দাদার জন্মদিনে আমাকে দিলো সারপ্রাইজ।

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1000045443.jpg



রোজ দিনের মতো স্বাভাবিকভাবেই দিন কাটছিল আমার। তবে সকাল বেলা উঠে ফোনটা হাতে নিতেই জানতে পারলাম আজকে আমার দাদার জন্মদিন। আসলে আমার নিজের মামার বড় ছেলে তার জন্মদিন ছিল। সকালবেলা উঠেই যথারীতি ফোনের মাধ্যমে তাকে শুভকামনা জানিয়ে দিলাম। মামার ছেলে হলেও আমরা ভাই বোনের থেকে বন্ধুই বেশি। ছোটবেলা থেকেই আমার যেহেতু নিজস্ব কোন দাদা নেই তাই আমার মামাতো দাদার সাথে আমরা অনেক বেশি আন্তরিকভাবে সম্পর্কযুক্ত। আর তেমনি হয়েছে আমার বৌদি। দাদার মতোই আমার বৌদির সাথে অনেক ভালো সম্পর্ক যা বন্ধুত্বের সম্পর্কের মতই মজবুত। অন্যান্য ননদ বৌদির মত তিক্ততার সম্পর্ক বা হিংসার কোন জায়গা আমাদের মধ্যে নেই। দাদা বৌদির সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক হওয়ায় তাদের সাথে ঘোরাফেরা মেলামেশা বেশ ভালোভাবেই হয়ে থাকে। তবে মামা বাড়ি আমার বাড়ি থেকে বেশ অনেকটাই দূরে। মামা বাড়ি থেকে আমার বাড়িতে আসতে প্রায় দেড় থেকে দু'ঘণ্টা সময় লাগে গাড়িতে এবং ট্রেনে। তবে ভেতরের রাস্তা দিয়ে শর্টকাটে এবং কিছুটা পথ হাইরোড ধরে বাইকে আসলে ওই প্রায় আধা ঘন্টা সময় লাগে। তাই প্রায় সময়ই দাদা এবং বৌদি ঘুরতে ঘুরতে চলে আসে আমার কাছে।

1000045458.jpg

1000045455.jpg



আমি যথারীতি সারাদিনের কাজ প্রতিদিনের মতোই স্বাভাবিকভাবে করে সন্ধ্যাবেলায় ঠাকুর পূজা দিয়ে নিজের ঘরে যাব এমন সময়ে বৌদি ফোন করলো। ফোন করে আমাকে জিজ্ঞাসা করতে লাগলো যে আমি কোথায় আছি। আমি জানালাম যে আমি বাড়িতেই আছি। সাথে সাথে সে আমাকে বলল তৈরি হয়ে আমাদের বাড়ির সামনে রাস্তার মোড় মাথায় আসতে। সত্যি কথা বলতে আমি একটু অবাক হয়ে গেছিলাম কারণ সেদিন ছিল দাদার জন্মদিন আর জন্মদিনের দিন এত দূরে এইভাবে আসবে সেটা আমার কাছে একটু আশ্চর্যজনক লেগেছিল। আমি বাড়িতে আসার কথা বললে তারা বলল বাড়িতে আসবে না কোথাও একটা গিয়ে সুন্দর মতো বসে আড্ডা মারবে। বাড়িতে ঠিক করে আড্ডা জমবে না এবং মন খুলে কথা বলা যাবে না যেহেতু বাড়িতে বয়স্ক মানুষ আছে। আর আমরা সমবয়সী না হলেও আমাদের সম্পর্ক বন্ধুর মত হওয়ায় সব ধরনের আলাপ-আলোচনা এবং মন খুলে কথাবার্তা হয়। বাড়িতে আসার জন্য অনেক বেশি জোরাজুরি করার পরেও বৌদি উল্টো আমাকে জোর করতে লাগলো বাইরে বেরোনোর জন্য। তাই আমি চটজলদি রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম দাদা এবং বৌদির সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে।

