অনেকদিন পর স্মৃতি জড়ানো হোস্টেলে যাওয়ার অনুভূতি।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

হ্যালো..!!

আমার প্রিয় বন্ধুরা,

আমি @purnima14 বাংলাদেশী,

আজ- ১০ মার্চ,সোমবার , ২০২৫ খ্রিঃ

কভার ফটো


1000031015.jpg

কয়েকটি ছবি একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।



আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমি নিজেও ভালো আছি। আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে হাসি খুশি রাখার। আমি "আমার বাংলা ব্লগের" মাধ্যমে আপনাদের সামনে আমার ক্রিয়েটিভিটি তুলে ধরবো।আজ আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি পোস্ট শেয়ার করতে চলেছি।আমাদের জীবনে অনেক সুন্দর সময় আসে। অনেক সুন্দর মুহূর্ত আসে। এক সময় মুহূর্তগুলো চলে যায় কিন্তু প্রত্যেকটি মুহূর্ত স্মৃতির পাতায় থেকে যায়। আজ আমি আপনাদের সাথে স্মৃতিময় কিছু মুহূর্ত শেয়ার করবো।স্টুডেন্ট লাইফে হোস্টেল বা মেসে থাকেনি এরকম মানুষ কম। সেখানে কাটানো আমাদের প্রত্যেকের দারুণ দারুণ স্মৃতি আছে। আমি প্রথমে হোস্টেলে থাকতাম তারপর মেসে এসেছি। অনেকদিন পর সেদিন হোস্টেলে গিয়ে বেশ ভালো লাগছিল। মনে পড়ছিল সেখানে কাটানো দারুণ কিছু মুহূর্ত। আজ আমি আপনাদের সাথে অনেকদিন পর হোস্টেলে যাওয়ার অনুভূতি শেয়ার করবো। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।



