হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ শুক্রবার। ১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের নিকট বাংলা বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ উদযাপনে আমার অংশগ্রহণ সম্পর্কে কিছু কথা শেয়ার করছি। আমি আশা করি, পহেলা বৈশাখ উদযাপনে আমার অংশগ্রহণের কথা গুলো পড়ে আপনাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে।

পোস্টের শুরুতেই আমি আপনাদের সকলকে জানাই শুভ নববর্ষ। আজ বাংলা বছরের এবং বাংলা মাসের প্রথম দিন "পহেলা বৈশাখ"। আর পহেলা বৈশাখ আসা মানেই প্রত্যেক নর-নারীর মাঝে এক অন্যরকম অনুভূতি জেগে ওঠা। পহেলা বৈশাখকে বরণ করে নেওয়ার জন্য অনেকে গেয়ে ওঠেন বিভিন্ন ধরনের সংগীত। যেমন রবীন্দ্র সংগীত কিংবা দেশাত্মবোধক গান। আবার অনেকে নতুন বছরের প্রথম দিনকে চির অম্লান করে রাখার জন্য নিজেদেরকে সাজিয়ে তোলে নতুন রূপে। নতুন বছরের প্রথম দিনটি যেমন সুন্দর এবং উজ্জ্বল রোদের আলোয় ঝলমলে ঠিক তেমনি আমরাও নিজেদেরকে নতুন বছরের ঝলমলে আলোর সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি। আমরা উৎসব করি, আয়োজন করি নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ার জন্য। শুধু তাই নয় আমাদের বাঙালি ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের নিকট পৌঁছে দেওয়ার জন্য আয়োজন করি বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান। আবার আমাদের বাঙালি সমাজের চির ঐতিহ্য পানতা ভাতের সাথে ইলিশ ও কাঁচা মরিচ খেয়ে পয়লা বৈশাখ কে সাদরে গ্রহণ করি। আসলে পয়লা বৈশাখ আসা মানেই আমরা ফিরে যাই আমাদের অতীত ঐতিহ্যে ও সংস্কৃতির দিকে। অন্ততপক্ষে একটি দিন আমরা নবরূপে সেজে প্রকৃত বাঙালি হওয়ার চেষ্টা করি।




সুপ্রিয় বন্ধুগণ, প্রতিবছর আমি আমার স্কুলের পক্ষ থেকে পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানে যোগদান করি এবং পয়লা বৈশাখ অনুষ্ঠানটি মন প্রাণ ভরে উপভোগ করি। কিন্তু এ বছর পবিত্র মাহে রমজান হওয়ার কারণে পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানটি তেমন ভাবে সাজানো হয়নি। কিন্তু পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানটি যে হয়নি এমন না। আমি পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানটি উদযাপন করেছি কিন্তু একটি বিশেষ শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে। যাহোক, এবার পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানটি উদযাপন করার জন্য আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং আমাদের এলাকার চেয়ারম্যান একটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। তাদের উদ্যোগটি ছিল আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহ সকল সদস্যগণ এবং আমাদের বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা গণ মিলে পহেলা বৈশাখের মঙ্গলসভা যাত্রা করবে। পহেলা বৈশাখ উদযাপনের জন্য তাদের এই উদ্যোগটি আমরা সাদরে গ্রহণ করলাম। তারপর মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করার জন্য মানসিকভাবে আমি এবং আমার স্টাফের অন্যান্য জন প্রস্তুত হয়ে গেল।





