গল্প: স্বামীকে অসম্মান করার ফল
শোনা গল্প
নাসরিন ছোট থেকে খুবই এক্সপার্ট। পড়ালেখায় যেমন মেধাবী ছিল তেমনি পারিবারিক কাজকর্মে অনেক দক্ষ ছিল। তবে তার স্বভাব চরিত্রটা তেমন ভালো ছিল না। যত ভালো লেখাপড়া করুক না কেন কথাবার্তা তার পরিবর্তন হয়নি। মানুষের সাথে কেমন আচার ব্যবহার করতে হবে সেগুলো জেনেও যেন বুঝে না। সবাই ধারণা করে এটা তার পারিবারিক শিক্ষা। পারিবারিকভাবে নৈতিক শিক্ষা না পাওয়ার ফলে তার এমন আচরণ। তবে স্কুল থেকে তো শিক্ষা গ্রহণ করেছে। তবুও তার পরিবর্তন হয় না কেন। চেহারার গৌরব, ভালো রেজাল্টের গৌরব, বাবার অর্থের গৌরব আর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অহংকার যেন বন্ধু-বান্ধবীদের অতিষ্ঠ করে ফেলত। বান্ধবী অল্প ছিল বন্ধুর সংখ্যা বেশি ছিল। সে সবাইকে বলতো কে কি ভাবলো এই নিয়ে তার মাথাব্যথা নেই। সে তার ভালোলাগার মতো চলতে থাকবে। তার কথাবার্তা এমনটা ছিল যে, বড় কে কিভাবে মান্য করতে হয় ও সম্মান করতে হয় সেই বিষয়টাই সে বোঝেনা।
এসএসসি ও এইচএসসি ভালো রেজাল্ট করলাম। তার রেজাল্ট শুনে সবাই মুগ্ধ হত কিন্তু আচরণ দেখে কষ্ট পেত। ভালো মেধাবী একজন ছাত্রী থেকে কেউ কখনো মূর্খের আচরণ পছন্দ করে না। মাঝেমধ্যে তাকে নিয়ে ছোটখাটো বদনাম সৃষ্টি হতে থাকে। কলেজের নাসরিন ছেলেদের সাথে আড্ডা দিয়ে থাকে। তাকে নিয়ে অনেক কথা সৃষ্টি হতে থাকলো। মানুষের বলাবলি করতে থাকলো ভালো মেয়েরা কখনো পর পুরুষদের সাথে আড্ডা দিতে পারে না। খারাপ মেয়েরা কখনো স্বামীর সংসার গড়তে পারে না। চক্ষু লজ্জা আর দুর্নাম দূর করতে পিতা মাতারা তার চাকরির আশাবাদ দিয়ে দ্রুত বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে থাকে। সেও মনে মনে এমনটাই অনুভব করছিল, কারণ তার বেশ কয়েকটা বান্ধবীদের বিয়ে হয়েছে। স্বামীদের সাথে কত আনন্দে ঘোরাঘুরি করতে পারে। বান্ধবীরা কলেজে আসে। স্বামীদের গুণগান করে। তার মনের মধ্যে চিন্তা জাগ্রত হয়,প্রেম করে অথবা যেভাবেই হোক বিয়ে করতে পারলে ভালো। এরপর পারিবারিক ভাবে তার বিয়ে হয়ে যায়। পিতা-মাতা চায় সন্তানদের ভালো পাত্রের হাতে তুলে দিই। নাসরিন ঠিক সেভাবে একটা ভালো ছেলের বউ হল।
ছেলেটা অনেক ভালো ও নম্র ভদ্র। প্রথম থেকেই নাসরিনের সাথে অনেক সুন্দর আচরণ করে। কিন্তু দিনে দিনে নাসরিনের স্বামী নাসরিনকে চিনতে শিখলো। সে দেখল বউয়ের খারাপ আচরণগুলো। বিয়ের পর বাপের বাড়িতে গিয়ে স্বামীর সাথে কলেজে যেত। কলেজে অন্যান্য বন্ধুদের সাথে হাসাহাসি করে কথা বলতো, ছেলেদের অতি ক্লোজ হয়ে চলত। স্বামীর পকেট থেকে টাকা বের করে নিয়ে বন্ধু বান্ধবীদের এটা সেটা খাওয়াতো আর হাসাহাসি করত। চাইতো না স্বামীর কাছে কত টাকা রয়েছে। কতটা খরচ দিতে পারবে। নাসরিনের স্বামী এমন মুহূর্তগুলো বেশ অপমান বোধ করত। সবকিছু মেনে নিলেও পর পুরুষদের সাথে ক্লোজ হয়ে হাসাহাসি করা এটা তার স্বামীর মন থেকে মেনে নিতে পারত না। এই নিয়ে স্বামী ধরা বাধা শুরু করে। এরপর দেখা যায় কলেজে বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে নাসরিন স্বামীকে বাপের বাড়িতে বসিয়ে রেখে কলেজে যেত এবং অনেক দেরি করে বাসায় ফিরত। এতে তার স্বামী অনেক কষ্ট পেত। মনে মনে অবিশ্বাস আর সন্দেহ সৃষ্টি হতে থাকলো। অতিরিক্ত ভালোবাসার ফলে কষ্টটাও বেড়ে যেতে থাকলো রায়হানের মনে।
