জীবনের প্রথম চায়ের স্বাদ গ্রহণ করার স্মৃতি
Copyright Free Image Source : Pixabay
চা । ক্যাফেইনযুক্ত এক গরম পানীয় যা নিমেষে দেহ মনকে চাঙ্গা করে তোলে । বলা বাহুল্য আমি মোটেও চায়ের ভক্ত নই । তবে, ছোটবেলায় আমার কাছে চা একটি রহস্যে ঘেরা পানীয় মনে হতো । আমাদের ছোটবেলায়, চা একদমই নিষিদ্ধ একটি পানীয় ছিল ছোটদের কাছে । হরলিক্স আর জুস ছাড়া আর কোনো পানীয় খাওয়া আমাদের কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ছিল ।
অথচ, আমার ছেলেবেলায় এই পানীয়ের ওপর আমার এক অমোঘ আকর্ষণ ছিল । আমাদের বাড়ি ছিল যৌথ পরিবার । বাবারা ছিল পাঁচ ভাই । বারো মাসে তেরো পার্বণ তো ছিলই, এর উপর টুকটাক নানা ধরণের ছোট বড় অনুষ্ঠান বাড়িতে লেগেই থাকতো । বারোটি মাসের একটি মাসও ফাঁক যেতো না ।
আর অনুষ্ঠান হলেই গাঁয়ের বিশিষ্ঠ মাতব্বর শ্রেণীর মানুষের আনাগোনা আর অনেক ধরণের মজলিশ, বৈঠক বা মিটিং এসব হতো । এইসব গ্রাম্য মজলিসে চা, পান আর সিগারেটের অফুরন্ত যোগান রাখতেই হতো । আমাদের বাড়িতে বিড়ি সিগারেট সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ছিল । তাই, গ্রামের মাতব্বর শ্রেণীর লোকেরাও আমাদের বাড়িতে আয়োজিত যে কোনো মজলিশে বিড়ি সিগারেট পারতপক্ষে খেতেন না ।
খুব বেশি বিড়ি সিগ্রেটের তেষ্টা পেলে বাড়ির বাইরে গিয়ে খেয়ে আসতেন । মজলিশে বিড়ি সিগারেটের এই অভাবটি পুষিয়ে দেওয়া হতো উৎকৃষ্ট চায়ের যোগানের মাধ্যমে । আর তখনি আমার মাথা ঘুরে যেত । বিরাট একটা ট্রে করে কাপের পর কাপ চায়ের যোগান যেত মজলিশে ।
চায়ের টিন খোলা থেকে স্টোভ ধরানো সব কিছুরই সাক্ষী থাকতাম আমরা ছোটরা । আমাদের জুল জুল দৃষ্টির সামনে চায়ের পাতা জ্বাল দেওয়া হতো স্টোভ জ্বেলে । এরপরে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে টি পট ভর্তি করা হতো । বিশাল একটা ডেকচিতে থাকতো সর ওয়ালা বাড়িতে বানানো ঘন দুধ ।
আর একটি বড় কাঁচের বয়াম ভর্তি থাকতো চিনি । দুধ, চিনি আর চা যখন একসাথে মেশানো হতো চামচ দিয়ে নেড়ে তখন ভারী মিষ্টি একটা টুং টাং শব্দ হতো । অবাক বিস্ময়ে আমরা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখতাম সেই রাজসূয় যজ্ঞ । খুব বেশি ঠোঁট চাটতে থাকলে আমাদের এক কাপ ভর্তি চিনি মেশানো গরম দুধ দেওয়া হতো । আমরা চা খাচ্ছি এই কল্পনা করে খেয়ে ফেলতাম সেই চিনি মেশানো গরম দুধ চুক চুক করে ।
তো, একদিন সুযোগ এসে গেলো অভাবনীয় ভাবে । বাড়িতে সামনে বিয়ে । আমার এক কাকার । সেই উপলক্ষে প্রতিদিনই সন্ধ্যায় মিটিং চলছে গাঁয়ের মুরুব্বিদের সাথে । জেনারেটর চলছে সন্ধাবেলায় । সারা বাড়ি আলোয় আলো । চায়ের ট্রে ভর্তি যাচ্ছে, পরক্ষণেই খালি ট্রে ফিরছে । আবার নতুন করে চা বানানো চলছে ।
তো, এমনি সময়ে আমার ছোটকাকার ধুতি জড়িয়ে গেলো জেনারেটর এর ঘুরন্ত বড় চাকার সাথে । বিশাল এক্সিডেন্ট । সবাই ছুটলো সেদিকে । দ্রুত জেনারেটর বন্ধ করে দেওয়া হলো । হ্যাজাক নিয়ে সবাই ছুটে গেলো অকুস্থলে । না, বড় ধরণের বিপদ এড়ানো গিয়েছে । কারেন্ট শক খাননি ছোটকাকা । কোথাও পুড়ে টুড়েও যায়নি । শুধু বিস্তর কেটে ছিঁড়ে গিয়েছে হাত পায়ের এখানে সেখানে ।
এই সুবর্ণ সুযোগ আমার জন্য । দূরের হ্যাজাকের আবছায়া আলোয় দ্রুত কম্পিত বক্ষে চায়ের টিনের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দিলাম । এক মুঠো চা পাতি বের করে এনে দিলাম টেনে দৌড় । বাড়ির সীমানার বাইরে গিয়ে মুখে দিলাম সেগুলো । ও মা !! সে কী বিতিকিচ্ছিরি স্বাদ !! শুনেছি নাকি চা ভালো খেতে । কাঁচা চা পাতি গিলে আমার সারা জীবনের জন্য চায়ের নেশা ছুটে গেলো । আর জীবনেও বড় না হওয়া অব্দি ওধার মাড়াইনি ।
