কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য। আজকে আমি আপনাদের মাঝে বেশ কিছু মৃৎশিল্প এবং হস্তশিল্পের ফটোগ্রাফি শেয়ার করব। আশা করি আমার এই ফটোগুলো দেখে আপনারা পুরনো দিনের অনেক স্মৃতি স্মরণ করতে পারবেন। আর অনেকদিন না দেখা মাটির তৈরি জিনিস দেখার সুযোগ পাবেন। তাহলে চলুন মূল পর্বে যায়।

বামুন্দি বাজার আমাদের বাসা থেকে ৮-১০ কিলো দূরে। তবে মায়ের বাসা থেকে চার-পাঁচ কিলো দূরে। যেখান থেকে সুযোগ হয় কেনাকাটার উদ্দেশ্যে এ বাজারে উপস্থিত হয়ে থাকি। ঈদ উপলক্ষে বেশ কিছু কেনাকাটার উদ্দেশ্যে এই বাজারে উপস্থিত হয়েছিলাম। এ বাজারে উপস্থিত হয়ে দেখলাম একটি সুন্দর মৃৎশিল্প এবং হস্তশিল্পের দোকান। এ দোকানে আমি উপস্থিত হয়ে লক্ষ্য করে দেখলাম বেশ অনেক জিনিস রয়েছে। যে সমস্ত জিনিসগুলো ছোটবেলায় কেনার জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতাম। যেমন পূজার অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিলের অনুষ্ঠান এছাড়া অন্যান্য অনুষ্ঠানে এই সমস্ত জিনিস দেখা যায়। তবে একসাথে অনেকগুলো জিনিস একই দোকানে দেখে বেশ ভালো লাগছিল। ছোটবেলায় মাটির ব্যাংক কেনার জন্য কত বায়না ধরতাম বাড়িতে। এখন অবশ্য এই জিনিসগুলোর প্রয়োজন হয় না এরপরেও দেখলে বেশ ভালো লাগে। একসাথে অনেক জিনিস এখানে লক্ষ্য করলাম।

বর্তমান সময়ে মৃৎশিল্পের ব্যবহার একদম কমে গেছে। তেমন বেশি একটা মৃৎশিল্প আমাদের এদিকে দেখা যায় না। আগে লক্ষ্য করতাম বিভিন্ন গাড়িতে করে মৃৎশিল্প গ্রামে গ্রামে বিক্রয় করতো। ঘোড়ার গাড়ি অথবা গরুর গাড়িতে অথবা ভ্যান গাড়িতে করে মাটির কলস, হাঁড়ি, সরা, মটকা, বাসনকোসন, পেয়ালা, সুরাই, ডালা, পিঠে তৈরির ছাঁচ, মালশা, ঢোকসা, তাওয়া সহ অনেক কিছু বিক্রয় করতে আসতো কুমোর শ্রেণীর মানুষ। এখন হয়তো এই জিনিসগুলোর ব্যবহার কমে গেছে তাই তৈরি করার কার্যক্রম কমে গেছে। তবুও আমি ভালোবাসি এই মৃত শিল্পকে কারণ বাঙালির প্রধান পরিচয় এই মৃত শিল্পকে কেন্দ্র করে।


এখনো আমাদের মাঝে হস্তশিল্প হিসেবে হাত পাখার প্রচলন রয়েছে অনেক। তবে এমন একটা সময় ছিল আমাদের প্রত্যেকটা পরিবারে অনেকগুলা করে হাতপাখা থাকতো। কিন্তু এখন খুব কম দেখা যায়। প্রচন্ড গরমের দিনে কারেন্টের ফ্যান সহ ব্যাটারি চালিত ফ্যানের ব্যবস্থা থাকে। অতি প্রয়োজনে যদি দু একটা এই হাত-পা খাঁ রাখা হয়। তবে আজ পর্যন্ত আমি আমার রুমে এই পাখা রেখে দেই। প্লাস্টিকের তা ছিল, প্লাস্টিকের তাও যেন ভালো লাগে না। তাল পাখা বেশি পছন্দ করি আমি।


এখানে হাত পাখার পাশাপাশি রয়েছে আটা বা ময়দা চলার চালুন। এইগুলা এখনো আমাদের প্রয়োজন হয়। তবে প্লাস্টিকের চালুন ওঠার পর থেকে এগুলোর ব্যবহার কমে গেছে। তবে আমি যতটা জানি হস্তশিল্পের এই চালুন বেশি কাজে আসে। আর এগুলো যেন বাংলার হস্তশিল্পের প্রাণ।

