আমার বাংলা ব্লগে সকলকে স্বাগতম

Photography device: Infinix Hot 11s-50mp
আমরা সবাই কাশফুলের সাথে বেশ পরিচিত। আমরা জানি শরৎকালে কাশফুল ফোটে কাশ বনে। ঠিক তেমনি কাশফুলের বনকে কেন্দ্র করে আজকে একটি গল্প আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলেছি। আমি তখন বেশ ছোট ছিলাম। পাড়াগাঁয়ের বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা করতাম। আমাদের সময় একটা বিষয় বেশ প্রচলন ছিল। তা হচ্ছে কাশবনে রাজহাঁসের বা পাতি হাঁসের ডিম কুড়ানো। বিশেষ করে বর্ষার সময় পাতি হাঁসের ডিম বেশি পাওয়া যায়। তবুও আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছিল যেখানে একটু কাশবন দেখি সেখানেই যদি পাতিহাঁস গুলো চরাই করতে দেখি, চেষ্টা করতাম আশেপাশে ডিম খোঁজার। কারণ ছোট থেকে আমাদের সমবয়সী বা আমাদের থেকেও একটু বড় যারা ছিল তাদের দেখাদেখি এমন অভ্যাস আমাদের পরিণত হয়েছিল।
মাঝেমধ্যে আমরা নির্দিষ্ট একটি সময়ে খেলাধুলা করতে গিয়ে আগে কাশবনের দিকে ডিম খোঁজার জন্য দৌড়াতাম। ঘটনাটা যেদিন ঠিক সেইদিন একইভাবে আমরা সবাই যারা একসাথে খেলাধুলা করি আমরা সেই খেলার মাঠের দিকে উপস্থিত হই। আমাদের সেই খেলার মাঠটা বেশি দূরে নয় বাড়ি থেকে আম বাগান, আম বাগানের পাশেই খেলার মাঠ। আর সেখানেই রাস্তার পাশ দিয়ে রয়েছে বড় একটি খাল। খেলাধুলা শেষ করে আমরা সবাই ওখানে গোসল করতাম আবার পানির মধ্যেও খেলাধুলা করতাম। আর এই খালের পাড়ে রয়েছে কাশবন। আমরা খেলা খেলতে গিয়ে প্রথমেই কাশবনের দিকে ছুটে গিয়েছিলাম যেখানে পাতি হাঁসগুলো বসে থাকে। আর আমরা জানি নির্দিষ্ট কিছু জায়গা রয়েছে প্রতিনিয়ত সেখানেই এই পাতিহাঁস গুলো এসে ডিম পেড়ে যায়।
আমরা সবাই উপস্থিত হলাম। কে আগে এসে নির্দিষ্ট জায়গা গুলোতে উপস্থিত হয়ে ডিম কুড়িয়ে নিতে পারে। আমরা আমাদের মত ডিম খুজাই ব্যস্ত। পাতি হাঁসগুলো আমাদের দেখে লাফ দিয়ে পানির মধ্যে চলে গেল। কিছু পাতিহাঁস জোরে জোরে ডাকা শুরু করে দিল। আমরা ভেবেছিলাম আমাদের দেখেই হাঁসগুলো ডাকছে। কারণ আমার সেখানে লাফাতে লাফাতে এসে উপস্থিত হয়েছি আর ডিম খোজায় ব্যস্ত। কিন্তু এই মুহূর্তে হঠাৎ আমার এক বান্ধবী দেখতে পারলো একটা ডিম যেন চলে যাচ্ছে। সে অত খেয়াল করেনি, যেহেতু ডিম পেলে নিয়ে নিতে হবে এমন অনুভূতি। তাই সে আরও এগিয়ে গেল ডিমের দিকে। সে দেখতে পারলো ডিমের পেছন অংশ কেন জানি কালো।
এরপর যখন সে ডিমটা নিতে গেল সে খেয়াল করে দেখল ডিমের গায়ের সাথে সাপের চোখের মত। সে ডিমে টাচ করে ফেলেছিল। এমনকি ডিমটা ওঠাতে গিয়েছিল কিন্তু পারে নাই। তারপর পিছনে থাকা অন্যরা দেখল, দেখামাত্র তারা চিল্লাতে থাকলো ওটা সাপ সাপ। তারপর সে থেমে গেল। দেখা গেল সাপটা আস্ত ডিমটা খাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমার বান্ধবী সে তো বুঝতে পারেনি। ছোট মানুষ প্রায় সে ডিমের গায়ে হাত লাগানোর পূর্বে সাপের গায়ে হাত লাগিয়ে গেছিল কিন্তু সে বোঝেনি কারণ সে ডিমটা উঠানোর চিন্তা করেছিল,কিছু অংশ যে সাপের মুখের মধ্যে বুঝতে পারেনি। এরপর সবাই পিছিয়ে আসলো। আর জোরে চিৎকার করতে থাকলো, সাপে ডিম খাচ্ছে! এমন কথা শুনে বড়রা দৌড়াতে দৌড়াতে এগিয়ে আসলো।
বড়রা ঘটনা স্থানে আসার পূর্বে সাপটা মুখ থেকে ডিমটাকে ছেড়ে দিল। এরপর নাকি কয়েকবার ছোবল মেরেছিল। ততক্ষণে আমাদের বন্ধুরা অনেকটা পিছিয়ে গেছিল। এরপর সেই বন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে সাপটা ধীরে ধীরে কোথাও চলে গেল কেউ চোখে দেখতে পারলো না। বড়রা লাঠি হাতে এসে সাপ দেখতে পারলো না। তারা অনেকেই উল্টাপাল্টা বলতে থাকলো। আবার অনেকেই বলতে থাকলো ধোড়া সাপ না, ধোড়া সাপের ডিম খায় না। কুলিম সাপের ডিম খায়, ওই মুহূর্তে বেশ ভয় লাগছিল আমার। এরপর আমরা সবাই সাবধান হয়ে গেলাম। ওভাবে আর কোনদিন ডিম কোড়ানোর উদ্দেশ্যে দৌড়াদৌড়ি করি নাই। আর সে থেকে আমিও ডিম কুড়ানো বাদ দিয়ে দিলাম।


পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ

বিষয় | অতীত ঘটনা |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix hot 11s |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
দেশ | বাংলাদেশ |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।


বাহ আপনার গল্পটা সত্যিই ভীষণ ভালো লাগলো।যেমন মজার ছিল তেমনি ভয়ংকর ছিল।যদি সাপটি কামড়ে দিত তাহলে তো খুবই ভয়াবহ হত। যাই হোক ঐ ঘটনার পর থেকে আপনারা পরবর্তীতে সাপের ভয়ে সাবধান হয়ে ডিম কুড়ানো বাদ দিয়ে ভালো করেছেন।ধন্যবাদ।
হ্যাঁ এই বিষয়টা আমাদের সবার জানা প্রয়োজন আছে।
সবারই ভাগ্য ভালো ছিল যার কারণে কোন অঘটন ঘটেনি। সাপ যেহেতু কয়েকবার সোবল মেরেছিল তারপরও তেমন কোন ক্ষতি হয়নি সেহেতু বলতে হবে সৃষ্টিকর্তার রহমত ছিল।
হ্যাঁ একদম ঠিক
পোস্টটি পড়ে অবাক হয়ে গেলাম আগে জানা ছিল না হাঁসের ডিম কুঁড়িয়েও পাওয়া যায়।তাও আবার কাশবনের ডিম খুব মজার ব্যাপার কিন্তুু।আপনার ডিম খুরানোর ঘটনাটি যেমন মজার তেমন ভয়ংকর ও। ডিম কুড়াতে গিয়া আপনার ওই বান্ধবী সাপের ছোবলের শিকার হননি। মজা করে ডিম কুড়াতেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে। ধন্যবাদ পোস্টটি আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
হ্যাঁ পাতি হাঁসের ডিম পাওয়া যায়।