বান্ধবীর সাথে বৃষ্টিতে ভেজার অনুভূতি।

in আমার বাংলা ব্লগyesterday


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1000048433.jpg



বৃষ্টি আমার সব সময় ভীষণ পছন্দ। বৃষ্টি পড়তে দেখলেই যেন একটা সুন্দর আবেগ এবং অনুভূতি কাজ করে আমার মধ্যে। আর সব থেকে বেশি যেটা ভালো লাগে সেটা হলো এক কাপ পছন্দের চা নিয়ে জানালার পাশে বসে বৃষ্টি দেখতে। আর তার থেকেও অনেক বেশি ভালো লাগে যদি বৃষ্টিতে ভিজতে পারি। এমনই একদিন সৌভাগ্য হয়েই গেল বৃষ্টিতে ভেজার। রোজকার মতনই আমি সকাল থেকে প্রয়োজনীয় সব কাজ এবং রান্না করছিলাম। সব কাজ করা শেষ হয়ে গেলে দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর আমি আর আমার প্রিয় বান্ধবী বসে গল্প করছিলাম। সেদিন সারাটা দিন ছিল মেঘলা আকাশ। শুধু সেদিন বললে ভুল হবে বেশ কয়েকদিন যাবত বৃষ্টি হয়ে চলেছে। তাই সেদিন ও সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছিল আবার থেমে যাচ্ছিল। আমরা দুই বান্ধবী বেশ সুন্দর গল্প জমিয়েছি এমন সময় বেশ জোর বৃষ্টি শুরু হল। বৃষ্টির এমন সুন্দর দৃশ্য দেখে বেশ ভালো লাগছিল। আমি এমন সুন্দর দৃশ্য দেখে কয়েকটি বৃষ্টির ফটোগ্রাফি করে নিলাম। যদিও আমার ফটোগ্রাফির মধ্যে মেঘলা আকাশ আর গাছপালা থাকলেও বৃষ্টি মোটেও বোঝা যাচ্ছিল না। বেশ কয়েকটা বৃষ্টির ছবি তোলার পরেও কোন ফটোগ্রাফিতেই বৃষ্টি বোঝা যাচ্ছে না। কিন্তু এই সময়ে প্রচুর জোরে বৃষ্টি হচ্ছিল। মানে কেউ যদি কয়েক সেকেন্ডের জন্য বাইরে গিয়ে দাঁড়ায় তাহলে একদম ভিজে যাবে।

1000048432.jpg


তবুও আমার ফোনের ফটোতে বৃষ্টি বোঝা যাচ্ছিল না বলে একটু মনটা খারাপ লাগছিল। হঠাৎ করে আমি আমার বান্ধবীকে জিজ্ঞাসা করলাম যে ওর ঘরের সব কাজ করা হয়ে গেছে কিনা। আমার বান্ধবী জানালো যে তারও সব কাজ করা হয়ে গেছে। অমনি মাথায় একটু দুষ্টুমি বুদ্ধি আসলো এবং আমি আমার বান্ধবীকে বললাম সব কাজ যেহেতু হয়ে গেছে তাহলে চল বৃষ্টিতে ভিজবো। আমার বান্ধবীটা আমার মতনই পাগল সে আমার কথা শুনে হ্যাঁ বলে দিল। সাথে সাথে আমরা চলে গেলাম ছাদে বৃষ্টিতে ভেজার জন্য। ফোন যেহেতু ছাদে নিয়ে গেলে বৃষ্টিতে ভিজে যেত তাই আমরা ঘরেই রেখে দিয়ে গেছিলাম। বৃষ্টির মধ্যে যেহেতু সচরাচর কেউ বাইরে বেরোয় না তাই একদম চারপাশটা পুরো জনমানবহীন। মনে হচ্ছিল বাইরে যেন শুধু আমি আর আমার বান্ধবী। তবে রাস্তা দিয়ে কয়েকটা গাড়ি যাতায়াত করছিল। ভীষণ ভালো লাগছিল এমন প্রাকৃতিক পরিবেশে এবং এমন সুন্দর বৃষ্টিতে ভিজতে। বেশ ইচ্ছা করছিল এমন মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দি করে রেখে দিতে। যেন ভবিষ্যতে এই দিনটার কথা মনে পড়লে এই ছবিগুলো দেখে নিতে পারি। কিন্তু সেটা যেহেতু সম্ভব নয় তাই আমরা সেই মুহূর্তটি অনেক বেশি উপভোগ করতে ব্যস্ত হয়ে গেছিলাম।

