ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়!
10-09-25
২৬ ভাদ্র , ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো সুস্থ্য থাকাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনি সুস্থ্য না থাকলে আপনার কোনো কিছুই করতে ভালো লাগবে না। তো আপনারা নিশ্চয় জানেন গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। সেই নির্বাচনকে ঘিরে জনমনে নানা ধরনের আকাঙ্খা তৈরি হয়েছিল। কারণ স্বৈরাচার সরকার পতনের পর এটাই ছিল ফেয়ার নির্বাচন। আগে যেখানে রাতে আধারে ভোটের কারচুপি হয়ে যেত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মুখে ভোট দেয়ার যে আনন্দ সেটা খেয়াল করা গিয়েছিল। সবাই যথেষ্ট উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে দিয়েই ভোট দিয়েছে। তো আমার আলোচ্য বিষয় সেটা নয়। আমার আলোচ্য বিষয় হলো ক্ষমতা নিয়ে! ক্ষমতা আজ আছে তো কাল নেই! অথচ এই ক্ষমতার জন্য কতোকিছু করে ফেলি। কিন্তু ইতিহাসের পাতা ঘাটলেই দেখা যায় কেউ চিরস্থায়ী ক্ষমতার ব্যবহার চালিয়ে যেতে পারেনি।
একটা সময় ঠিকই তাদের পতন হয়েছে। ব্রিটিশরা চেয়েছিল পুরো দেশ শাসন করতে। এখন দেশ আছে কিন্তু তাদের ক্ষমতা নেই। হিটলার, নেপোলিয়ান তাদের কাছেও ক্ষমতা ছিল। কিন্তু এখন আর তারা আমাদের মাঝে নেই। আবার দেখেন, আমাদের দেশের কথায় যদি বলি, কত ভয়ে থাকতে হতো আমাদের। মুখের একটা কথা বলতে হলেও ভেবে বলতে হতো। কতটা অস্বস্তিকর একটা অবস্থায় ছিলাম আমরা। কিন্তু সবকিছুরই যে শেষ আছে। ক্ষমতার দুইটা পারস্পেকটিভ হতে পারে। এক, আপনি এটাকে খারাপ কাজে লাগাতে পারবেন। দুই,আপনি চাইলে সেটাকে ভালো কাজে লাগাতে পারবেন। সবকিছু ডিপেন্ড করছে আপনার উপর। আপনি সেটাকে কিভাবে ব্যবহার করছেন। আপনি যদি সেটাকে ভালো ভাবে ব্যবহার করেন তাহলে জনগণ আপনাকে বাহবা দিবে। আপনাকে সম্মানের চোখে দেখবে। কিন্তু আপনি যদি কোনো ভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন তাহলে জনগণ কোনোভাবেই মেনে নিবে না।
আপনি বর্তমান জেনারেশনের দিকে খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন। এইতো গতকাল নেপালের প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছে! নেপালের জনগণের আকাঙ্খাকাকে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী মাটিচাপা দিয়েছিল। তাই সে দেশের জনগণ সেটা মেনে নিতেও পারেনি! আসলে জনগণ এখন বুঝতে শিখে গেছে কিভাবে দাবি আদায় করে নিতে হয়। সবকিছুর শেষ থাকবেই। আপনি একবার যেহেতু জন্মেছেন আপনাকে আবার মারা যেতেও হবে। সেটা যদি মাথায় থাকে তাহলে আমার মনে হয় না কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবে। আসলে আমাদের সংক্ষিপ্ত জীবনে মানুষ কিন্তু আমাদের কৃতকর্মই মনে রাখে। অর্থাৎ আপনি কি করে গেছেন মানুষের জন্য সেটাই মনে থাকবে। এমন কাজ যদি আপনি না করে যেতে পারেন তাহলে মানুষ আপনাকে কখনোই মনে রাখবে না। এজন্য এমন জীবন গঠন করা জরুরি যেন মৃত্যুর পরেও মানুষ যেন বলতে পারে লোকটি অনেক ভালো ছিল।
ধরেন, আপনি কোনো একটা এলাকার এমপি হয়েছেন। এখন আপনি কিন্তু একটা ক্ষমতা পেয়েছেন। আর সেটা পেয়েছেন মানুষের ভোটের মাধ্যমে। তো জনগণ যেহেতু আপনাকে নির্বাচিত করেছে আপনার উচিত জনগণের হক আদায় করা। আপনি যদি জনগণের হক আদায় করতে পারেন তাহলে জনগণ আপনাকে যোগ্য নেতা হিসেবেই দেখবে। আপনি এমপি হওয়ার পর কিন্তু ঐ এলাকার জনগণ সবাই আপনার কাছে আমানতস্বরূপ। তাদের ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব আপনার। আপনি যদি তাদের সুযোগ সুবিধা বুঝে কাজ করতে পারেন তাহলে একটা সময় পরে তারাই আপনাকে মনে রাখবে আপনার কাজের কারণে। দিনশেষে, আপনি কি একশন নিচ্ছেন সেটাই মূখ্য বিষয়। ক্ষমতা থাকবে, যাবে। কিন্তু আপনার কর্ম চিরকাল থেকে যাবে। এজন্য ক্ষমতার লোভ করাও উচিত নয়। এটা মানুষকে পশুত্বে পরিণত করে দেয়।
তো আল্লাহ তায়ালা যাকে ক্ষমতা দেন তাকে আসলে একটা সুযোগ দেন। সে ক্ষমতার সঠিক ব্যবহার করতে পারছে কি না! জীবনে অন্তত এতোটুকু মানসিকবোধ যেন তাকে, মানুষের অধিকার হরণ করে কিছু যেন না করতে হয়। কাউকে কষ্ট দিয়ে মহিমান্বিত হওয়ার কোনো মানে নেই। আপনার যতটুকু পাওয়ার আপনি ততটুকুই পাবেন। এর বেশি একটুকুও পাবেন না! ক্ষমতা যে চিরস্থায়ী নয় এটা বিশ্বাস করাটা জরুরি। অনেকেই মোহে পরে সেটাও ভুলে যায়। আপনি জীবনের যে পর্যায়েই যান না কেন কখনো ক্ষমতার লোভ করতে নেই! মানবিক হতে পারলেই আপনি মানুষ! মানুষ আপনাকে ভালোবাসবে।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বিএসসি করছি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয় (ডুয়েট) থেকে । পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত চার বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share