চাঁদের আলোয় ভেজা রাতের গল্প ,ও চাঁদের বেশ কিছু এলোমেলো ফটোগ্ৰাফি।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে চাঁদের আলোয় ভেজা রাতের গল্প ,ও চাঁদের বেশ কিছু এলোমেলো ফটোগ্ৰাফি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

রাত যত গভীর হয়, ততই যেন আকাশ তার রহস্যময়তা উন্মোচন করে। বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা পেরিয়ে যখন রাত তার নিঃশব্দ আবরণে ঘরকে ঢেকে নিচ্ছিল। ঠিক তখনই হঠাৎ কারেন্ট চলে গেল। রুমের মধ্যে যেন আগুন জ্বলছিল, বাতাস ছিলো থমকে থাকা এক বোঝার মত । দেওয়াল থেকে যেন গরম ঢেউ ছড়াচ্ছিল।মুঠোফোনের আলোও তখন আশ্বাস দিতে পারছিল না। কিছুটা বিরক্তি, কিছুটা হাঁসফাঁস ভাব নিয়ে উঠে দাঁড়ালাম।বাইরে যাওয়ার তাগিদ যেন নিজের ভেতর থেকেই আসছিল।হঠাৎ কারেন্ট চলে যাওয়া যেন আমাদেরকে টেনে নিয়ে গেল প্রকৃতির কোলে। দরজা খুলতেই যেন এক আলাদা জগতে পা পড়ল। রাতের বাতাসটা ছিল ঠিক গানের মতো, ধীরে ধীরে মন ছুঁয়ে যাওয়া এক সুর।

বাইরের প্রাকৃতিক পরিবেশ যেন এক নিমিষেই সমস্ত অস্বস্তি ভুলিয়ে দিল। মাথার উপর আকাশজোড়া চাঁদ, মেঘেরা যেন তার আশেপাশে খেলা করে বেড়াচ্ছে। হালকা সাদা সাদা তুলার মতো মেঘ ।একবার চাঁদকে ঢেকে দিচ্ছে, আবার একপাশে সরে গিয়ে তার রূপ ছড়িয়ে দিচ্ছে। সে এক অপার্থিব সৌন্দর্য, যেন প্রকৃতি আপন মনে রং তুলিতে আঁকছে কোনো নিঃশব্দ চিত্রকল্প।

এই দৃশ্য দেখেই আর থাকতে পারলাম না। তাড়াতাড়ি করে ফোনটা হাতে তুলে নিয়ে ছাদে উঠে গেলাম। প্রতিটি কোণ থেকে একেক রকম রূপ নিচ্ছে আকাশ।চাঁদ গাছের পাতার ফাঁকে লুকোচুরি খেলছে, মেঘের ছায়ায় গায়ে সোনা রঙের ছাপ ফেলছে, আর আমি সেই রূপ তুলে রাখছি ক্যামেরায়, যতটা পারি। একের পর এক এলোমেলো কিছু ছবি তুলে ফেললাম, কিন্তু সেগুলো যেন এলোমেলো নয়।বরং মনের আবেগের প্রতিফলন, অনুভবের আলোকচিত্র।

শুধু আমি একা ছিলাম না। আমার ছোট ভাই, দাদী, চাচাতো ভাইবোনরাও তখন ছাদে এসে পড়েছে। সবাই মিলে সেই জোছনার আলোর নিচে দাঁড়িয়ে থাকাটা যেন ছোটখাটো উৎসবে রূপ নিল। কারো মুখে গল্প, কারো চোখে বিস্ময়, কেউ বা নিঃশব্দে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল। দাদীর চোখে যেন পুরোনো দিনের স্মৃতি খেলে গেল, ছোট ভাই উৎসাহ নিয়ে বলছিল, “দেখো! এই মেঘটা দেখতে কেমন ড্রাগনের মতো!” আমরা সবাই হেসে উঠলাম। এই মুহূর্তগুলো খুব সাধারণ হলেও, মনে হয় এগুলোই একদিন সবচেয়ে বেশি মিস করব।

শরীরের ঘাম ঠান্ডা বাতাসে শুকিয়ে যাচ্ছিল, আর চাঁদের আলো যেন গায়ে চিকচিক করে পড়ে এক অদ্ভুত প্রশান্তি এনে দিচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, জীবনের সব দুঃখ, উদ্বেগ যেন এই জোছনার আলোর নিচে গলে যাচ্ছে। প্রকৃতির সাথে এমন আত্মিক মিলন, যেন কিছু না বলেও অনেক কিছু বলা হয়ে গেল।

রাত গভীর হচ্ছিল। ধীরে ধীরে সবাই নেমে গেল, আমিও নামার আগে শেষবারের মতো একবার চাঁদের দিকে তাকালাম। মনে হলো, আকাশ আমাকে বিদায় জানাচ্ছে না বরং বলছে, “আবার এসো, আমি তো থাকি সবসময়।” এই নির্জন, স্নিগ্ধ মুহূর্ত গুলোই জীবনের আসল সৌন্দর্য।একটি বিদ্যুৎ বিভ্রাট আমাদের সবাইকে এনে দিল এক মুগ্ধতার রাত। চাঁদ, মেঘ, বাতাস আর প্রিয়জনদের সাথে কাটানো কিছু নিঃশব্দ মুহূর্ত ।এই ছোট ছোট ঘটনাই আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় স্মৃতি হয়ে রয়ে যায়।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।