একজন আদর্শবান ডাক্তারের গুণাবলী কেমন হওয়া জরুরি(প্রথম পর্ব)||

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

||আজ-৩০ই,বৈশাখ||১৪৩০বঙ্গাব্দ,গ্ৰীষ্মকাল||


❤️আসসালামুআলাইকুম/আদাব❤️

আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও আছি আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে।আশা করছি আমার আজকের ব্লগটি আপনাদের ভালো লাগবে।

doctor-1228627_1920.jpg

সোর্স

আজকে আমি যে বিষয় নিয়ে লিখতে যাচ্ছি,সেটা নিশ্চয় এতক্ষণে টাইটেল দেখে বুঝতে পেরে গিয়েছেন বন্ধুরা।আমাদের সমাজের গুরুত্তপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন একজন ডাক্তার।সৃষ্টিকর্তার পরে তিনি একমাত্র ব্যক্তি,যিনি একটি জীবন বাঁচাতে গুরুত্তপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।অন্যান্য পেশার মানুষের থেকে ডাক্তারি পেশা সম্পূর্ণ আলাদা একটি পেশা।এই পেশায় সম্মান যেমনি বেশি,ঠিক তেমনি দায়িত্ব ও বেশি।পরিশ্রমের কথা বলতে গেলে তুলনামূলক ভাবে বেশিই বলা যায়।কারণ ডাক্তার তাদের রোগীদের জন্য সর্বদায় নিজেকে প্রস্তুত রাখেন।এসকল গুণাবলী যেসকল ডাক্তারের মধ্যে থাকে,তাদের আমরা আদর্শ ডাক্তার বলে জানি।

আজকে আমি আমার দেখা একজন আদর্শবান ডাক্তার সম্পর্কে লিখতে যাচ্ছি।আমি যেহেতু ফরিদপুরে থাকি,এটা বেশ বড় শহর।নিকটবর্তী অন্যান্য জেলার লোকেরা এই শহরে আসেন চিকিৎসা নিতে। এখানকার চিকিৎসার মান অনেকটাই উন্নত।ঢাকা যাওয়ার পূর্বে রোগীদের শেষ চিকিৎসা এই শহর থেকেই করে থাকেন নিকটবর্তী জেলাধীন লোকেরা। আজকে আমি আমার দেখা একজন আদর্শবান ডাক্তার নিয়ে লিখতে চলেছি।এই শহরের মধ্যে তিনি বেশ ভালো মানের একজন ডাক্তার।আমার পরিচিত যেসকল রোগীরা,তার কাছে গিয়েছেন মোটামুটি সবাই আরোগ্য লাভ করেছেন। আমার এবং আমার পরিবারের সবার কানের সমস্যায় আমরা তার কাছে গিয়ে থাকি।তার ভিজিট ও একই আছে,বেশি হয়নি বর্তমান পরিস্থিতিতেও।সবথেকে ভালো একটি বিষয় এটা যে, তার কাছে টাকার থেকে রোগীর জীবনের গুরুত্ব বেশি।

২০১৩ এর দিকের কথা,তখন আমার বয়স ১৩ বছর। আমার কানে অনেকটা সমস্যা হয়।তারপর ঊষা রঞ্জন স্যারের চিকিৎসা নিই আমি।তিনি প্রথমে আমাকে মেডিসিন দেন এবং সপ্তাহ দুয়েক পর,আবার আমাকে যেতে বলেন।এভাবে করে প্রায় দুই মাস আমার চিকিৎসা চলে।কিন্তু আমি পুরোপুরি সুস্থ হই না।তারপর ডাক্তার আমাকে সার্জারির এর কথা বলেন।ছোট্ট একটি সার্জারি করলে নাকি আমার কানের ব্যথা ঠিক হয়ে যাবে।আমি এই সার্জারির কথা শুনেই অনেকটা ভয় পেয়ে যায়।কারণ এই বিষয়গুলো আমার অনেক ভয় লাগে।তখন সেই শ্রদ্ধেয় ডাক্তার বলেন,এই সার্জারি আমি আগে থেকেই করতে চাচ্ছিনা।আর ছয়মাস এর একটা টেস্টিং করে তারপর সিদ্ধান্ত নিব।তখন আমি অনেকটা খুশি হয়েছিলাম,যে ছয়মাসে ঠিক হবে তাইলে।তখন তিনি আমাকে অনেক গুলো এন্টিবায়োটিক ওষুধের নাম লিখে দেন পুরো ছয় মাসের কোর্স।সেই সময়ে প্রায় ৩৬ টাকার বেশি দাম ছিল এক একটি ওষুধ।এর মধ্যে একবার যেতে বলেছিলেন মাত্র।সেই অনুযায়ী ওষুধ খেয়ে আমি সুস্থ হয়ে যাই।পড়ে ডাক্তার নিজেই বলেন,আমার আর সার্জারির প্রয়োজন নেই।

