অসহায় আহত পাখি।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমাদের এলাকায় বেশ বিভিন্ন ধরনের পাখি সব সময় ঘোরাফেরা করে। বেশ ভালো লাগে পাখির ডাক শুনতে। আমি অনেকবার চেষ্টা করেছি যখন আমার রান্নাঘরে কোন পাখি ঢুকে যায় তখন তাদের ছবি তোলার জন্য। কিন্তু সব সময় পাখিরা এত নড়াচড়া করে এবং এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে জানলা দিয়ে বেরিয়ে যায় যে আমি আর ছবি তোলার সুযোগ করে পাই না। শুধুমাত্র নিজে দেখেই একটা ভালো লাগা কাজ করে। বিভিন্ন ধরনের পাখি আমাদের বাড়িতে প্রায়ই আসতে দেখা যায়। আমার রান্নাঘরটা বেশ বড় আর এই বড় রান্নাঘরে চারটি জানলা রয়েছে। তার মধ্যে একটি জানলা যেটা আমার রান্নার ওভেনের কাছেই সেটা সব সময় বন্ধ করে রাখতে হয় নয়তো হাওয়াতে আগুন নিভে যায়। বাকি তিনটি জানলা সব সময় খোলাই থাকে। আর সেখান থেকে পাখিরা অনায়াসে আসা-যাওয়া করতে পারে এক জানলা থেকে ঢুকে অন্য জানলা থেকে বের হতে যেন তাদের ভীষণ ভালো লাগে। এছাড়াও আমাদের বারান্দায় প্রায়ই দেখা যায় বিভিন্ন ধরনের পাখি ঢুকে পড়ে। বিভিন্ন ধরনের পাখি দেখতে এবং পাখির ডাক শুনতে বেশ ভালই লাগে। আমাদের বাড়ির চারপাশে যেহেতু এখনো বেশ গাছপালার রয়েছে জঙ্গল জলাশয় আছে তাই পাখিদের আনাগোনা বেশ ভালোই হয়।
এমন দিন কাটে না যে আমি পাখির ডাক শুনতে পারি না বা পাখি দেখতে পাই না। আর এসব আমার বেশ ভালো লাগে সব থেকে মন ভালো হয়ে যায় যখন পাখিগুলো আমার ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এমনও দিন গেছে যে সকাল বেলা আমাদের স্লাইডারের জালনায় পাখির ঠোকরানোর আওয়াজে এবং পাখির ডাকে আমাদের সকালের ঘুম ভেঙেছে। স্লাইডারের জালনায় যেহেতু নিজের প্রতিচ্ছবি দেখা যায় তাই পাখিরা এসে বসলে নিজেদেরকে দেখতে পায় এবং মনে করে অন্য কোন পাখি হয়তো রয়েছে তাই একদম গায়ের জোরে ঠক ঠক করে আওয়াজ করতে থাকে, মানে অন্য পাখিকে খোঁচানোর চেষ্টা করে কিন্তু সেই আওয়াজটা এতটাই বেশি জোরালো হয় যে আমাদের ঘুম ভাঙতে বাধ্য। যাই হোক একটু বিরক্ত লাগলেও অনেকটা ভালোও লাগে। রোজকার মতনই দিন যাচ্ছিল আমার, দুপুর বেলা খাওয়া-দাওয়া করে ঘরের মধ্যে বসেছিলাম যেহেতু বাইরেটা খুব গরম আর তুলনামূলক আমার ঘরটা অনেক বেশি ঠান্ডা থাকে। আর এই বীভৎস গরমে বাইরে থাকার ইচ্ছাও হয় না তাই দুপুরবেলায় ঘরেই ছিলাম। একটু বিকাল হতে হতে ভাবলাম এবার একটু বাইরে বেরোই কারণ বেশিক্ষণ আবার ঘরে থাকতে ভালো লাগে না। বাইরে বেরোতেই দেখি আমার জন্য একজন অপেক্ষা করছিল।
বাইরে বেরিয়ে বারান্দায় যেতেই দেখলাম আমার বাবা হাতে করে একটা পাখি নিয়ে বারান্দায় আসলো। আমি কাছে যেতেই দেখতে পেলাম একটি সুন্দর পাখির ছানা রয়েছে। তবে এই পাখির ছানাটির নাম আমি জানিনা। যদিও বাবার কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলাম কিন্তু বর্তমানে আমি ভুলে গেছি কারণ একটু বড় নাম ছিল। পাখিটা কোথা থেকে বাবা পেয়েছে সেটা জিজ্ঞাসা করতেই বাবা বলল, পাখিটা নাকি একটা বিড়ালের আক্রমণের শিকার হয়েছিল। বিড়াল পাখিটিকে মারার জন্য পাখিটির পরে আক্রমণ করতেই পাখিটি নিজের প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে আমাদের বাড়ির সামনে কিছু