ছুটির দিন মানে একটু ঘোরাঘুরি।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
ঘুরতে আমরা সবাই অনেক বেশি পছন্দ করি। এমন কোন মানুষ হয়তো এই পৃথিবীতে নেই যে ঘুরতে পছন্দ করেনা। আজ ছুটির দিন মানেই একটু রিলাক্স আর একটু ঘোরাঘুরি আর অনেক বেশি আলসেমি। আজকের ছুটির দিনটি তেমনি অনেক বেশি আলসেমিতে কেটে গেছে এবং একটু ঘোরাঘুরি হয়েছে এই আলসেমির মধ্য দিয়ে। সকালবেলা উঠেই প্রতিদিনের মতন কাজ তো করতেই হয়, যেমন থাকে সংসারের বিভিন্ন কাজ তেমন রান্নাবান্না তো থাকবেই। প্রতিদিনের মতো আজকেও সকালে উঠে রান্না বান্না এবং সংসারের কাজ সম্পন্ন করে নিয়েছিলাম অন্যদিনের থেকে একটু তাড়াতাড়ি করেই। তারপর হাজবেন্ডের সাথে গল্প করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম নিজেই জানিনা। ঘুম থেকে উঠে দেখি দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়ে গেছে, কিন্তু তখন দেখছি বাইরে অনেক বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি দেখলেই যেন আমার মনটা চায় এই বৃষ্টির মধ্যে বাহিরে গিয়ে ঘুরে বেড়াতে। যদিও বৃষ্টিতে শরীর খারাপ হওয়ার এবং ঠান্ডা লাগার অনেক বেশি আশঙ্কা থাকে তবুও কেন জানি না বৃষ্টি আমাকে বাইরের পরিবেশে অনেক বেশি টানতে শুরু করে। বিয়ের আগে অর্থাৎ কম বয়সে অনেকবারই এমন বৃষ্টির মধ্যে বান্ধবীর সাথে ঘুরতে বেরিয়ে যেতাম।
আসলে তখন এমন বকা দেওয়ার কেউ ছিলনা কারণ বাবা-মা নিজের কাজে আর চাকরিতেই ব্যস্ত থাকতো। সত্যি কথা বলতে সেই দিনগুলোকেই অনেক বেশি মিস করি বর্তমানে। কারণ এখনো বৃষ্টি হলেই আমার বাইরে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করে। কিন্তু আমি এমন চাইলে কি হবে আমার হাজব্যান্ড হয়েছে একদমই উল্টো বৃষ্টি দেখলে তার যেন ঘুমাতে ভালো লাগে বাইরে যাওয়া তো সে একদমই পছন্দ করে না এবং বৃষ্টিতে সে একটুও ভিজতে চায় না। আমি যেমন পাগল টাইপের মেয়ে আমার হাজবেন্ড তার উল্টো, সে অনেক বেশি ম্যাচুয়ার এবং প্রাক্টিকাল চিন্তাভাবনা করে থাকে। তাই ইচ্ছা থাকলেও বিয়ের পরে বৃষ্টিতে ভিজে ঘুরে বেড়ানো হয় না। তবে অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন একটু বৃষ্টি পড়া কমবে এবং আমরা একটু বাইরে ঘুরতে যেতে পারবো। অপেক্ষা করতে করতে প্রায় রাত আটটা বেজে গেল। বাইরে দেখি বৃষ্টি পড়া বন্ধ হয়ে গেছে। এমন সুযোগ পেয়েই বেরিয়ে পড়লাম বাইরে একটু ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আর সাথে নিয়ে নিয়েছি অনেক কাজের লিস্ট। কারণ বর্তমানে এমন পরিস্থিতি কাজ ছাড়া শুধুমাত্র ঘুরতে যাওয়া খুবই কম হয়।
ঝটপট তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম আবার বৃষ্টি আসার আগে। বাড়ি থেকে বেরিয়েই সোজা চলে গেলাম গঙ্গার পাড়ে। রাতের গঙ্গা নদীর সৌন্দর্য একদম অন্যরকম। গঙ্গার ওপারের বড় বড় বিল্ডিং এর লাইটিংগুলো একদম ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তারার মত দেখা যাচ্ছে। আকাশটা একদম পরিষ্কার নীল রঙের এবং তার মধ্যে আবার সাদা সাদা মেঘ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। বেশ সুন্দর মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ। এমন পরিবেশ দেখেই মন ভরে যায়। বেশ কিছুক্ষণ বসে এমন মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর বেশ কিছু যুবক ছেলে চলে আসলো গঙ্গার পাড়ে এমন ছেলেরা আসা মানে সেখানে বিভিন্ন ধরনের নেশার আসর বসবে যার ফলে আমাদের থাকাটা মোটেও উচিত হবে না, একথা মনে করে আমরা ভাবলাম এবার এখান থেকে আমাদের চলে যাওয়াটাই ভালো হবে। যাওয়ার আগে গঙ্গার জল নেওয়ার জন্য গঙ্গা নদীতে নামার সিঁড়ি আমরা নামতে লাগলাম এমন সময় আরো সুন্দর একটি দৃশ্য চোখে পড়ল। কেউ একজন হয়তো সন্ধ্যার সময় গঙ্গা নদীতে সন্ধ্যা দিয়ে গেছে এবং সুন্দর একটি মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে গঙ্গা নদীর সামনে দিয়ে গেছে। এই প্রদীপটির জন্য যেন গঙ্গা নদীর সামনের দিকটা আরো বেশি সুন্দর লাগছিল দেখতে। আমার হাজব্যান্ড গঙ্গার জল নিয়ে নিল একটু পরিষ্কার জায়গা থেকে।
গঙ্গাজল নিয়ে আমরা চলে এলাম আবার বাড়ির দিকে রাস্তায়। তবে যেহেতু বৃষ্টি ওয়েদার এবং সারাদিন বৃষ্টি পড়ায় ভীষণ মুখরোচক খাবার খেতে ইচ্ছা করছিল, তাই চলে গেলাম আমাদের প্রিয় একটি দোকানে প্যান ফ্রাই মোমো খেতে। এই দোকানের এই প্যান ফ্রাই মোমোটি আমার খুবই পছন্দের কারণ খুবই সুস্বাদু এবং সঠিক পরিমাণ ঝাল লবনের সুন্দর স্বাদ থাকে এই মোমোটার। আমরা দোকানে গিয়ে মোমো অর্ডার দিতেই অল্প সময়ের মধ্যেই পেয়ে গেলাম আমার পছন্দের মোমো। আমরা দুজন গল্প গুজব করতে করতে মোমো খেয়ে নিলাম। এই দোকানে যেহেতু আমরা প্রায় আসি তাই দোকানদার সহ দোকানের সবার সাথে বেশ সুন্দর পরিচয় হয়ে গিয়েছিল। গল্প করতে করতে সবার সাথেই বেশ গল্প জমে গেছিল। আমাদের মোমো খাওয়া শেষ হওয়ার পরেও বেশ কিছুক্ষণ সবার সাথে গল্প করে বেরিয়ে পড়লাম দোকান থেকে। তারপর বাকি কাজগুলো সম্পন্ন করে নিলাম। এবার আর এদিক ওদিক না দাঁড়িয়ে সোজা চলে এলাম বাড়িতে। আলসেমি ভরা দিনেও বেশ সুন্দর একটি সন্ধ্যা কাটলো আমাদের। প্রতিদিনের একঘেয়েমি কাজকর্মের মাঝে এমন সুন্দর কিছু সময় কাটাতে বেশ ভালোই লাগে।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।