1000048434.jpg



বৃষ্টির মধ্যে চারপাশটা যেন অপরূপ সৌন্দর্যে আবৃত ছিল। আসলে বর্তমানে এই শহরের পরিবেশে সেই মাঠঘাট না থাকায় বৃষ্টিতে ভিজেও যেন মনে পড়তে থাকে ছোটবেলার কথা। এই বৃষ্টির মধ্যে কত বন্ধুদের দেখতাম মাঠে ফুটবল খেলতে এবং কাদায় পুরো মাখামাখি হয়ে যেত। জানিনা হয়তো বাড়িতে অনেক বেশি ধোলাইও পড়তো তাদের। কিন্তু সেসব দিনের মধ্যেও অনেক বেশি আনন্দ ছিল। ছাদে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে পাশের একটি মাঠে চোখ পরল, তখন মনে হচ্ছিল মাঠে গিয়ে খালি পায়ে বৃষ্টিতে ভিজতে পারতাম যদি খুব ভালো হতো। মাটির সাথে শরীরের যে স্পর্শ তার একটা অন্যরকমই অনুভূতি কাজ করে। খোলা মাঠে বৃষ্টিতে ভিজতে প্রকৃতির সাথে যে একটা সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হয় তা বলে বোঝানোর মত না। প্রকৃতি আসলে অনেক বেশি মায়াবী এর মায়া কাটানো কখনোই সম্ভব নয়। আমাদের বাড়ির চারিপাশটা অনেক বেশি গাছপালা এবং জলাশয় আর ফাঁকা জমি রয়েছে। আবার এদিকে হাইরোড ও রয়েছে। না পুরো গ্রাম বলা যায় না আবার পুরো শহর। একদম সুন্দর একটি পরিবেশ। তাই বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে এই গাছপালাগুলো অনেক বেশি গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলছিল আমার সাথে। ওই গাছগুলোর মধ্যে দুটি পাখিও ছিল। পাখিগুলো পুরো ভিজে গেছিল এবং গাছের ডালে বসে ছিল। মাঝেমধ্যে আবার আমাদের দিকে তাকাচ্ছিল।

1000048436.jpg



যেন আমাকে এসে বলছে আমিও বৃষ্টিতে ভিজছি আর তুমিও, আমরা একসাথেই এমন সুন্দর বৃষ্টির উপভোগ করছি। আমরা দুই বান্ধবী মিলে বৃষ্টিতে ভিজতে এতটাই ব্যস্ত হয়ে গেছিলাম যে আনন্দে ছাদের ওপরেই নাচানাচি শুরু করে দিয়েছিলাম। একদম পাগলের মতো আচরণ। ছোটবেলায় কখনো বৃষ্টিতে ভিজতে দেওয়া হয়নি আমাকে। তাই বড় হয়ে কেউ আর আমাকে আটকাতে পারে না। সত্যি কথা বলতে এখন কারোর অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয় না, এখন যেহেতু বড় হয়ে গেছি তাই যখনই ইচ্ছা করে বৃষ্টিতে ভিজতে পারি। বৃষ্টিতে ভিজে সাথে সাথে আবার অন্য জল দিয়ে স্নান করে নিলে আর জ্বর আসার সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু বৃষ্টির জল যদি গায়ে শুকিয়ে যায় তবে অবশ্যই জ্বরে পড়তে হয়। তাই এখন যতই বৃষ্টিতে ভিজি না কেন জ্বরে পড়তে হয় না। তাই বর্তমানে কেউ আর বারণ করতে পারে না। আমি আর আমার বান্ধবী বৃষ্টিতে ভিজে এমন সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ অনেক বেশি উপভোগ করছিলাম। বেশ কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি থেমে গেলে আমরা যথারীতি ছাদ থেকে নেমে এসে ঘরে অন্য জলে স্নান করে ফেলি। যার ফলে জ্বরে পড়ার আর ভয় থাকল না। তবে এটা সত্য যে আজকের দিনটা অনেক বেশি ভালো কাটলো বৃষ্টিতে ভেজার মধ্য দিয়ে। হঠাৎ হঠাৎ এমন পাগলামি করতে মাঝেমধ্যে ভালোই লাগে।

ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Sort:  
 yesterday 

1000048490.jpg

1000048491.jpg

1000048492.jpg

1000048499.jpg

1000048519.jpg

1000048520.jpg

1000048522.jpg

 yesterday 

অনেকদিন বৃষ্টিতে ভেজা হয়নি। আসলে মাঝে মাঝে যদি বৃষ্টিতে ভেজা হয় তাহলে ভালোই লাগে। আর বৃষ্টির সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। অনেক ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি জেনে।

 1 hour ago 

আপু বৃষ্টিতে ভিজতে সবাই কিন্তু কম বেশি পছন্দ করে। আর বৃষ্টিতে ভিজতে গেলে অন্যরকম অনুভূতি আসে। আপনারা দেখছেন দুই বান্ধবী মিলে ভালই বৃষ্টিতে ভিজেছেন। আর বৃষ্টির সময় আবেগ এবং অনুভূতি অনেক আসে। ধন্যবাদ বৃষ্টিতে ভেজার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।