এখানে মাটি দিয়ে তৈরি অনেকগুলো রুটি তৈরি করার সরা রয়েছে। তার পাশে আরও রয়েছে খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে যে গুড় তৈরি করা হয় সেই গুড় থেকে তৈরি পাঠালি বানানোর তাওয়া। যাইহোক একটি দোকানে এত কিছু জিনিস দেখার পর আমার বেশ ভালো লেগেছিল। চমৎকারভাবে বিছিয়ে রেখেছে চারিপাশে এই সমস্ত জিনিসগুলো। এই মুহূর্তে আমার এই সমস্ত জিনিস কোন কিছু কেনার প্রয়োজন ছিল না। শুধুমাত্র মার্কেট করতে গিয়ে এগুলো দেখতে পেয়ে ফটো ধারণ করেছিলাম।

ধন্যবাদ সকলকে
ফটোগ্রাফি | মৃৎশিল্প ও হস্তশিল্প |
স্থান | বামুন্দি বাজার |
লোকেশন | location |
মোবাইল | Infinix Hot 11s |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
বামুন্দি বাজারে মৃৎশিল্পের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো। এ কথাটা ঠিক বলেছেন যে মৃৎশিল্প আসলেই দিন, দিন কমে যাচ্ছে। যাইহোক খুব সুন্দর পোস্ট করেছেন ভাবি দেখে অনেক ভালো লাগলো। ( সেই সাথে ঈদের শুভেচ্ছা এবং ভালোবাসা রইলো)
হ্যাঁ আগে আমাদের এই শিল্পের ব্যবহার বেশি ছিল এখন নেই
মৃৎশিল্প এবং হস্তশিল্পের ব্যবহার প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে কারণ আধুনিকতার ছোঁয়ায় এই মাটির তৈরি জিনিসের ব্যবহার দিন দিন কমতেই আছে। আপনি বামন্দি বাজারে গিয়েছিলেন আর সেখানে দোকানে মৃৎশিল্পের আসবাবপত্রের দোকানে গিয়েছিলেন। ছবিগুলো দেখে আবার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল।
আপনি কিন্তু ঠিক বলেছেন ভাইয়া
আধুনিকতার প্রভাবে আজ মৃৎশিল্প গুলো প্রায় শেষের দিকে। আগে মানুষ যেমন মৃতশিল্প ব্যবহার করত এখন কিন্তু তেমন আর ব্যবহার করেনা। হস্ত শিল্পের প্রচলন মোটামুটি রয়েছে। তবে আধুনিক আবিষ্কারের মাধ্যমে হয়তো সেগুলোও দিন দিন বিলুপ্তি হয়ে যাবে। আপনার এই শিল্প গুলো ভালো লাগে জেনে অনেক খুশি হলাম।
তবুও এই শিল্পকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে
বাহ আপনি আজকে আমাদের মাঝে বেশ দারুন একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। আপনি একদম ঠিক বলেছেন আসলেই বাঙালির ঐতিহ্য দিন দিন অনেকটাই কমে এসেছে। আপনি এই সকল জিনিসগুলোর ফটোগ্রাফি বামুন্দি বাজার থেকে সংগ্রহ করেছেন আপনার পোস্ট পড়েই বুঝতে পারলাম। ধন্যবাদ নিজেদের ঐতিহ্য সম্পর্কে আবারো মনে করিয়ে দিয়ে এত সুন্দর একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করার জন্য।
এগুলো আমাদের ঐতিহ্য
আসলেই আপু দিন দিন হস্তশিল্পের ব্যবহার অনেক কমে যাচ্ছে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এসব এখন আর তেমন একটা ব্যবহার করতে দেখা যায় না। মাটির তৈরি যে কোন জিনিস আমার ভীষণ পছন্দ। খুব সুন্দর ভাবে তারা হাতে এই জিনিসগুলো তৈরি করে। শুনেছিলাম তালপাখার বাতাস নাকি অনেক ঠান্ডা হয়। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
আধুনিক জীবন ব্যবস্থার কারণে এগুলো হারিয়ে যাচ্ছে