ইকোপার্ক ভ্রমণ। পর্ব-৩
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমরা ইকো পার্কের বেশ কয়েকটা ওয়ান্ডার্স দেখে নিয়েছি। এবার আমরা আস্তে আস্তে এগিয়ে চলেছি অন্য একটি ওয়ান্ডার্সের দিকে। আর এটি হল আমাদের সবার অনেক পরিচিত এবং অনেক পছন্দের একটি ওয়ান্ডার্স "তাজমহল"। যুগ যুগ ধরে মানুষ সমস্ত ওয়ান্ডার্স ভুলে গেলেও তাজমহল কখনোই ভুলবে না। কারণ প্রত্যেকটি ওয়ান্ডার্স বিভিন্ন কারনে তৈরি করা হলেও তাজমহল একমাত্র ভালবাসার প্রতীক, ভালোবাসার জন্যই ভালোবাসার স্মৃতি স্বরূপ এই তাজমহলটি তৈরি করা হয়েছিল। তাই আমরা কখনোই তাজমহলকে ভুলতে পারবো না। তেমনই আমার কাকী শাশুড়ি অত্যন্ত আবেগের সাথে ছুটে চলেছে তাজমহলের দিকে। যেন সে ভুলেই গেছে তার পায়ের ব্যথার কথা। অন্য কোন ওয়ান্ডারে না উঠলেও এই তাজমহলে সে অবশ্যই উঠবে এমনটাই তার বক্তব্য। আর সত্যিই সে তাজমহলের ওপর উঠেছে অনেকগুলো সিঁড়ি দিয়ে। তাজমহলের ওপর উঠে এসে বিভিন্ন স্টাইল করে ফটো তুলে নিয়েছে বেশ কিছু। তারপর ঘুরে ঘুরে পুরো তাজমহলটি দেখে নিল। আমি যেহেতু আগেই এখানে এসেছি এবং অনেক সুন্দর করে ঘোড়া আছে আমার সেই জন্য আমি আর গেলাম না।
অবশ্য আমার একটু পা ব্যথাও করছিল কারণ আমি একটা হিল দেওয়া জুতো পড়েছিলাম। আমার কাকী শাশুড়ি এবং কাকা শ্বশুর পুরো তাজমহলটা সুন্দরভাবে পরিদর্শন করে নিচে নেমে এলো তারপর আমরা আবার হাঁটতে হাঁটতে ঘুরতে লাগলাম। এমন সময় দেখতে পেলাম একটা আইসক্রিমের দোকান আছে সেখানেই। আইসক্রিমের দোকান দেখা মাত্রই আমার কাকি শাশুড়ি বলে উঠল এত গরমের মধ্যে একটু আইসক্রিম খেলে অনেক ভালো লাগবে। তাই আমরা সবাই নিজের পছন্দমত আইসক্রিম বেছে নিলাম। আইসক্রিম খেতে খেতে পাশে একটি টেবিলে বসে আমরা গল্প করতে লাগলাম। গল্প করতে করতে হঠাৎ করে আমার দেবর বলে উঠলো যে, আমরা যেটা খাচ্ছি সেটা আসলে কিন্তু আইসক্রিম নয়। এ ব্যাপারে আমার আগে থেকে জানা ছিল কারণ আমরা যে আইসক্রিমগুলো আইসক্রিম বলে খাই সেগুলো সব আইসক্রিম নয় এগুলো ফ্রোজেন ডিজার্ভ হয়। তবে আমার কাকী শাশুড়ি এ ব্যাপারে না জানায় সে একটু অবাক হল এবং বলল যে, আগে থেকে জানলে সে এগুলো খেত না। কারণ এই ফ্রোজেন ডিজার্ট গুলো পামওয়েল দিয়ে তৈরি করা হয় যা শরীরের জন্য অনেক বেশি ক্ষতি করে।
যাইহোক খাওয়া হয়ে গেছে এখন আর কিছু করার নেই তাই আমরা গল্প করতে করতে আইসক্রিম খাওয়া শেষ করে আবার বেরিয়ে পড়লাম বাকি ওয়ান্ডার্সগুলো দেখার জন্য। বর্তমানে এখন একটু রোদ বের হয় এবং রোদের তাপ বেড়ে যায় তাই আমার আর হাঁটার একটু ইচ্ছা না থাকায় আমি ওই টেবিলেই বসেছিলাম আর আমার কাকা শ্বশুর এবং কাকী শাশুড়ি গিয়ে চারপাশটা ঘুরে দেখে আসলো এবং অনেক বেশি ফটোগ্রাফি করে নিয়ে এসে আমাকে আবার দেখালো। তবে আমি যে জায়গাটিতে বসেছিলাম সেটি এমন একটি জায়গা ছিল যেখান থেকে আমি সবকিছুই নিজের চোখে দেখতে পারছিলাম। কারণ এই জায়গাটি ছিল একদম খোলা মাঠের উপর চারিদিকে সীমানার দিকে ওয়ান্ডার্সগুলো করা। তাই মাঠের যে কোন প্রান্তে থাকলে পুরো মাঠটি দেখা যায় কে কোথায় কোন দিকে যাচ্ছে। আমি এই জায়গাটিতে বসেই প্রত্যেকটি ওয়ান্ডার্স সুন্দরভাবে দেখতে পারছিলাম সেই জন্য আর ব্যথা পা নিয়ে রোদের মধ্যে যাওয়ার ইচ্ছা হলো না। আমার কাকা শ্বশুর এবং কাকী শাশুড়ি চারিদিকটা ভালো করে ঘুরে চলে আসলো।
সেভেন ওয়ান্ডার্স ভালোভাবে কাকি শাশুড়ি এবং কাকা শ্বশুরের দেখা সম্পন্ন হয়ে গেছে এবার আমরা বেরিয়ে যাব এই ওয়ান্ডার থেকে। সেভেন ওয়ান্ডার্স থেকে বেরিয়েও অনেক জায়গা ঘোরাঘুরি করার বাকি আছে। সেভেন ওয়ান্ডার্সের এখানে এত সুন্দর পরিবেশ যে এখানেই বসে থাকতে ভীষণ ভালো লাগছিল। চারিদিকে মানুষজন নিজেদের মতো ঘুরছে তবে আমি আর আমার বর যখন শেষবার এসেছিলাম তখন এখানে একটি গানের শুটিং চলছিল। সেটা দেখতে দেখতে অনেকটা বেশি সময় আমরা কাটিয়ে ফেলেছিলাম। আজকে যেহেতু আমার বর আসেনি তাই ওকে একটু বেশি মিস করছিলাম। ক্ষণে ক্ষণে শুধু মনে পড়ছিল তার সাথে যখন এসেছিলাম কোথায় কি করছিলাম এবং কোথায় কিভাবে ঘোরাঘুরি করছিলাম সব স্মৃতি মনে পড়ছিল। আজকে বিশেষ কাজের জন্য আমাদের সাথে সে আসতে পারেনি। সেভেন ওয়ান্ডার্স দেখে বেরোনোর সময়ও তার সাথে আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে সেগুলো মনে পড়ে যাচ্ছিল। এইসব স্মৃতি মনে করতে করতে এবং কাকা শশুর এবং কাকী শাশুড়ির ফটোশুট দেখতে দেখতে বেরিয়ে পড়লাম সেভেন ওয়ান্ডার্স থেকে।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।