জীবন বাঁচাবে গাছ।

in আমার বাংলা ব্লগ8 days ago


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17481521016395163196808983759543.jpg


সোর্স



সূর্যের তাপ যেভাবে বেড়ে চলেছে এবং পরিবেশের গ্লোবাল ওয়ার্মিং যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকা অনেক বেশি কষ্টকর হয়ে উঠছে। একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে প্রতিবছরে বছরে প্রচুর পরিমাণে গরম বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানে আগের বছর যে পরিমাণ গরম ছিল এ বছর তার থেকে অনেকটা গরম বেড়ে গেছে। ছোটবেলা থেকে পড়েছি আমাদের ছয়টি ঋতুর নাম- গ্রীষ্মকাল, বর্ষাকাল, শরৎকাল, হেমন্তকাল, শীতকাল এবং বসন্তকাল। কিন্তু বর্তমানে কি এর একটাও কাল আমরা অনুভব করতে পারি? সময় যত গেছে একেকটি কাল বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বর্তমানে তো গ্রীষ্মকাল, বর্ষাকাল আর শীতকাল ছাড়া আর কোন সিজন অনুভব করা যায় না। তার মধ্যে আবার বৃষ্টি তো হতেই চায় না আর অন্যদিকে শীতের সময় প্রতিবছরে এত বেশি কমে আসছে যে শীতের মাস গুলিও গরমে পরিণত হয়েছে। সময় যেভাবে যাচ্ছে এক সময় তো এমন দেখা যাবে যে গ্রীষ্মকাল ছাড়া আর কোন সিজনই হয়তো থাকবেনা। চারিদিকে যে পরিমাণ গরম বাড়ছে তাতে মানুষের জীবনযাপন করা অনেক বেশি কষ্টকর হয়ে উঠছে। আর এই কষ্ট থেকে মুক্ত পাওয়ার একটাই উপায় সেটি হল গাছ লাগানো।


গাছ আমাদের পরিবেশকে ব্যালেন্স করতে সাহায্য করে। আগেকার সময়ে প্রত্যেকটি সিজন বজায় রাখতো আমাদের এই প্রাকৃতিক পরিবেশ গাছপালা নদীনালা। সারাদিন গাছ আমাদের যে পরিমাণ অক্সিজেন প্রদান করে তাতে আমাদের পরিবেশ অনেক বেশি ভালো থাকে। জীবজন্তু পশু পাখি এমনকি মানুষ অনেক ভালোভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারে এবং শান্তিতে থাকতে পারে। চাষিরা চাষ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেলে কোন এক গাছের ছায়ায় গিয়ে বসে বিশ্রাম নিতে পারে। তেমনই পশু পাখিও প্রখর রোদের তাপে ক্লান্ত হয়ে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেয়। কিন্তু বর্তমানে গাছপালা প্রচুর পরিমাণে কেটে ফেলার কারণে এইসব মানুষের এছাড়া বিভিন্ন পথিকেরও বিশ্রামের জন্য গাছের ছায়ার অভাব হচ্ছে। শুধু তাই নয় পৃথিবীতে গ্লোবাল ওয়ার্মিং বাড়ছে এবং অক্সিজেন লেভেল অনেক বেশি কমে যাচ্ছে। অতীতে যেসব রাস্তার দুপাশে বড় বড় গাছ লাগানো ছিল দেখা গেছে বড় বড় গাছের ছায়ায় পুরো রাস্তাটি সুন্দর ঠান্ডা হয়ে থাকতো বর্তমানে সেই গাছগুলো কেটে ফেলার কারণে রাস্তাগুলো ধুধু করছে এছাড়াও মরুভূমির মতো হয়ে গেছে।


আগেকার সময় তো শহরাঞ্চলেও গাছ লাগানো থাকতো কিন্তু বর্তমানে শহরাঞ্চল তো দূরে থাক গ্রামের দিকেও গাছপালা অনেক বেশি কমে যাচ্ছে। বিভিন্ন কাজে লাগানো হচ্ছে গাছপালা কেটে কিন্তু তার পরিবর্তে গাছ লাগানো হচ্ছে না যার ফলে পৃথিবীতে গাছের সংখ্যা এতই কমে যাচ্ছে যে পরিবেশ প্রতিনিয়ত ভারসাম্যহীন হয়ে যাচ্ছে। আগেকার সময়ে পৌষ মাস এবং মাঘ মাস জুড়ে প্রখর শীত অনুভব হতো এবং তার আশেপাশের মাসগুলিতেও বেশ ভালো ঠান্ডা আমেজ থাকত। আমার মনে আছে কালীপুজোর সময় ছোটবেলায় যখন ঘুরতে বের হতাম, অনেক রাত করে ঘোরার সময় বেশ ঠান্ডা অনুভব হতো এবং মাথার চুল অনেকটা ভেজা ভেজা লাগতো কারণ তখন থেকে এই শিশির পড়া শুরু হয়ে যেত। কিন্তু বর্তমানে কালীপূজায় আর ঠান্ডা অনুভব হয় না। পৌষ মাঘ মাসেই এখন ঠান্ডা কমে গেছে তাহলে এত আগে কি করেই বা ঠান্ডা অনুভব হবে। আমাদের পরিবেশে যে কাজকর্ম যে চক্র চলে সেটা আমাদের কারণেই ব্যাহত হচ্ছে বা বলা যায় আমরাই ব্যাহত করছি বলে আমাদের পরিবেশ তার ভারসাম্য হারাচ্ছে।


চারিদিকে জলাশয় বন্ধ করে সেখানে বড় বড় বিল্ডিং তৈরি করা হচ্ছে আর বন জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করে সেখানেও বিভিন্ন কলকারখানা ফ্যাক্টরি অথবা ফ্ল্যাট তৈরি করা হচ্ছে। যার ফলে পরিবেশ তার ভারসাম্য হারাচ্ছে। তাই আমাদের একত্রে মিলিত হয়ে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করতে হবে চারিপাশে প্রচুর পরিমাণে গাছপালা লাগানোর। তাহলে আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে এবং আমরা গরমের হাত থেকে অনেকটা রেহাই পেতে পারবো এবং অক্সিজেন সরবরাহ ভালো হবে। এছাড়াও পৃথিবীতে যেসব ক্ষতিকারক সূর্য রশ্মি আসছে সেগুলো থেকে গাছপালা আমাদের রক্ষা করতে পারবে। বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে গাছপালা আমাদের রক্ষা করতে সক্ষম। তাই আমাদের প্রতিনিয়ত গাছপালার প্রতি যত্নশীল হতে হবে। বন জঙ্গল সব সময় সংরক্ষণের চিন্তাভাবনা করতে হবে। এবং নিজেদেরকেও অনেক বেশি গাছপালা লাগাতে থাকতে হবে। এছাড়াও গাছপালা আমাদের চারপাশের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও অনেক সাহায্য করে। আমরা যেসব মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে বসে থাকতে সময় কাটাতে বা ঘুরতে পছন্দ করি এইসব পরিবেশ থাকবে না যদি গাছ না লাগানো হয়। তাই আমাদের পরিবেশকে বাঁচাতে অবশ্যই আমাদের গাছ লাগাতে হবে।



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Sort:  
 8 days ago 

1000044478.jpg

1000044477.jpg

1000044476.jpg

 8 days ago 

1000044479.jpg

 8 days ago 

1000044519.jpg