রুদ্ধ শ্বাস দুইদিন
জীবনে এমন কিছু কিছু ঘটনা ঘটে,যা সিনেমা কেও হার মানায়।এমনই একটি ঘটনা শেয়ার করব আপনাদের সাথে। আমার একজন মামাতো বোন আছে। ও ছোট থেকেই মানসিক প্রতিবন্ধী সেই সাথে কথাও বলতে পারত না। নাম দীপা। এতদিন চলাফেরা করেছে কোন সমস্যা হয়নি। এলাকার সবাই পরিচিত তাই কোথাও গিয়ে দিক হারিয়ে ফেললেও লোকজন বাড়িতে দিয়ে যেত।
তবে কাল একটু ব্যতিক্রম ঘটে। ও গিয়েছিল ওর মামার বাড়িতে। ওর মামার বাড়ি পাশের গ্রামেই। ওখানে গিয়ে শোনে ওর দীদা মোকামতলা বেড়াতে গেছে।এই শুনে ও বাড়ির দিকে রওনা দেয়।ওর মামি খানিকটা এগিয়ে দেয়। ও ছোট থেকেই একা একাই যাওয়া আসা করে। তবে সেদিন মনে হয় রাস্তায় ওর মন পরিবর্তন হয়,ও বাড়ি আসার পরিবর্তে মোকামতলার দিকে রওনা দেয়।
রাস্তায় এক ভ্যানওয়ালা ভাবে বাড়ি হয়ত মোকামতলা তাই সে ভ্যানে তুলে নিয়ে মোকামতলা গিয়ে নামিয়ে দেয়।এখন মোকামতলা গিয়ে ও দিক হারিয়ে ফেলে। আর ভয় পেয়ে যায়। লোকজন বুঝতে পারে হারিয়ে গেছে। তখন জিজ্ঞেস করলে সে বগুড়ার দিকে ইশারা করে।তখন লোকজন বগুড়ার বাসে তুলে দেয়।
এদিকে বিকেলেও ফিরে না আসায় ওর বাড়ি থেকে মামার বাড়িতে ফোন করে। তখন দীপার মামি জানায় ও তখনই ফিরে গেছে। তখন শুরু হয় খোজ। প্রথমে আশে পাশের গ্রামে খোজা শুরু হয়। তারপর না পেয়ে শুরু করা হয় মাইকিং।আমি আবার সবাইকে ফেসবুকে ছবি সহ পোস্ট করতে বললাম।তারপর মাইকিং শুনে সেই অটোওয়ালা এগিয়ে এসে বলে যে সে মোকামতলা নামিয়ে দিয়ে এসেছে।
এবার মোকামতলা খোজ শুরু হয়। এদিকে আমি মোকামতলার ফেসবুক গ্রুপ গুলোতে পোস্ট করতে থাকি।পরিচিত যারা আছে,তাদের কেও খুজতে বলি।এর মাঝে মামারা জিডি করেছে।মোকামতলা মাইকিং এর পর জানা গেল লোকজন বগুড়ার বাসে তুলে দিয়েছে। তৎক্ষণাৎ মামারা আবার বগুড়া রওনা হয়। বগুড়ার বাসের ঠিকানা একটাই।বগুড়া কেন্দ্রীয় টার্মিনাল।
সেখানে থাকা লোকজন কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানায়, যে তারা দেখেছে।এক রুটির দোকানদার রুটি খাইয়েছে। এরপর সে গাইবান্ধার বাসে চড়ে।বাসওয়ালা ও প্রতিবন্ধী ভেবে কিছু বলে নি বা নামিয়ে দেয়নি বাস থেকে। এখন বগুড়া থেকে গাইবান্ধার যাত্রা শুরু।
OR
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
আসলেই জীবন এ মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা সিনেমার কাহিনী কেও যেন হার মানায়! সোশ্যাল মিডিয়ায় তোমার পোস্ট দেখেছিলাম। এখন যতটুকু বুঝলাম তোমার বোনটিকে অবশেষে সুস্থভাবেই পাওয়া গিয়েছে। অনেকটা নিশ্চিন্ত এবং অনেক ভালো লাগলো দেখে। আর পরের টুকু জানার অপেক্ষায় থাকলাম।
যাদের একটু মানসিকভাবে সমস্যা আছে তাদের এইসব ঝামেলায় পড়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। প্রথমে বাসে করে চলে গেল বগুড়া। এবং তারপর গাইবান্ধা। না জানি পরের পর্বে কী হয়। অপেক্ষায় থাকলাম ভাই।
প্রতিবন্ধি মানুষ,কোথায় থেকে কোথায় যাচ্ছে সে নিজেও বুঝতে পারছে না। আর ভ্যানওলা বা বাস হেলপারদেকেও দুষ দেওয়া যায় না। এখন কিভাবে পেলো সেটা না জানা পর্যন্ত মনটা ছটফট করবে। তারাতারি দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
সত্যি রুদ্ধ শ্বাস কর পরিস্থিতিতে ছিলে।মামাতো বোন দিপা বাক ও শারীরক প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে সে তো সব কিছু সহজে বুঝতে পারে না।দিদা গেছে মোকামতলা হয়তো সেও ওই উদ্দেশ্যে বের হয়েছে যে দিদার কাছে যাবে। যাই হোক অনেক ঝুকি ঝামেলার পর সৃষ্টি কর্তার অশেষ কৃপায় দিপাকে তোমাদের মাঝে ফিরে পেয়েছো এটাই অনেক বড়ো পাওয়া। পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত জানার অপেক্ষায় রইলাম।
আসলে ভাই, এখানে কারো দোষ দেওয়া যায় না। কারণ সবাই হয়তো চেয়েছে মানুষটাকে সাহায্য করার জন্য এবং তার গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। কিন্তু বারবার তাকে না বুঝে ভুল জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার গ্রামের একটি লোক, সেও এভাবে হারিয়ে গেছিল। কিন্তু তাকে আর কোনদিন খুঁজে পাওয়া যায়নি। আসলে এরপর যদি তাকে বাইরে ছাড়া হয়, তাহলে অবশ্যই তার কাছে যেন ঠিকানা দিয়ে দেওয়া হয়। তাহলে হয়তো এরকম বিভিন্ন জায়গায় তাকে দৌড়ে বেড়াতে হবে না।