গ্রামীণ প্রকৃতির সৌন্দর্য!
13-08-2025
২৯ শ্রাবণ , ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো সুস্থ্য থাকাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ! মাঝে মাঝে প্রকৃতির পরিবর্তনশীল রূপ আমাদেরকে সুস্থ্য থাকতে দেয় না! এরই পিছনে কারণটা আমাদেরই। প্রকৃতির পরিবর্তন মানুষেরই সৃষ্ট কাজের প্রভাব রয়েছে বেশি। সেটা গ্রাম থেকে শহরে বেশি। শহরে যান্ত্রিকতার আদলে প্রতিটা মানুষ যেন যান্ত্রিক নিয়মেই চলছে। এ যেন ডেইলি রুটিন! শহরের ব্যস্ত মানুষ সপ্তাহের একটি অন্তত হাফ ছেড়ে বাচঁতে চায় আবদ্ধ নগরী ছেড়ে। কিন্তু সেটা কি আর হয়! গ্রামের মতো কোলাহল কি আর কোথাও আছে! যেখানে প্রতিটা সকাল শুরু হয় নতুন সম্ভাবনা নিয়ে। গ্রামের কৃষক সকাল হতেই গোয়াল থেকে গরু নিয়ে বেরিয়ে পরে মেঠোপথ ধরে। খোলা আকাশের নিচে কিছুক্ষণ এর জন্য বিশ্রাম। অফুরন্ত অক্সিজেন! শহরের মানুষের মতো ডায়াবেটিস এ আক্রান্গ হয় না ; যথেষ্ট পরিশ্রমী হয় তারা।
গ্রামের মেঠোপথ ধরে আপনি যতদূর যাবেন ততই শুধু বিস্তৃত জমি দেখতে পাবেন। একদিকে খোলা আকাশ অন্য দিকে মৃদ্যু বাতাস আপনার গা বেয়ে চলে যাবে। বাতাসের শো শো শব্দে আপনি কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন। মনে মনে হয়তো বলবেন, গ্রামে আরও কয়েকটি দিন থেকে যেতে পারলে ভালো লাগতো। কিন্তু আমাদের জীবনটা প্রায় শহরকেন্দ্রিক। জীবিকার তাগিদে আমাদের থাকতে হয় শহরের দিকে। দু একদিনের জন্য গ্রামে আসার সুযোগ পেলে মনে হয় অন্যরকম এক শান্তির জগতে চলে এলাম! তবে সে শান্তিটা বেশিদিনের জন্য হয় না! গ্রামে খা খা দুপুরের নীরবতা আপনাকে ভাবাবে জীবনের নীরবতার কথা। জীবনে মাঝে মাঝে নীরব হয় ঠিক যেন গ্রামের খা খা দুপুরের মতো।
প্রায় অনেকদিন পর নানু বাড়ি গিয়েছিলাম। নানু বাড়িতে যায় শুধুমাত্র গ্রামের সৌন্দর্য টা উপভোগ করার জন্য। গ্রামে এখনও আধুনিকতার ছোয়া আসেনি। সেই কবে থেকে গ্রামের ভিতর দিয়ে চলা মেঠোপথটি এখন মাটিতে গড়াই আছে। এটা ইট পাথরে তৈরি রাস্তা হয়ে গেলে হয়তো আগের মতো অনুভূতি আসবে না! গ্রামের প্রতিটা মানুষের সম্পর্ক রয়েছে গ্রামের মেঠোপথ, বিস্তৃত জমির সাথে! রাস্তার পাশে বড় বড় তালগাছগুলি এখনও রয়ে গেছে। ছোটবেলায় যেমন দেখেছিলাম তেমনি। এবার যখন নানু বাড়ি গেলাম তখন দেখতে পেলাম গাছে তাল ধরেছে। আর গাছটাও আগের থেকে বেশ বড় হয়েছে। এ তালগাছগুলো যেন কয়েকটা দশকের সাক্ষী হতে চলেছে! এসবই গ্রামের আসল সৌন্দর্য। বিকাল হতেই গ্রামের মানুষজন ব্যাগ নিয়ে হাটে চলে আসে। কেউ পায়ে হেটেই দুই বা তিন মাইলের পথ পাড়ি দিয়ে বাজার করতে আসে। আবার কেউ সাইকেল চালিয়ে বাজারে চলে আসে!
চায়ের আড্ডায় কিছুক্ষণ জম্পেস আড্ডা হয়। সন্ধ্যার নামার সাথে বাজারে করে অনেকেই বাড়ি ফিরে। কেউবা সকাল জমিতে গরু কে দিয়ে গিয়েছিল সেটা সন্ধ্যর সময় নিতে আসে! গ্রামে আপনি কাউকে বসে থাকতে দেখবেন না! তারা কোনো না কোনো কাজ করছেই! হয়তো বাড়িতে কাজ করছে আর নয়তো জমিতে। গ্রামের চাচীরাও বেশ কর্মঠ হয়। কেউ কেউ সেলাই মেশিন দিয়ে কাজ করছে আবার কেউ তাঁতশিল্পের কাজ করছে! এ কাজগুলোই তাদের আয়ের অফুরন্ত উৎস। গ্রামে অভাববোধ আছে ব্যাপারটা এমন না, সেটা অবশ্যই আছে তবে সেটাও যেন নামে মাত্র। কি অল্প আয় রোজগারে তারা সংসার চালিয়ে যাচ্ছে।
যেখানে শহরে লাখ লাখ বেতনের চাকরি করেও সুখী নেই অনেকে, আর গ্রামের চিত্র টোটালি অন্যরকম।
গ্রামে প্রতিটা দিন যেন একেকটা স্বপ্নের মতো। কতোশত স্বপ্ন বুনা হয় সকাল থেকে সন্ধ্য অবধি! রাত দশটার আগেই সবাই ঘুমে। ভোর হতেই পাখির কিচিরমিচির শব্দে আপনার ঘুম ভাঙবে। ছোট ছোট ছেলেমেয়ে একসাথে যাবে মক্তবে আরবি শেখার জন্য। মক্তব থেকে এসে সোজা স্কুলে! এ গ্রামীণ জীবন আপনাকে উপভোগ করতে বাধ্য করবে। গ্রামের সৌন্দর্য তো এখানেই! শহরে থেকে গ্রামের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চায়না এমন মানুষ কম আছে! গ্রামের প্রকৃতির প্রেমে মানুষ বার বার পরে, আর আমিও পরি শতবার!
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz |
Location | Nandail, Mymensingh |
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বিএসসি করছি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয় (ডুয়েট) থেকে । পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত চার বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনি দেখছি গ্রামীণ সৌন্দর্যের চমৎকার ফটোগ্রাফি করেছেন। আসলে গ্রামের মেঠো পথ গুলো যতদূর যাওয়া হয় জমি এবং গাছপালা সবুজ দেখলে এমনিতে ভালো লাগে। আর যারা শহরে থাকে তারা গ্রামের পরিবেশ দেখলে তো মুগ্ধ হয়ে যায়। ধন্যবাদ গ্রামীণ সৌন্দর্যের চমৎকার ফটোগ্রাফিও সুন্দর বর্ণনা দিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য এর জন্য।