1000045448.jpg



1000045457.jpg



আমি তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে আমাদের গলির মুখেই দেখতে পেলাম দাদা এবং বৌদি দাঁড়িয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছে। সামনে যেতেই দাদা জিজ্ঞাসা করল এখানে ভালো কোন চায়ের দোকান এবং বসার জায়গা আছে নাকি। আমি আমাদের এখানে সবথেকে জনপ্রিয় জায়গাটির কথা বললাম। সাথে সাথে বলল আমাকে বাইকে ওঠার কথা। আমিও সাথে সাথে বাইকে উঠে পড়লাম এবং চলে গেলাম দাদার সাথে সেই জনপ্রিয় চায়ের দোকানটিতে। তখন যেহেতু প্রায় রাত আটটা বেজে গেছিল তাই এলাকাটা অনেকটাই শান্তশিষ্ট ছিল। কিন্তু সারাদিনে এবং সন্ধ্যায় প্রচুর পরিমাণে ভিড় জমে এই দোকানে। বাইরেটা মোটামুটি আলো কম থাকলেও ভেতরে পরিবেশটা বেশ ভালো। আমরা গিয়ে এক পাশের টেবিল দেখে বসে পড়লাম, বসতে না বসতেই জমে গেল আমাদের গল্প। যদিও বাইকে ওঠার পর থেকেই গল্প শুরু হয়ে গেছিল। আসলে অনেক দিন পর যেহেতু আমাদের দেখা হল তাই অনেক কথাই জমে আছে। গল্প করতে করতে আমাদের চা চলে আসলো। এখানকার স্পেশাল মালাইচা। ভীষণ সুস্বাদু হয় এই মালাইচা। আমার বৌদি এই চা খেয়ে তো ভীষণ খুশি। সে তো রীতিমতো বলা শুরু করেছে যে তার জীবনের সবথেকে সুস্বাদু চা সে আজকে খেলো।

1000045441.jpg


1000045450.jpg



চায়ের ওপরে এক কর মোটা দুধের সর রয়েছে। ভীষণ সুস্বাদু এই চা একবার খেলে বারবার খেতে ইচ্ছা করবে। বৌদি চা খেয়ে আবার দুটি ফিস কাটলেট অর্ডার করে দিল। সেটাও ছিল বেশ সুস্বাদু খেতে। তবে একটু কাসুন্দি দিলে আরো বেশি ভালো লাগতো খেতে। এই দোকানে খাবারের যাবতীয় সব ধরনের জিনিস পাওয়া যায়। আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিঙ্কস, বিভিন্ন ধরনের স্ন্যাকস, ফাস্টফুড জাতীয় খাবার এমনকি নন অ্যালকোহলিক ড্রিংস পাওয়া যায়। প্রতিদিন বড় বড় দুই ডেক করে চা তৈরি করা হয়। আর এই দুই বড় পাত্রে কতবার করে যে চা করা হয় তা আমার জানা নেই। কারণ এই দোকানে প্রচুর পরিমাণে ভিড় হয় শুধুমাত্র চা খাওয়ার জন্য। আমরা এই দোকানে দীর্ঘ সময় ধরে গল্প গুজব করতে লাগলাম। হঠাৎ এমন দাদা বৌদির কাছ থেকে সারপ্রাইজ পেয়ে আমার ভীষণ আনন্দ হচ্ছিল। দীর্ঘ সময় পড়ে আবার দাদা বৌদির সাথে এত সুন্দর গল্প গুজব করে সময় কাটাতে পারলাম। বেশ সুন্দর একটা সময় কাটানোর পরে প্রায় দশটা বেজে গেল। দাদা বৌদির এখনো বেশ পথ যেতে হবে তাই আমাকে বাড়ি পর্যন্ত ছেড়ে দিয়ে দাদা বৌদি আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিল।

1000045456.jpg


1000045453.jpg


ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।