হারিয়ে যাওয়া এক ফল- ডেউয়া

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি এবং সুস্থ আছি। সময়ের সাথে সাথে গতিশীল জীবনে নিজের সুস্থতার সাথে মানসিকতাকেও ধরে রাখার চেষ্টা করছি। যদিও এটা এক কঠিন পরীক্ষা, পরীক্ষা মানে টিকে থাকার লড়াই। কারণ চাইলেই আমি আমার প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হতে পারবো না কিন্তু তবুও কি আমরা হতাশ হয়ে বসে আছি নাকি লড়াই হতে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছি? মোটেও না বরং আমরা যার যার অবস্থান হতে যার যার মতো করে লড়াইয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

সময়ের সাথে সাথে যেমন আমরা বদলে যাচ্ছি, আমাদের মানসিকতার সাথে সাথে কাজের ধরণও বদলে যাচ্ছে। ইদানিং এর সাথে আরো একটা বিষয় নিদারুণভাবে যুক্ত হয়েছে আর সেটা হলো আমাদের অতীত ঐতিহ্য নানা ধরণের ফলফলাদির । মানে একটা সময় আমাদের এই দেশে বা এই অঞ্চলে নানা ধরণের ফলফলাদিতে ভরপুর ছিলো এবং আমরা সবাই সেগুলোর দারুণ স্বাদের নিজেদের উজ্জীবিত রাখতে পারতাম। অঞ্চল ভেদে ফলফলাদির এই ভিন্নতা আমাদের মাঝেও দারুণ একটা আকর্ষণ তৈরী করতো, আমরা অঞ্চলভেদে সেই ফলগুলোর স্বাদও নেয়ার চেষ্টা করতাম।

IMG_20250524_113805.jpg

মাঝে মাঝে সেগুলো নিয়ে আমিও বেশ আফসোস করি, কি ছিলো আমাদের এই চারপাশে? আর এখন কি আছে কিংবা কি খাচ্ছি? সত্যি আমাদের শৈশবে হয়তো সবগুলো ছিলো না কিন্তু তবুও আমরা নানা ধরণের ফলের দারুণ স্বাদ নেয়ার সুযোগ পেয়েছি কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম? তারা কি সেগুলোর কিঞ্চিতও নিতে পারছে? আমার মতে একদমই না, যেমন আমার বাড়ির বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই অনেক ফলের নাম জানেন কিন্তু সেগুলোর চেহারা দেখার সুযোগ পায় নাই। তেমন একটা ফল, যেটা আমার ভীষণ প্রিয় ছিলো। তার নাম হলো ডেউয়া আর তার ইংরেজি নাম- Monkey Jack।

IMG_20250524_113819.jpg

নামটা একটু অদ্ভুত হলেও ফলটা কিন্তু দারুণ স্বাদের, কিছুটা টক-মিষ্টি জাতীয়। তবে অনেকটা কাঁঠালের কোষের মতো। যারা কাঁঠাল পছন্দ করেন তারা হয়তো এটাকে দেখে বলতে পারেন কাঁঠালের ছোট ভাই। অথবা আপনি মজা করে একটা দারুণ ডায়লগও বলতে পারেন, সেটা হলো ছোটবেলায় তাদের হরলিক্স খাওয়ানো হয়নি বিধায় তারা ডেউয়াই রয়ে গেছে না হলে হয়তো তারাও কাঁঠালে রূপান্তরিত হয়ে যেতো হি হি হি। যাইহোক, এগুলো শতভাগ আমাদের দেশীয় ফল, একটা শুকনা মরিচ ভাজা, সাথে একটু লবন দিয়ে ভর্তা বানিয়ে খেলে সেই স্বাদ পাওয়া যায়।

IMG_20250524_113757.jpg

সেদিন দেখে আমি কিছুটা অবাক হয়েছিলাম, তারপর হাফ কেজি ডেউয়া কিনে বাড়িতে চলে আসি সোজা। বাড়ির সবাইকে সেটাকে প্রথমে চিনিয়েছি তারপর কিভাবে সেটা খেতে হবে সেটাও শিখিয়েছি। এরপর সত্যি দারুণ স্বাদের সেই ভর্তা বানিয়ে দারুণভাবে উপভোগ করেছি। সময় সুযোগ মতো সেই ভর্তার দৃশ্যের সাথে দারুণ অনুভূতিও শেয়ার করার চেষ্টা করবো। এমন অনেক ফল ছিলো আমাদের এই অঞ্চলে, যা ধীরে ধীরে আড়ালে চলে যাচ্ছে আমাদের অপ্রত্যাশিত অবহেলার কারণে।

তারিখঃ মে ২৪, ২০২৫ইং।
লোকেশনঃ সাভার, ঢাকা।
ক্যামেরাঃ রেডমি-৯ স্মার্টফোন।

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 3 days ago 

আমাদের অঞ্চলে ও এই ফলকে ডেউয়া ফল বলেই চিনি।আমার খুব পছন্দের ফল এটা।এখন আসলে কম ই দেখা যায় এই ফলটি।এ বছর এখনো খাওয়া হয়নি।বাড়িতে আছি এখন এখানে পাওয়া যাবে আশাকরি।অনেক ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে। অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 3 days ago 

আমার খুব প্রিয় একটি ফল। আমাদের বাড়ির সামনে একজনের একটা বড় গাছ ছিলো। ছোটবেলায় পেড়ে পেড়ে খেতাম। নিজেরা উঠতে পারতাম না। অন্যদের উপর নির্ভরশীল থাকা লাগতো। খুব মজা ছিলো।

 3 days ago 

আপনার পোস্ট দেখে পুরনো দিনের কথা মনে পড়লো ভাই, এই বৃষ্টির মাঝেও জঙ্গলে যাইতাম ডেউয়া পারার জন্য, যাদের জঙ্গল তাদের দৌড়ানোর ভয় নিয়েই যাইতাম, দুজন গাছে উঠতাম আর একজন নিচে পাহাড়া দিতো কেউ আসে কিনা দেখার জন্য। নিচের জনের সামান্য ইশারায় আমরা গাছে নড়াচড়া বন্ধ করে দিতাম যাতে কেউ কিছু না বুঝে। আপনার পোস্ট দেখে অনেক কিছুই মনে পরছে। ধন্যবাদ ভাইয়া আমাদের সাথে ডেউয়া ফলের পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 3 days ago 

শহরের দিকে এই ডেউয়া ফলটা কম দেখা যায়। আমি শেষবার কবে খেয়েছি সেটা জানি না। গ্রামে গিয়ে খুজ নিলে পাওয়া যাবে। এই ফলটি আমার খুবই প্রিয়। আপনার পোস্টে ফলটি খুবই সুন্দর দেখা যাচ্ছে।

 yesterday 

ডেউয়া আমার খুব পছন্দের একটি ফল। ছোটবেলায় প্রচুর ডেউয়া খেতাম। আর ডেউয়া দিয়ে ঝাল ঝাল করে ভর্তা তৈরি করলে,খেতে খুবই ইয়াম্মি লাগে। কিন্তু ডেউয়া এখন খুবই কম দেখা যায়। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।