পরিশিষ্ট
প্রতিদিন ৩০০ ট্রন করে জমানো এক সপ্তাহ ধরে - ২য় দিন (300 TRX daily for 7 consecutive days :: DAY 02)

সময়সীমা : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ পর্যন্ত
তারিখ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২
টাস্ক ৫৮ : ৩০০ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron
আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx
৩০০ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :
TX ID : ecb6d224b0fd04ad61403966768de25294cd0185eb139391d27d9cb12641ca87
টাস্ক ৫৮ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি
Account QR Code
দাদা আপনি পারেনও বটে হাহাহাহ হিহিহি৷খুব মজা লাগলো দাদা ৷আপনি কাচা চা পাতি মুখে দিয়েছেন ৷কাচা চা পাতি তো তিতা ৷
আর আসল কথা দাদা আমাদের সনাতন ধর্মীয় হিন্দু মানুষেরা যে কোনো অনুষ্ঠান হলে চা আর পান বিড়ি এসব আছেই ৷শুধু অনুষ্ঠানে নয় তারা অথিতি এলেও নান ধরনের জলপান দিয়ে আপ্যায়ন ৷ আরেকটা বিষয় খুবই ভালো হ্যাজাকের কথা ৷আমার ঠাকুর দাদা মুখে শুনেছিলাম আগে যে কোনো বিয়ে অনুষ্ঠান বিয়ে বাড়িতে হ্যাজাকের বাতি জ্বালিয়ে ছিল ৷
খুব ভালো লাগলো দাদা আপনার লেখা পোষ্টটি ৷
Hello friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
Hi @rme,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.
Come and visit Italy Community
হাহাহা দাদা বেশ মজা পেলাম আপনার জীবনের প্রথম চা খাওয়ার কথা শোনে। স্বাভাবিক বাচ্চারা তো মনে করতেই পারে যে চা যেহেতু মজার হয় সেহুতু চাপাতিও তো অনেক মজা হওয়ার কথা । তবে আমি চা খায় না চা আমার খুব একটা পছন্দ না। কিন্তু আপনার ছোট কাকার অ্যাক্সিডেন্টের কথা শুনে খুব খারাপ লাগলো তখন কিন্তু খুব বড় ধরনের অ্যাক্সিডেন্টে হতে পারতো। কিছুদিন আগে আমার এক ছোট ভাই জেনারেটর তারের সঙ্গে পেচিয়ে মারা গিয়েছে।
হা হা হা দাদা অনেক মজা পাইছি পড়ে।জেনারেটর বন্ধ হয়ে যাওয়ার সুবাদে খাইতে পারলেন চা!😂😂তাও আবার চা পাতা!!🐶🐶চা আসলেই বচ্চাদের জন্য ক্ষতিকর সেটা ঠিক কিন্তু এখকার বাচ্চারা নিষেধ মানে না।আগের দিনকাল অনেক ভাল ছিল রে দাদা😥😥😥।
দাদা আমিও আপনার মতই চায়ের ভক্ত নই। চা খেতে আমার কাছে কেন জানি গন্ধ লাগে। তবে ছোটবেলায় কাঁচা চা পাতি খাওয়ার অভিজ্ঞতা জেনে সত্যি ভিন্ন অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলাম। সত্যি দাদা ছোটবেলায় আমরা কত কিছুই না কল্পনা করতাম। যেগুলো আমাদের খাওয়া নিষেধ থাকত সেগুলোর প্রতি লোভ বেশি লাগতো। দাদা আপনি চায়ের ভিন্ন স্বাদ গ্রহণ করতে পেরেছেন। ছোটবেলার এই মজার স্মৃতি আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।
এইটা কি করলেন দাদা? আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম যে আপনি হয়তো এই অন্ধকারের মধ্যে সেই কাঙ্ক্ষিত চা খেয়েছেন ।কিন্তু শেষে কিনা চা পাতা চুরি করে পালালেন। এক কাপ চা নিয়ে পালালে তা না হয় মানা যেত তাই বলে চা পাতা?
যাই হোক বেশ মজা পেলাম ঘটনাটি পড়ে হাসিও পাচ্ছে খুব।
দাদা আপনার প্রথম চা খাওয়ার অভিজ্ঞতা পড়ে বেশ মজা পেলাম।আমার আবার পছন্দ চায়ে ভিজিয়ে পরটা খাওয়া । চট্টগ্রামের একটা জনপ্রিয় খাবার।
দাদা আপনার জীবনের প্রথম চা খাওয়ার অভিজ্ঞতা এর থেকে আর ভালো হতে পারে না।
নিষিদ্ধ জিনিসের পর একটু আকৃষ্ট তো থাকবেই তাই বলে কি কাঁচা চায়ের পাতি চিবিয়ে খেয়ে চায়ের নেশা মেটানো একমাত্র মোশারফ করিমের চা খোর নাটকেই দেখেছি। নাটকে অনেক কিছুই হয় কিন্তু আপনার বাস্তব জীবনে চা খাওয়ার অভিজ্ঞতা শুনে আমার কাছে বেশ মজাই লেগেছে।