ইকোপার্ক ভ্রমণ। পর্ব-৪
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমরা সেভেন ওয়ান্ডার্স অনেক সুন্দর ভাবে এবং মজা করে চারিদিকটা ঘুরে দেখে বেরিয়ে এলাম। বেরোনোর পরে আমরা ইকো পার্কের অন্যান্য জায়গায় যাব ঘোরাঘুরি করার জন্য। গেট থেকে বেরোতেই বাইরের পরিবেশটা অনেক ভালো লাগছিল। চারিদিকে বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ লাগানো রয়েছে এছাড়াও একটি গাছ দেখলাম যা দেখে আমি প্রথমে ভেবেছিলাম আসল তবে পরক্ষণেই বুঝতে পারলাম এটি নকল তৈরি করা। কাটা খেজুর গাছের উপরে পাখি বসে আছে। প্রথমেই যখন চোখ পরল এত ভালো লাগছিল দেখতে ভেবেছিলাম যে কাছে যাওয়া যাবে না নয়তো পাখিটা উড়ে যাবে কিন্তু কিছুক্ষণ ধরে যখন ভালো করে পাখিটিকে এবং গাছটিকে দেখলাম তখন বুঝতে পারলাম যে গাছটি যেমন নকল তেমন পাখিটিও নকল। কারিগর এত সুন্দর ভাবে তৈরি করেছে যে হুট করে দেখে নকল বোঝার উপায় নেই। আমি একটু কাছে গিয়ে আবার ভালো করে দেখে নিলাম। আবারো সামনের দিকে এগিয়ে হাঁটতে হাঁটতে অনেক সুন্দর সুন্দর ফুল লাগানো রয়েছে সেগুলি দেখতে পেলাম। এই ফুলগুলো একদমই অন্যরকম দেখতে যদিও আমি এই ফুলগুলোর নাম জানিনা তবে দেখতে বেশ ভালো লাগছিল।
চারিদিকে যেদিকেই একটু জায়গা থাকে সেখানেই অদ্ভুত ধরনের গাছ লাগানো আর ফুলের গাছ লাগানো। আরো কিছুটা সামনে যেতেই একটা বড় খেলার মাঠ। এই পুরো খেলার মাঠে তিন ভাগের এক ভাগে রয়েছে ছোটদের খেলা করার বিভিন্ন সামগ্রী। কিছু কিছু বাচ্চাদের খেলা করতে দেখা যাচ্ছে মায়েরাও আছে তাদের সাথে। তার সামনেই রয়েছে একটি মা দুর্গার মূর্তি। সুন্দর করে উঁচু মঞ্চ করে বাঁধানো রয়েছে এবং আলো রয়েছে সন্ধ্যার পরে জালানোর জন্য। এই মা দুর্গা মূর্তিটি মূলত ছোট বাচ্চাদের খেলার জায়গা এবং বড়দের খেলার জায়গার ঠিক মাঝখান বরাবর রয়েছে। এই মা দুর্গা মূর্তিকে পূজা করা হয় না। পার্কের ভেতর এমনি তৈরি করে রাখা হয়েছে। তিন ভাগের দুই ভাগে বড়দের খেলার মাঠ। কিছুটা এগিয়ে সামনে দেখি বড়রা খেলা করছে। আমার কাকি শাশুড়ির ইচ্ছা হল সে সেখানে বসে কিছুক্ষণ তাদের খেলা দেখবে। তাই সে সুন্দর একটি জায়গা দেখে বসে পড়ল। এবং আমার দেওর কে বলল পেছন থেকে এবং সামনে থেকে বেশ কিছু সুন্দর ছবি তুলে দিতে। আসলে ব্যাপারটা এটাই যে সে এমন সুন্দর খোলা মাঠে বেশ কিছু ভালো ছবি তুলতে চাইছে। সে এই পার্কের একটা কোনাও ছাড়েনি ছবি তুলতে।