1000031016.jpg

আমি যখন প্রথম কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হই তখন প্রথম তিন মাস আমি হোস্টেলে থেকে ছিলাম। শুধুমাত্র খালার রান্নার অসুবিধা আর কোচিং করতে অসুবিধা হতো সেজন্য আমি হোস্টেল ছেড়ে দিয়েছি। হোস্টেল লাইফটা প্রত্যেকের জীবনে অন্যতম সুন্দর স্মৃতিময়। সেদিন হোস্টেলে গিয়ে খুব ইচ্ছে করছিল আবার ফিরে যায় সেখানে। অনেকবার চেয়েছি ও ফিরে যেতে কিন্তু নানান সমস্যার কারণে হোস্টেলে ওঠা হয়ে ওঠেনা।
1000031017.jpg
সেদিন প্রথম পিরিয়ডে আমাদের ক্লাস ছিলো।তারপর আমাদের ক্লাসের ছেলেরা ক্রিকেট খেলার জন্য তিন পিরিয়ডের ছুটি নিয়েছিলো।চতুর্থ পিরিয়ডে ছিলো আমাদের গুরুত্বপূর্ণ একটা ক্লাস। সেজন্য সেটা করতেই হত। ছেলেরা তো মাঠে খেলবে আমরা কি করবো?আমার দুইটা বান্ধবী এখনো হোস্টেলে থাকে। তারপর ওই দুই বান্ধবী আমাকে বলল চল কেয়া হোস্টেলে যায়। আমিও রাজি হয়ে গেলাম। হোস্টেলে অবশ্য বাইরের মেয়ে অর্থাৎ যারা হোস্টেলে থাকে না তাদের যাওয়ার অনুমতি নেই। তারপরেও আমি গেলাম। যেহেতু এছাড়া কিছু করার নেই তাই।
1000031018.jpg
হোস্টেলের দিকে যত এগোচ্ছিলাম ততই মনে পড়ছিল পুরনো স্মৃতিগুলো। হোস্টেলের সাথে আমার সম্পর্কটা বেশি দিলে না মাত্র তিন মাস কি সাড়ে তিন মাস। এ সময়টা আমি হোস্টেলে ছিলাম। এতোটুকু সময় ও অনেক স্মৃতি জমে গিয়েছিলো।হোস্টেলে যখন ছিলাম তখন রমজান মাস তাই অনেক মজা করতাম। সবাই মিলে একসাথে খাওয়া দাওয়া করত আমাকেও তাদের সাথে ডেকে নিত সবাই মিলে বেশ মজাই হতো। আরো বিভিন্ন অনুষ্ঠান লেগে থাকতো।
1000031019.jpg
এর মত নেই। আমি যখন হোস্টেলে ছিলাম তখন হোস্টেলের কালার টা খুব পুরনো হয়ে গিয়েছিল। এখন হোস্টেলের সবকিছুই নতুন। পুরো বিল্ডিং টাই নতুন করে রং করা হয়েছে। আমি যখন হোস্টেলে থাকতাম কত যে ঝামেলা। একদিন তো শর্ট সার্কিট হয়ে আমার রুমমেটের মশারির এক অংশ পুড়ে গিয়েছিল। এখন হোস্টেল এসব কিছু উন্নত মানের করা হয়েছে। হোস্টেলে গিয়ে মনে হচ্ছিল মেসির ওই ছোট ঘর আর হোস্টেলে কত বড় রুম। খুব ইচ্ছে করছিল আবার হোস্টেলে ফিরে আসি।
1000031020.jpg
হোস্টেলের মেইন গেটের উপরে তো বেশ বড় অক্ষরে হোস্টেলের নাম লেখা আছে। হোস্টেলের ভিতরে ঢুকতেই বিল্ডিং-এ প্রবেশ করতেই ছোট অক্ষরে লেখা হোস্টেলের নাম এবং বিস্তারিত। ঢুকতেই মনে পড়ল আরেক স্মৃতি। প্রায় প্রতিটি সন্ধাতে আপুরা আমাদের এই গেটের সামনে ডাকতেন। কার কি ভুল আছে সেগুলো ধরিয়ে দিতেন শাসন করতেন। আবার কোন ইম্পর্টেন্ট নিউজ হলে এই গেটের সামনে এসেই আমাদেরকে জানান দিতেন। খুব তাড়াহুড়ায় থাকার কারণে ডাইনিং রুমটাতে আর যাওয়া হয়নি। ডাইনিং রুমটা ছিল আরো বেশি স্মৃতিময়। সবাই মিলে একসাথে খাওয়া দাওয়া, অনুষ্ঠান আরো অনেক কিছু করেছি সেখানে।
1000031021.jpg
আমি থাকতাম রুম নাম্বার ১০৬ এ।তার পাশে আমার সেই বান্ধবী থাকতো ১০৫ নাম্বার রুমে।আমার বান্ধবী এখনো ওই রুমটাতেই থাকে। আমি প্রথমেই বান্ধবী রুমে না গিয়ে আমার স্মৃতি ঘেরা রুমটাতে যায়।রুমের গেটের ওপরে বড় বড় অক্ষরে আমাদের প্রত্যেকটি রুম মেটের নাম লেখা ছিল। হোস্টেলের সবকিছু নতুন করে রং করেছে সে যেন সব ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এই রুমটাই কত স্মৃতি আমার।
1000031022.jpg
আগে রুমে পর্যাপ্ত আলো ছিল না। এখন রুমের প্রত্যেকটি জিনিসের মধ্যে কত নতুনত্ব। আগে আমরা জুনিয়র ছিলাম জন্য হোস্টেলে আপুদের কাছে কত বকা খেয়েছি। কারণে অকারণে আপুদের অনেক বকা খেয়েছি। তবে আপনাদেরকে খুব মিস করি। আপুদের কে বলেছিলাম তাদের সাথে কথা বলবো কিন্তু এখন কে কোথায় আছে আমি কছুই জানিনা। আমার বড় আপু আমাকে বেশ ভালোবাসতেন। সে আমাদেরকে সব সময় আলাদাভাবে সুযোগ দিতেন। আপু ছিলো হোস্টেলের মোস্ট সিনিয়র। তার রুমমেট হওয়ার কারণে সব সময় বেশি সুবিধে পেতাম। রুমটাতে প্রবেশ করেই বড্ড বেশি মিস করছিলাম রুমটাকে। একসময় এই রুমটা আমার কতইনা আপন ছিল। চারজনে মেঝেতে বসে খাওয়া দাওয়া করতাম। সেগুলো খুব মনে পড়ছিলো।
1000031023.jpg

