয় কিছু বছর যাবৎ খেয়াল করছি কাল চক্র যেন উলটে গেছে। কোন কিছুই আর সঠিক নিয়ম মেনে হচ্ছে না৷ বর্ষাকালে দেখা যাচ্ছে খড়া,গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড কুয়াশা আর যেখানে শীতকাল শূষ্ক হবার কথা সেখানে শীতকালে হচ্ছে বন্যা। ব্যাপারটা মজা মনে হলেও কিন্তু মোটেও মজার নয়।এর পেছনে যে কারন রয়েছে তা খুবই ভয়াবহ। এর পেছনের কারনটা হচ্ছে জলবায়ুর পরিবর্তন। আমার তো এটা ভেবেই ভয় লাগছে বর্তমান পরিস্থিতি যদি এমন হয় তবে আসন্ন ভবিষ্যতে অবস্থা কতটা ভয়াবহ হবে। অবস্থা কিছুটা আন্দাজ করা যাচ্ছে এই গরমে। আমার দেখা স্মরণকালের সব থেকে তীব্র ও বেশিদিন ব্যাপি স্থায়ী তাপদাহ ছিল এটি।এই তাপদাহ সবাইকে প্রকৃতির ক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছে। দেখিয়েছে যত যন্ত্রি আবিষ্কার কর না কেন? যত কিছুই আবিষ্কার করো আমি বিরূপ হলে তোমাদের কিছু করার নাই। যাই হোক ধান ভানতে শিবের গীত গেয়ে ফেললাম অনেকটা। কয়েকদিন ধরে তীব্র গরমে অবস্থা একদম নাজেহাল।মনে হচ্ছিল কেউ যেন গরম কড়াইয়ে ছেড়ে দিয়েছে।এই গরমের মাঝে মড়ার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দেয় লোডশেডিং।একদিকে গরম একটু ঠান্ডার আশায় ফ্যানের সুইচ দিলেন, ওমা দেখলেন লোডশেডিং। এতক্ষণ শরীর গরম ছিল কিন্তু এটা দেখার পর মাথা পর্যন্ত গরম হয়ে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে শুধু মাত্র স্বস্তি দিতে পারে বৃষ্টি। কিন্তু এদিকে বর্ষাকাল শুরু হয়ে গেলেও দেখা নেই কাঙ্খিত বৃষ্টির। ফলে স্বতিও ছিল না জনজীবনে।আজ শুক্রবার ভাবলাম শান্তিতে ঘুমানো যাবে।কিন্তু লোডশেডিং এর জ্বালায় সে উপায় নেই। ঠান্ডার জন্য বের হলাম বাইরে, বের হয়ে দেখি আকাশে হালকা হালকা মেঘ জমছে। দেখেই মনটা ভরে গেল। মনে একটু আশা জাগল।এর মাঝেই শুরু হল প্রচন্ড বাতাস।সেই বাতাসে যেন মনটাও নেচে উঠল। সেই সাথে শুরু হল আম পড়া।আমাদের বাসার ভেতর বেশ কয়েকটি আমের গাছ আছে,সেই সাথে পাশের বাসায় আছে একটি হিমসাগর আমের গাছ।সবাই মহা আনন্দে আম কুড়ানো শুরু করলাম। যদিও ৫-৬টা কুড়ানোর পর আমি আর কুড়াই নি।কারন যাদের আম তাদের কেও সুযোগ দেওয়া উচিৎ। তবে অনেকদিন পর আম কুড়াতে অনেক ভাল লাগল। সেই ছোট বেলা মনে পড়ে গিয়েছিল।কিছুক্ষণ এর জন্য মনে হল সবাই বাচ্চা হয়ে গিয়েছিলাম।এই অনুভূতি কে লিখে প্রকাশ করার সামর্থ্য নেই।ছোট বেলায় আম কুড়াতে গিয়ে আমার এক বড় ভাইয়ের সাথে একটি ভূতুরে ঘটনা ঘটেছিল। আপনারা জানতে ইচ্ছুক হলে বলবেন নেক্সট পোস্টে লিখব গল্পটি। এরপর এলো সেই কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি৷ সবার অন্তর কে শীতল করে, টিনের চালে রিমঝিম শব্দ তুলে আসল বৃষ্টি। খুব ইচ্ছা ছিল বৃষ্টিতে ভেজার। কিন্তু মা দেখলাম একদম লাঠি নিয়ে হাজির,সেই ছোট বেলার মত।তখন বুঝলাম যত বড়ই হই না কেন।মায়ের কাছে আমি সেই ছোট বাচ্চা যে ভাল মন্দ বোঝে না। অত:পর রুমে এসে জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখতে দেখতে পোস্ট লিখছি ওদিকে রান্না ঘর থেকে বৌখুদের লোভনীয় গন্ধ ভেসে আসছে।এমন দিনে মনে হয় জীবন আসলে খুব মন্দ নয়।শুধু আমরা ভুলে গেছি উপভোগ করতে। |
---|
আসলে বর্তমানে আমাদের দেশের আবহাওয়ার পরিস্থিতি অন্যরকম হয়ে গিয়েছে। ঋতু ভেদে যে পরিবর্তন আসার কথা ছিল দেশে তার তো কোনদিন আমরা লক্ষ্য করতে পারিনা। ভিন্ন ভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখতে পাওয়া যায়। আপনি তো দেখছেন বেশ কয়েকটা আম কড়িয়েছেন।
আহা অবশেষে বৃষ্টির দেখা পেলাম।
তবে আবহাওয়া সামনের সময়গুলোতে হয়তো আরো খারাপ হবে, অন্তত অনেক কঠিন কিছু আলামত দেখাচ্ছে পৃথিবী।
যাক বৃষ্টির মধ্যে আম কুড়াতে বেশ ভালো লাগে।
আর মায়ের হাতে একদিন না হলে মার খেয়েও বৃষ্টিতে ভিজতে পারতেন 😄
আসলেই বর্তমান সময়ে আবহাওয়া তেমন একটা ঠিক নেই কখন কি হচ্ছে বুঝে ওঠা অনেক বেশি মুশকিল হয়ে পড়েছে। প্রচন্ড গরমে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে যাচ্ছিল হঠাৎ করেই কিছুটা মেঘ করেছে এবং ঠান্ডা হাওয়া বইছে নিজের কাছে কোন রকম ভালো লাগে কাজ করছে। আম কুড়াতে গিয়ে আপনার ভাইয়ের সঙ্গে যে ভুতুড়ে ঘটনাটি আছে সেটা জানার খুব ইচ্ছে খুব শীঘ্রই ঘটনাটি শেয়ার করবেন বলে আশা রাখি। ভালো লাগলো আপনার আজকের এই পোস্ট পরে, ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
জি ভাইয়া, ঝড় বৃষ্টির দিনে ছোটবেলার মতো আম কুড়াতে বেশ ভালই লাগে। তবে আপনার আম কুড়ানোর ক্ষেত্রে আম গাছের মালিক কে সুযোগ দেয়ার বিষয়টি আমাকে খুবই ভালো লেগেছে। আর বৃষ্টিতে ভেজার ক্ষেত্রে মায়ের বাধা দেওয়াটা আরো বেশি মধুর একটি ঘটনা। খুবই চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।