আজ আমাদের বাংলা বছরের প্রথম দিন। তাই নতুন আশা এবং নতুন উদ্দীপনা নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করার জন্য আমি নির্ধারিত সময়ে আমাদের বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে পৌঁছে গেলাম। আমি পৌঁছানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সহ সকলেই আমাদের বিদ্যালয় উপস্থিত হল। আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে ছিল নতুন বছরকে গ্রহণ করে, নতুন আশা নিয়ে, নতুন উদ্দীপনা নিয়ে, নতুন চিন্তা ও চেতনা নিয়ে, এবং নতুন শক্তিতে বলিয়ান হয়ে আগামী দিনে এগিয়ে চলার দৃঢ় সংকল্প। একই সাথে অতীতের সকল ব্যর্থতা ভুলে গিয়ে নতুন স্বপ্ন নিয়ে একজন দেশ প্রেমিক হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করার দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। তারপর নতুন বছরকে বরণ করার জন্য এবং নতুন বছরে আনন্দ সকলের নিকটে পৌঁছে দেয়ার জন্য শুরু হলো আমাদের মঙ্গল শোভাযাত্রা।


মঙ্গল শোভাযাত্রা ব্যানারের সামনে ছিল আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহ অন্যান্য জন। আমরা সকলেই খুবই শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু করে দিলাম। আমরা যখন গ্রামের রাস্তা দিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা করছিলাম তখন গ্রামের অন্যান্য মানুষেরা আমাদের দিকে সুনজরে তাকিয়ে ছিল। একই সাথে আমাদের আনন্দ করা দেখে গ্রামের সাধারণ মানুষেরাও আনন্দ করেছিল। রমজান মাস উপলক্ষে এবং আগামী ৩০শে এপ্রিল এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কারণে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অংশগ্রহণ করানো সম্ভব হয়নি। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা থাকলে হয়তো নতুন বছরকে গ্রহণ করার আনন্দটা আরো অনেক গুণ বৃদ্ধি পেত। তবে আমরা যখন মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন গ্রামের অনেক ছোট ছোট বাচ্চারা আমাদের মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছিল। যাহোক, মঙ্গল শোভাযাত্রা করার মধ্য দিয়েই পহেলা বৈশাখ উদযাপনে আমার অংশগ্রহণ করা সম্পূর্ণ হয়।

আমাদের বাঙ্গালীদের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য সত্যিই খুবই সমৃদ্ধ। যখন মঙ্গল শোভাযাত্রায় এক একটি পা ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম তখন আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির কথাগুলো আমার খুবই মনে পড়ছিল। একজন বাঙালি হিসেবে আমার মনের মধ্যে অগাধ গর্ব অনুভব হতে লাগলো, একই সাথে মঙ্গল শোভাযাত্রা আনন্দে আমার মনটা খুবই প্রফুল্ল হয়ে উঠল। আমি মনে মনে বলতে লাগলাম একজন বাঙালি হয়ে এবং বাংলাদেশে জন্ম গ্রহণ করে আমি সত্যি সত্যিই ধন্য হয়ে গেছি। আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে আমরা যদি সঠিকভাবে লালন পালন করতে পারি তাহলে আমরা সংস্কৃতির দিক থেকে আরও বেশি উন্নতি করতে পারবো। একই সাথে আমরা বাঙালি জাতি, একটি শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হবো। তাই আমাদের সকলের উচিত পহেলা বৈশাখের দিনের মতো বছরের প্রতিটি দিন আমাদের সংস্কৃতিকে, আমাদের ঐতিহ্যকে চর্চা করা এবং সকলের নিকট আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে উপস্থাপন করা।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আমি একজন বাঙালি হিসেবে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে পেরে খুবই আনন্দিত হয়েছি এবং নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমি চাই আমাদের বাঙালি সমাজের প্রতিটি মানুষ যেন আমাদের বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে। একই সাথে আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সকলের নিকট উপস্থাপন করার জন্য আমরা যেন নিজ নিজ অবস্থান থেকে বিশেষভাবে উদ্যোগী হই। তাই আসুন আমরা বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই এবং স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়। একই সাথে আমাদের দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য আমরা সকলেই সর্বাত্মক চেষ্টা করি। ধন্যবাদ সবাইকে।
১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ । |

Twitter link
আপনারও তো দেখছি নতুন বছরটাকে দারুন ভাবে বরণ করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। শুক্রবার থাকার কারণে স্কুল বন্ধ ছিল আমাদের যার কারণে আমরা এই উদ্যোগটি গ্রহণ করতে পারিনি।