রেডিয়েশন।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
সোর্স
যখন আমরা ছোট ছিলাম তখন মোবাইল ফোনের বা বিভিন্ন টেকনিক্যাল ইলেকট্রিক জিনিসপত্র এর এত বেশি প্রচলন ছিল না, তাই রেডিয়েশন কি জিনিস তা আমরা তেমন বেশি জানতাম না। তবে দিন যত যাচ্ছে মানুষ তত উন্নতি করছে। তাই আমাদের চারপাশে বিভিন্ন ইলেকট্রিক জিনিসের পাশাপাশি তাকে চালানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের টাওয়ার এবং বিভিন্ন পদ্ধতি আবিষ্কার হয়েছে। আর এইসব জিনিসের মাধ্যমে আমরা সবসময় সুন্দর ভাবে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ইত্যাদি বিনা বাধায় চালাতে পারি। ফোন ল্যাপটপ বা বিভিন্ন ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি ছাড়াও আরো বিভিন্ন জিনিস এমন রয়েছে যা থেকে আমাদের পরিবেশে রেডিয়েশন ছড়াচ্ছে। আর দিন যত যাচ্ছে আমাদের পরিষেবা এবং আমাদের জীবন যাপন আর উন্নতি করার জন্য এই রেডিয়েশন বেড়েই চলেছে। প্রথমে ওয়ান জি, টু জি, থ্রি জি, ফোর জি এবং বর্তমানে চলছে ফাইভ-জি। আর যার ফলে রেডিয়েশন রয়েছে অনেক বেশি হাই লেভেলে, আর আমাদের ল্যাপটপ মোবাইল ফোনের স্ক্রিন হয়ে গেছে একদম ঝাঁ চকচকে। সুন্দর পরিষ্কারভাবে আমরা সবকিছু দেখতে পাই। শুধুমাত্র দেখতে পারছি না যে আমাদের চারপাশের পরিবেশের দিন দিন কতটা ক্ষতি হয়ে চলেছে।
এই রেডিয়েশন বাড়ার কারণে বায়ু হয়ে গেছে দূষিত। শুধু বায়ু বলা ভুল হবে চারপাশের পরিবেশ দিন যত যাচ্ছে রেডিয়েশনের কারণে দূষিত হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ উৎপন্ন হতে দেখা যাচ্ছে। যেসব রোগের নাম হয়তো আমরা আগে কখনো শুনিনি বা জানতাম না সেই সব রোগেরও নাম বর্তমানে শোনা যায়। এই রেডিয়েশন এর কারণে দেখা যায় মানুষের মধ্যে ক্যান্সার এবং ব্রেন টিউমার এর মত কঠিন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। রেডিয়েশন এমন একটি খারাপ জিনিস যা আমাদের শরীর যে সূক্ষ্মকোষ দ্বারা তৈরি হয়েছে সেই কোষগুলিকেও নষ্ট করতে বা শুকিয়ে ফেলতে পারে। যার ফলে আমাদের শরীর অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে তো দেখা যায় অনেকে নিজের বাড়ির ছাদেই বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন কোম্পানির টাওয়ার বসিয়ে রাখে সামান্য অর্থ উপার্জনের জন্য। কিন্তু তারা বোঝে না যে এই টাওয়ারের প্রভাবে তাদের দিনের পর দিন শারীরিক মানসিক কতটা ক্ষতি হয়ে চলেছে। বাড়ির ওপর টাওয়ার স্থাপনের জন্য রেডিয়েশন আরো বেশি ক্ষতি করতে পারে সেই বাড়ির মানুষদের ওপর।
একটা জিনিস খেয়াল করলে আমরা দেখতে পাবো যারা অনেক বেশি পরিমাণ মোবাইল ফোন চালায় অথবা যাদের বাড়িতে এমন টাওয়ার বসানো রয়েছে তাদের বাড়ির মানুষ প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। এছাড়াও মাথাব্যথা এবং খিটখিটে মেজাজ নিত্য সঙ্গী হয়ে পড়ে এইসব মানুষদের। তবে শুধু যে মানুষেরই ক্ষতি করে এমনটা নয়। মানুষের সাথে সাথে এই রেডিয়েশন প্রাকৃতিক পরিবেশকেও অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে চলেছে। মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়ানো পাখিদেরও এই রেডিয়েশন প্রতিনিয়ত ক্ষতি করে চলেছে। মানুষের গড় আয়ু যেমন কমে আসছে তেমন পাখি জীবজন্তুর ও গড় আয়ু কমে আসছে এইসব রেডিয়েশন এর ফলে পরিবেশ দূষণের কারণে। এছাড়াও পশু পাখি জীবজন্তুর মধ্যেও বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যারাম বর্তমানে লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায় পাখিরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে এবং মুক্ত আকাশে দূষিত বায়ুর প্রভাবে তাদের শরীর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এর ফলে দেখা যাচ্ছে পশুপাখিদের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। আসলে রেডিয়েশন আমাদের এবং আমাদের পরিবেশের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। তবে আমরা একটু সচেতন ভাবে চললে এবং আমরা চাইলেই এই রেডিয়েশনের ক্ষতি থেকে একটু হলেও রক্ষা পেতে পারি।
মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন থেকে রক্ষা পেতে হলে আমাদের মোবাইল ফোন কম ব্যবহার করার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ফোন বেশি ঘাটাঘাটি না করাই ভালো। রাতে ঘুমানোর সময় মোবাইল ফোন আমাদের বেডের থেকে যথাসম্ভব দূরে রাখার চেষ্টা করতে হবে। শোবার ঘরে টিভি এবং ওয়াইফাই কানেকশন না রাখাই ভালো। এতে রেডিয়েশনের হাত থেকে অনেকটাই দূরে থাকা সম্ভব হবে। টিভি, ওয়াইফাই, ল্যাপটপ অথবা মোবাইল ফোন কোন বদ্ধ ঘরে চালানো কখনোই ভালো না। বদ্ধ ঘরে এইসব জিনিস ব্যবহারের মাধ্যমে আরো বেশি পরিমাণ রেডিয়েশন আমাদের শরীরকে ক্ষতি করতে পারে। ছোট শিশু, বয়স্ক মানুষ এবং কোন রোগগ্রস্ত ব্যক্তি এই রেডিয়েশনের দ্বারা আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। কারণ ছোট শিশু, বয়স্ক মানুষ এবং যেকোনো রোগগ্রস্ত ব্যক্তির শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক গুণ কম থাকে তাই তারা সহজেই যে কোন ক্ষতিকারক জিনিসের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। আমাদের নিজের ভালোর জন্য নিজেদেরই বুঝে চলতে হবে এবং অপ্রয়োজনীয় ক্ষতিকর জিনিস থেকে দূরে থাকতে হবে।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।