প্রত্যেকটি কোনায় কোনায় গিয়ে ছবি তুলেছে, তাহলে এই মাঠটি কেন বাদ যাবে। মাঠের বিভিন্ন দিক দিয়ে যেন দেখা যায় সেই ভাবে এবং সে বাচ্চাদের খেলা দেখছে এমন ভঙ্গি করে বেশ কিছু ছবি তুলে নিল। ছবি তোলা হয়ে গেলে আমরা বিপরীত দিকেই দেখতে পেলাম বাটারফ্লাই গার্ডেন রয়েছে। বাটারফ্লাই দেখার জন্য বাটারফ্লাই গার্ডেনে প্রবেশ করলাম। সেখানে আসলে সংরক্ষণ করে রাখা কোন বাটারফ্লাই নেই। মুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে বিভিন্ন রংয়ের বাটারফ্লাই ঘোরাঘুরি করছে সেগুলোই দেখা যাবে। বাটারফ্লাই গার্ডেনে প্রবেশের পথে দুই পাশে বিভিন্ন ধরনের বাটারফ্লাই এর ছবি এবং কোন ফুলে কোন বাটারফ্লাই বসে সেগুলো সুন্দর করে বিস্তারিত বর্ণনা করা আছে। ভেতরে ঢুকতেই কাকি শাশুড়ি যখন দেখতে পেল যে এখানে বাটারফ্লাই কোন খাঁচায় বন্দি বা সংরক্ষণ করা নেই প্রকৃতিতেই আমাদের খুঁজে খুঁজে দেখতে হবে তখন আর ভেতরে যাবে না বলে মনস্থির করল। তাই আমরা ভেতরে প্রবেশ না করে গেটের থেকে একটু ঢুকেই ফিরে এলাম। তবে আমি যখন আগে গেছিলাম তখন ভেতরে গিয়ে ঘুরে এসেছি এবং অনেক বেশি সময় কাটিয়েছিলাম।
কারণ সেখানে বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ ছিল যাতে বিভিন্ন ধরনের বাটারফ্লাই ছিল। ফুলের গাছ ছাড়াও জানিনা কিসের আকর্ষণে ওখানে অন্যান্য গাছেও অনেক বেশি এবং বিভিন্ন রঙের কালো সাদা অদ্ভুত সুন্দর নকশার বাটারফ্লাই ছিল। আমি আর আমার বর মশাই তখন অনেক বেশি সময় কাটিয়েছিলাম এই বাটারফ্লাই গার্ডেনে এবং অনেক বাটারফ্লাই দেখেছিলাম। বাটারফ্লাই গার্ডেন থেকে বেরিয়ে আমরা আবার সামনের দিকে ইকোপার্কের সুন্দর পরিবেশ এবং বিভিন্ন ধরনের ইউনিক গাছগুলো দেখতে দেখতে হাঁটতে লাগলাম। ভীষণ অদ্ভুত ধরনের কিছু গাছ সেখানে লাগানো রয়েছে যার নাম হয়তো গুগলে কি বলে সার্চ করব জানি না। ছোট বড় অনেক ধরনের গাছ এমনকি নারকেল গাছের মতো এক ধরনের গাছ দেখলাম যেটা একদমই নতুন আমার কাছে। একটি গাছে কেওড়া ফলের মতো ফল ধরেছে কিন্তু সেটা নাকি কেওড়া গাছ নয়। পৃথিবীতে কত অদ্ভুত ধরনের গাছপালা আছে তার কিছু এই ইকো পার্কে আসলে দেখতে পাওয়া যাবে। যদিও আমরা এই গাছগুলো নিয়ে গবেষণা মূলক কথাবার্তা বলতে বলতে ভুলেই গেছিলাম এই গাছগুলোর ফটোগ্রাফি করার কথা।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
সুন্দর কোন জায়গায় ভ্রমণ করতে অনেক ভালো লাগে। ইকোপার্ক ভ্রমণ করেছেন জেনে খুবই ভালো লাগলো আপু। জায়গাটি সত্যি অনেক সুন্দর।