তারপরে হোস্টেলের বারান্দা টার দিকে তাকিয়ে অনেক কিছুই ভাবছিলাম। আমরা যেহেতু জুনিয়র ছিলাম রুমের মধ্যে গিয়ে আমাদের গল্প করা বারণ ছিল। আমরা যে কয়জন বান্ধবী ছিলাম সবাই মিলে এই বারান্দাতে বসে গল্প করতাম। অবশ্য গল্প করার সুযোগটা আমাদের খুবই কম হতো। খুবই স্মৃতি বিজড়িত জায়গাটা। সেদিন তোমাকে ফোন করে বলেছি আমি কি আবার হোস্টেলে উঠবো? হোস্টেলে উঠলে কোচিং করাটা একটু সমস্যা হয়ে যাবে আর খালার রান্না সেটা এখনো ঠিক হয়নি। সবকিছু মিলিয়ে আর হোস্টেলে উঠতে পারছি না। তবে যে কয়টা দিন কাটিয়েছি হোস্টেলে কখনোই ভুলবো না।
সেদিন বড্ড বেশি মনে পড়ছিলো।

আজ এই পর্যন্তই।



ছবির বিবরণ

ডিভাইস: গুগল পিক্সেল ৭ প্রো
ক্যামেরা: ৫০ মেগাপিক্সেল
তারিখ: ০৩ মার্চ ২০২৫খ্রিঃ
লোকেশন:কুষ্টিয়া



প্রিয় বন্ধুরা,আমার আজকের ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে সবসময় পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন।



আমি কে !

Screenshot_20231102_205038_Facebook-01.jpeg

আমি পূর্ণিমা বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @purnima14। আমি আমার মাতা-পিতা এবং নিজের মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে ভালবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, কবিতা লিখতে ও আবৃত্তি করতে, গান শুনতে, যেকোনো ধরনের রেসিপি তৈরি করতে ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@purnima14



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Sort:  
 2 months ago 
1000031037.png1000031039.png1000031038.png
 2 months ago 

বাহ! তিনমাসে দেখছি আপনার হোস্টেল লাইফটা তাহলে অনেক ইন্টারেস্টিং ছিল। আমার হোস্টেলে থাকার অভিজ্ঞতা হয়নি। তবে মেসে থেকেছি শুরু থেকেই। ইচ্ছে ছিল হোস্টেলে থাকার কিন্তু ভিতরের পরিবেশ মোটেও ভালো ছিল না। আপনাদের পলিটেকনিক এর হোস্টেল এখন আগের থেকেও চমৎকার হয়েছে।

 2 months ago 

হোস্টেল বা মেসে কাটানোর সময় গুলো সব সময় দুর্দান্ত হয়। আগে যখন হোস্টেলে থাকতাম তখন মেসের থেকে বেশি মজা হতো।হোস্টেলে সেই টাইমটাকে বড্ড মিস করি। চমৎকার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো ভাইয়া।

 2 months ago 

ছেলেদের হোস্টেলে তো বাইরের ছেলেরা যেতে পারে তো মেয়েদের হোস্টেলে কেন বাইরের মেয়েরা যেতে পারবে না! এটা আবার অজানা ছিল আজকে জানলাম। যাইহোক মাত্র তিন মাস হোস্টেলের থেকে বেশ ভালই অর্জন করেছিলে। আমিও যখন পলিটেকনিকে পড়তাম ইচ্ছা ছিল হোস্টেলে থাকার কিন্তু স্বাধীনতা কমতি ছিল সেজন্য থাকিনি। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 months ago 

মেয়েদের হোস্টেলে অনেক ধরনের সমস্যা হয় সেজন্য বাইরের মানুষের যাওয়ার পারমিশন নেই। তিন মাসে হচ্ছে লাইপ আমার কাছে বেশ ভালো ছিলো।সুন্দর মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো।

 2 months ago 

হোস্টেলের সেই দিনগুলো যেন এক টুকরো স্মৃতি, যেখানে হাসি, কান্না, আড্ডা, আর বকা সবই ছিল। বড় আপুর ভালোবাসা, জুনিয়রদের নিষেধাজ্ঞা, আর বারান্দার স্নিগ্ধ বাতাসে বন্ধুর সাথে গল্প এসব যেন একটা আলাদা পৃথিবী ছিল। এখন মনে পড়ে, হোস্টেলের প্রতিটা কোণ, প্রতিটা মুহূর্ত অমূল্য। সত্যিই, সে সময়গুলো কখনো ভুলবো না। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।

 2 months ago 

ঠিক বলেছেন আপু, ফেলে আসা হোস্টেলের সেই দিনগুলো এক টুকরো স্মৃতি হয়ে জীবনে থেকে যাবে। সবাই মিলে কাটানো মুহূর্তগুলো এখন খুব মনে পড়ে। এ সময় গুলো কেউ কখনোই ভুলতে পারে না। চমৎকার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো আপু।