কলা গাছের ঝাড় আছে তার পাশে পড়ে গিয়ে পা ভেঙে ফেলেছে। পাখিটা হাটতে পারছে না কষ্টে ছটফট করছে। আমার বাবা বারান্দা থেকে এমন দৃশ্য দেখে তাড়াতাড়ি গিয়ে পাখিটাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। পাখিটার এমন করুন অবস্থা দেখে ভীষণ খারাপ লাগলো। পাখিটাকে আমার বাবা আমাদের বারান্দায় ছেড়ে দিয়ে স্নান করতে গেল। এমন সময় দেখি পাখিটা কোনরকমে সেই ভাঙ্গা পা নিয়ে সরতে সরতে কিছু পাইপ রাখা ছিল তার মধ্যে ঢুকে লুকিয়েছে। যেহেতু আমাদের বাড়িতে এখনো কাজ চলছে বাড়ি তৈরীর তাই বিভিন্ন জিনিস বারান্দায় রাখা আছে। পাখিটি ও ওই জিনিসগুলোর মধ্যে গিয়ে একটু নিজেকে আড়াল করে রাখল।
কিছুক্ষণ পর দেখি একটি বিড়াল এসে ওই পাইপের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে, দেখেই বুঝতে পারলাম যে পাখিটির উপর আবার আক্রমণ করার জন্য বিড়ালটি এসেছে। তবে এবার আর চান্স না নিয়ে আমি একটি পরিষ্কার লাল বালতির মধ্যে পাখিটিকে রাখার চিন্তা করলাম। কারণ বাইরে রাখলে বিড়ালে খেয়ে যাবে আর ঘরে রাখলে রাতে অন্ধকারে পাখিটা পায়ের নিচে পড়তে পারে। তাই বালতির মধ্যে রাখলে পাখিটা সুরক্ষিত থাকবে। সারারাত এভাবেই রাখার পরে সকালবেলা আমার বাবা পাখিটিকে আবার তুলে কিছু খাবার খাওয়ালো। এবং তারপর জলের সামনে মুখ দিতেই পাখিটি আবার জলও খেলো। পাখিটি অনেক বেশি ছোট নয় তবে পায়ে এত বেশি ব্যথা লেগেছে যে পাখিটি ঠিকমত বসতে পারছে না। যে পায়ে ব্যথা লেগেছে সেই পা সব সময় মেলে ধরে বসতে হচ্ছে যেন পায়ে ব্যথা না লাগে। পাখিটির এমন অবস্থা দেখে সত্যি ভীষণ খারাপ লাগছে। পাখিকে সুস্থ করার ব্যাপারে আমার কোন অভিজ্ঞতা নেই তবে খাবার খাওয়ালে যদি শরীরে একটু শক্তি পায় এবং তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে পারে সেই চেষ্টাই করা। ভগবান করে যেন তাড়াতাড়ি পাখিটি সুস্থ হয়ে ওঠে এবং পায়ে ব্যথা সম্পূর্ণ সেরে গিয়ে খোলা আকাশের বুকে আবার উড়ে বেড়াতে পারে। পাখি সবসময় আকাশে উড়তে দেখতে ভালো লাগে এবং বিভিন্ন গাছের ডালে বিশ্রাম নিতে বা বাসা করে থাকলে সেটাই ভালো লাগে আর সাথে মধুর কন্ঠের আওয়াজ ভালো লাগে। এইভাবে অসুস্থ হয়ে ব্যথায় কাতড়ালে কখনোই ভালো লাগে না।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
https://x.com/pussmemecoin/status/1933015136316633414?s=46&t=nHPwcg_swfA_HF8Tq9ebSw
https://x.com/pussmemecoin/status/1933015368672686191?s=46&t=nHPwcg_swfA_HF8Tq9ebSw
https://x.com/pussmemecoin/status/1933015572448751967?s=46&t=nHPwcg_swfA_HF8Tq9ebSw
https://x.com/PussFi_FNDN/status/1933069808591114577
আহত পাখি দেখতে একদম ভালো লাগে না। আর এই অসহায় পাখিটি দেখে খুবই খারাপ লাগছে দিদি। আপনি এবং আপনার বাবা অনেক সেবা করেছেন দিদি।
আহত পাখিটির গল্পটি পড়ে সত্যিই মনটা ছুঁয়ে গেল। আপনার সংবেদনশীলতা, পাখির প্রতি মমতা এবং বাবার তাৎক্ষণিক সাড়া।সব মিলিয়ে এক মানবিক নিদর্শন হয়ে উঠেছে এই পোস্টটি। আজকের এই যান্ত্রিক জীবনে এমন ভালোবাসা আর করুণা সত্যিই বিরল। আপনার যত্ন আর ভালোবাসায় পাখিটি নিশ্চয়ই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে এই কামনাই করি।