ভাতিজাকে নিয়ে চক্ষু হাসপাতালে একদিন
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
★আসসালামুয়ালাইকুম এবং হিন্দু ভাই ও বোনদের প্রতি আমার আদাব★। আমার বাংলা ব্লগের আপনারা সবাই কেমন আছেন, আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে এবং আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে ভাতিজাকে নিয়ে চক্ষু হাসপাতালে যাওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।তাহলে চলুন এবার শুরু করা যাক।
![]() |
---|
আমরা গেলাম রংপুরের এক বিখ্যাত চক্ষু হাসপাতালে। হাসপাতালে প্রবেশ করতেই বুঝলাম, চোখের সমস্যা যেন খুব সাধারণ একটি বিষয় হয়ে উঠেছে। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টোকেন নিতে হলো। খাইরুলের চোখে সানগ্লাস, যাতে আলোতে সমস্যা না হয়। তার কাঁধে আমি সান্ত্বনার হাত রাখলাম।টোকেন নাম্বার ১৫৩, ডাক এল দুপুর ১টার দিকে। আমরা ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকলাম। ডাক্তার অনেকটা বয়স্ক এবং অভিজ্ঞ মনে হলো। তিনি প্রথমে খাইরুলের চোখ পরীক্ষা করলেন—ভিস্যুয়াল অ্যাকুইটি টেস্ট, স্লিট ল্যাম্প এক্সামিনেশন, এরপর দিলেন আই ড্রপ—চোখ বড় করে মাপার জন্য। ড্রপ দেওয়ার পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বললেন।
প্রায় আধাঘণ্টা পর ডাক্তার আবার দেখলেন খাইরুলের চোখ। এবার তিনি বললেন, "এর রেটিনায় কিছু সমস্যা দেখা যাচ্ছে, আমরা আরও কিছু পরীক্ষা করব—ও ছি টি ও ফান্ডাস ফটোগ্রাফি করতে হবে।এই কথাটা শোনার পর আমাদের মনে একটু ভয় বাসা বাঁধল। খাইরুল চুপচাপ হয়ে গেল। আমি তাকে সাহস দিয়ে বললাম, "সব ঠিক হয়ে যাবে। ডাক্তাররা আছেন, ভয় নেই।সব পরীক্ষার পর জানা গেল, খাইরুলের ডান চোখের রেটিনায় মাইক্রো টিয়ার (ছোট ছিদ্র) হয়েছে। যদিও এটা বড় কিছু নয়, কিন্তু অবহেলা করলে ভবিষ্যতে রেটিনাল ডিটাচমেন্ট এর মতো জটিল সমস্যা হতে পারে। ডাক্তার বললেন, এখনই লেজার ট্রিটমেন্ট দিলে সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
সেদিনই খাইরুলকে লেজার ট্রিটমেন্ট করানো হলো। আধা ঘণ্টার মত সময় লেগেছিল। খাইরুল একটু নার্ভাস ছিল, কিন্তু ট্রিটমেন্ট ব্যাথা মুক্ত হওয়ায় সে ধীরে ধীরে স্বস্তি পেল। ট্রিটমেন্ট শেষে চোখে অস্থায়ী ব্যান্ডেজ দেওয়া হয় এবং কয়েকদিন বিশ্রামের পরামর্শ দেওয়া হয়।হাসপাতাল থেকে যখন ফিরছিলাম, তখন খাইরুল বলল, চাচা, চোখের যত্ন না নিলে জীবন অন্ধকার হয়ে যেতে পারে। আমি হেসে বললাম, ঠিক বলেছিস। এখন থেকে নিয়মিত চোখের যত্ন নিবি।এই একটা দিন আমাদের দুজনের জন্য ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ—চোখের সমস্যা যেমন বুঝলাম, তেমনি জীবন ও স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হওয়ার একটা নতুন অধ্যায়ও শুরু হলো।
খাইরুলের চক্ষু হাসপাতাল যাত্রার দিনটি আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে আরও অনেকভাবে। স্বাস্থ্য অবহেলা করা যে কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, সেটা আমরা অনুভব করেছি। প্রযুক্তির এই যুগে আমরা অনেকেই দীর্ঘ সময় স্ক্রিনে কাটাই—মোবাইল, ল্যাপটপ, টিভি। চোখের যত্ন নেওয়া জরুরি, নিয়মিত চেকআপ করা দরকার।আপনার কাছেও যদি এই ধরনের কোনো অভিজ্ঞতা থেকে থাকে, তাহলে দয়া করে অবহেলা করবেন না। চোখের আলো যেন অন্ধকারে রূপ না নেয়, সেই সচেতনতা আমাদের সবার থাকা উচিত।
আমার আজকের ব্লগটি আমি এখানেই শেষ করলাম।আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে আমার আজকের ব্লগটি । ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক,কমেন্ট করে আমাকে উৎসাহিত করবেন।আজ এই পর্যন্তই।আশা করছি যে আপনারা আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমেই আমার এই লেখাটি সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবেন এবং আপনাদের মতামত ব্যক্ত করবেন। আমি যদি কোনো কিছু ভুল বলে থাকি। তাহলে অবশ্যই আমাকে শুধরে দিতে ভুলবেন না।
আমার বাংলা ব্লগের ভাইয়া ও আপুদের সবাইকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী কোন ব্লগে।
আল্লাহ্ হাফেজ
Device | Motorola g34 5g |
---|---|
Camera | 52 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
X-promotion
Daily task:👇
Comment Link:👇
https://x.com/Moto5g638776/status/1926296644972126412?t=77QXufB5PGJgsfvKofgxBA&s=19
খুব সুন্দর এবং হৃদয়স্পর্শী এক অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন ভাই। চক্ষু হাসপাতালের প্রতিটি মুহূর্তের বর্ণনা এতটা জীবন্ত করে তুলেছেন যে মনে হলো, আমিও যেন সঙ্গে ছিলাম। খাইরুল ভাইয়ের জন্য দোয়া রইল ,আল্লাহ যেন তাকে দ্রুত সুস্থতা দান করেন। আপনার এই ব্লগটি শুধু একটা গল্প নয়, বরং আমাদের সবার জন্য চোখের যত্ন সম্পর্কে একটি মূল্যবান বার্তা। এ ধরনের সচেতনতা তৈরির জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।