নাসরিনের আচরণগুলো কখনো সে মেনে নিতে পারত না। নাসরিনের আচরণগুলো স্বামী রায়হানের মনের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি করতে থাকে। এতে রায়হান মানসিক কষ্ট ভোগ করতে বেশি। তার স্বামী ভাবতো বিয়ের আগে না জানি কি করে বেড়িয়েছে। কিন্তু নাসরিন বুঝতে চাইতো না স্বামী কি ভাবছে আর কি মনে করবে। দিন দিন তার পরিবারের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করছে। তার খারাপ আচরণগুলো মুখ বুজে সহ্য করতে হাজবেন্ড। নাসরিনের স্বামী রায়হান বেশ কয়েকবার অনেক ঘটনা এবং নিজের অনুভূতি বোঝানোর চেষ্টা করে। এভাবে রায়হান বিয়ের পর বউকে অনেক ভালবেসে ফেলে। বউয়ের খারাপ আচরণে কষ্ট পেতো। বউ রাগ দেখিয়ে বাপের বাড়িতে গেলে সে পাঁচ মিনিট থেমে থাকতে পারত না। তার ভেতরটা অতিষ্ঠ হয়ে পড়তো বউকে না দেখতে পেরে। কয়েকদিন পর শ্বশুরবাড়িতে উপস্থিত হতো বউয়ের জন্য। নাসরিন মনে করত তার অনেক মূল্য। স্বামীকে নাকে দড়ি বেঁধে ঘুরাতে পারছে। এই যে ভালোবাসা নাসরিন বুঝলো না। রায়হান যত ছুটে যায়, নাসরিনের দিকে নাসরিন ততো অবহেলা করতে থাকে। দিনে দিন মনের কষ্টে নাসরিনের প্রতি ভালোবাসা থেমে যেতে থাকে।
পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ
বিষয় | গল্প |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Huawei P30 Pro-40mp |
Photo editing | PicsArt app |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
W3w location | source |
দেশ | বাংলাদেশ |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
X--promotion
আজকের কাজ সম্পন্ন
এমন অনেক নাসরিন রয়েছে যাদের দুর্ব্যবহারের জন্য স্বামীরা মনের কষ্ট নিয়ে পথ চলে। মানসিক প্রশান্তি পাওয়ার চেষ্টা করে যে ওয়াইফের কাছে সেই ওয়াইফের আচরণগুলো যেন দিন দিন তাকে যন্ত্রণার মধ্যে ঠেলে দেয়। গল্পটি অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে, আশা করব বাকিটা শেয়ার করবেন।
অবশ্যই ভাইয়া
নাসরিনের রুপ,মেধা,বাবার টাকা পয়সার গৌরবের গল্পটি বেশ ভালো লাগলো।একদমই ঠিক সুশিক্ষিত মানুষের মূর্খের মতো আচরণ কেউ মেনে নেয় না।অবশেষে নাসরিনের বিয়ে হলো এবং এখন সে তার আসল পরিচয় ফুটিয়ে তুলে বরের সাথে খারাপ আচরন করতে থাকলো এবং বর আস্তে আস্তে নাসরিনের থেকে দূরে সরে আসতে লাগলো এটাই একজন অহংকারী মানুষের শিক্ষা। ধন্যবাদ পোস্ট টি ভাগ করে নিয়েছেন জন্য।
বাকি পর্বটা পড়বেন
নাসরিনের মতো মেয়ে নিয়ে সংসার করা যায় না। নাসরিনের বাবার যতই টাকা থাকুক না কেনো,নাসরিন যতই সুন্দরী হোক না কেনো কিংবা নাসরিন যতই মেধাবী হোক না কেনো। কারণ মেয়েদের প্রধান কাজ হচ্ছে স্বামীকে সম্মান করা এবং স্বামীর কথামতো চলা। রায়হান এমন মেয়ে নিয়ে কিভাবে সংসার করতে পারছে কে জানে। আমি হলে তো মনে হয় ১ মাসও সংসার করতে পারতাম না। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
রায়হান ভালো মানুষ, আপনি কি ভাল মানুষ? হা হা হা! কমেন্ট পড়ে রিপ্লাই দিয়ে মজা পেলাম।
আপু কিছু মেয়ে আছে পড়ালেখা ভালো হলেও তাদের আচার ব্যবহার অনেক খারাপ। তারা বড়দের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় সেটাও জানে না। আর নাসরিন হচ্ছে সেরকম মেয়ে। নিজের স্বামীর পকেটের টাকা খরচ করে অন্য সব ছেলেদের সাথে হাসি মুখে কথা বলে। এরকম পরিবেশ যে কেউ দেখলে সন্দেহ করবে। এতে করে ভালবাসা নষ্ট হয়ে যায়। যাইহোক সুন্দর করে পোস্টটি শেয়ার করেছেন তাই ধন্যবাদ আপনাকে।