কিছুদিন আগে আমি আপনাদের সাথে আমার আম্মুর কানের সমস্যার কথা বলেছিলাম।সামান্য সমস্যা ছিল,এটা বলেছিলেন অন্য ডাক্তার।তাদের ওষুধ সেবন করে খুব একটা উপকার পাওয়া যায়নি।এজন্য ফরিদপুরের ঊষা রঞ্জন স্যারের কাছে আম্মুকে নিয়ে গেলেন আব্বু।কানের রোগটি বেশ জটিল।কান দিয়ে পানি এবং সাদা তরল পদার্থের মতো অংশ দেখা যায় প্রায় প্রায়।ঊষা রঞ্জন স্যার আম্মুকে চিকিৎসা দেন এবং কিছুদিন পর যেতে বলেন।তিনি সার্জারির কথা প্রথমে দেখেই বলেন এবং কিছু ওষুধ লিখে দেন।এক মাস পর আম্মুর সমস্যা কিছুটা ইমপ্রুভ হয়।আবার যখন আম্মুকে নিয়ে যাওয়া হয়।তখন তিনি বলেন,এই মুহূর্তে তার যেহেতু বয়স বেশি ওষুধ দিয়েই রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।আর সার্জারি করলে আপনারা লাশ নিয়ে যাবেন,সুস্থ অবস্থায় আর নিতে পারবেন না তাকে বাড়ি।আমি এতো বড় রিস্ক নিব না কয়টা টাকার জন্য।রোগীর বয়স বেশি,সার্জারি করার সময় অজ্ঞান করলে আর জ্ঞান নাও ফিরতে পারে।আমরা প্রথম দিক থেকেই সার্জারির পক্ষে ছিলাম না।আব্বু শুধুমাত্র সার্জারি করতে চেয়েছিলেন,যাতে করে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয় আম্মু। আজকের লেখাটি এখানে শেষ করতে পারছিনা বন্ধুরা, বেশ বড় হয়ে যাচ্ছে লেখাটি।পরবর্তী পর্বে শেষ করবো ইনশাল্লাহ বাকি লেখা।পরবর্তী পর্বে আমার দেখা একজন অসৎ, লোভী ডাক্তারের চরিত্র আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। যার কাছে একজন রোগীর জীবনের থেকে টাকার গুরুত্ব বেশি।

ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।।আজকের মতো এখানেই শেষ করছি বন্ধুরা।আবার নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো। সেই পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।


Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

❤️আল্লাহ হাফেজ❤️

Sort:  
 2 years ago 

আপনার লেখাটি পড়লাম আপু। মনে হয় ঊষা রঞ্জন একজন ভালো ডাক্তার।আপনার লেখা পড়ে তাই ই মনে হলো।আপনি ভলো হয়ে গেলেন।আপনার বাবা আপনার আম্মুকে ওই ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন। কিন্তু এই বয়সে অপারেশন করবেন না। এটা তো ভালোই বলেছেন।এখন বেশীর ভাগ ডাক্তারের কাছে গেলে অপারেশন করার জন্য বলেন।যাক এরপর কি হবে সেটাই জনার বিষয়। ধন্যবাদ আপু পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

জি আপু।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটি পড়ে সাবলীল মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

একদম ঠিক বলছেন আপু কিছু কিছু ডাক্তার আছেন তারা হাত দিলে বুঝতে পারে রোগীর অবস্থা। আসলে সৃষ্টিকর্তার পরেই ডাক্তাররা হচ্ছেন মানুষকে সুস্থ করার একমাত্র ওসিলা বলা যায়। এমন কিছু কিছু ডাক্তার আছেন যারা রোগের অবস্থা অনেক বুঝতে পারেন ওষুধ দেওয়ার সাথে সাথে আরোগ্য লাভ করেন। আপনি ঠিক বলছেন একজন আদর্শবান ডাক্তার টাকার উপরে নির্ভর না করেই রোগীকে ভালো করে দেখেন। অনেক ডাক্তার আছেন যারা রোগী দেখার সাথে সাথে সার্জারি করার পরামর্শ দিয়ে দেন। তবে উনাদের কাছে রোগী মেইন প্যাক্ট না সার্জারি করে বড় টাকা নেওয়া হচ্ছে মেইন কাজ।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু লেখাটি মনোযোগ দিয়ে ধৈর্য্য সহকারে পড়ে এবং গঠনমূলক মন্তব্যের মাধ্যমে উৎসাহিত করার জন্য।

 2 years ago 

আপু বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভালো ডাক্তার পাওয়া বেশ জটিল। আর ভালো ডাক্তাররা কখন এই রোগীর খারাপ চায়না। এখনো অসাধু ডাক্তার রয়েছে যারা রোগীকে অপারেশন থিয়েটার নিয়ে যেতে পারলেই লাখ লাখ টাকার হিসেব কষে। যেটা হয়তো আপনার সেই আদর্শবান ডাক্তার করেননি। ভালো লাগলো আপনার আজকের পোস্টটি পড়ে।

 2 years ago 

জি আপু ।আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আসলে প্রতিটি ডাক্তারের উচিত অর্থের চেয়ে রোগীকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া। তবে দুঃখের সহিত বলতে হচ্ছে এমন ডাক্তার এখন খুব কমই আছে। এটা জেনে ভালো লাগলো যে, আপনি এমন একজন ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১৩ বছর বয়সে। আশা করি আপনার আম্মুও সুস্থ হয়ে যাবে। এমন গুণী এবং সৎ ডাক্তারের ব্যাপারে পড়ে খুব ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বে অসৎ এবং লোভী ডাক্তারের ব্যাপারে জানতে পারবো। সেই অপেক্ষায় রইলাম। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া আমার লেখাটি ধৈর্য্য সহকারে পড়ে এবং সাবলীল মন্তব্যের জন্য।