🎨 আর্ট পোস্ট // মেহেদির ডিজাইন আমার নিজ হাতে আঁকা এক শিল্পকর্ম ।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে মেহেদির রঙে আমার ভালোবাসা, ধৈর্য আর কল্পনার প্রকাশ শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

মেহেদি শুধু একটি রঙ নয়, এটি এক ধরনের আবেগ, সংস্কৃতি এবং নিজেকে সুন্দরভাবে প্রকাশের একটি শিল্প। বিশেষ করে বাঙালি মেয়েদের কাছে মেহেদি যেন আনন্দ, উৎসব আর সৌন্দর্যের প্রতীক। আমি নিজে বহুদিন ধরে মেহেদি আঁকার প্রতি গভীর আগ্রহ ও ভালোবাসা পোষণ করি। আজকের এই ব্লগে আমি ধাপে ধাপে তুলে ধরবো কীভাবে আমি একটি সম্পূর্ণ হাতজোড়া মেহেদি ডিজাইন তৈরি করেছি ।একেবারে সাদামাটা থেকে শুরু করে রাজকীয় কারুকাজ পর্যন্ত।প্রথমেই আমি আমার হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে নিই যাতে ত্বকে কোনো ধুলাবালি বা তেল না থাকে। এরপর আমি প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, যেমন মেহেদির কোণ, টিস্যু, এবং হালকা আলো নিশ্চিত করি। তারপর আমি কল্পনায় একটি কাঠামো তৈরি করি । আজকের ডিজাইন হবে ফুল, বেল্ট এবং লতাপাতার মিশ্রণে। চলুন এবার ডিজাইন দেখে নেই।

ধাপ ১:

---

প্রথমে কব্জির কাছ থেকে শুরু করি একটি সোজা রেখা দিয়ে। এরপর সেখানে আঁকি একাধিক পরপর রেখা ও জিওমেট্রিক প্যাটার্ন, যা বেল্টের মতো দেখায়। মাঝে মাঝে কিছু ফ্লোরাল টাচ দিয়ে নিই, যাতে সরল রেখার মাঝে নরম রূপ আসে।

ধাপ ২:

---

এরপর ধাপে ধাপে বড় বড় ফুল আঁকি বেল্টের উপরে ও নিচে। এই ফুলগুলোর পাপড়িগুলো সূক্ষ্মভাবে ঘুরিয়ে আঁকা হয়, যেন তারা ফুটন্ত ফুলের মতো দেখায়। ফুলের মাঝে ছোট ডট আর পেঁচানো রেখা যুক্ত করি ভারসাম্য বজায় রাখতে।

ধাপ ৩:

এরপর এই ধাপে ধাপে ফাঁকা ফাঁকা করে ফুল গুলো তালুতে আঁকতে শুরু করি লতাপাতার ঘন ডিজাইনে। বিভিন্ন ফুল, পাতা, এবং কারুকাজে ভরপুর এই অংশে সময় লাগে বেশি, কারণ প্রতিটি রেখা নিখুঁতভাবে আঁকার প্রয়োজন হয়। আমি অনেকসময় সেন্ট্রাল একটি বড় ফুল রেখে তার চারপাশে লতা পেঁচিয়ে দিই।

ধাপ ৪:

---

হাতের আঙুলগুলোতে আমি করি সূক্ষ্ম বেল্ট এবং ঘূর্ণায়মান প্যাটার্ন। প্রতিটি আঙুলের ডিজাইন একে অপরের থেকে একটু ভিন্ন রাখি যাতে পুরো ডিজাইন একঘেয়ে না হয়। ডট, আর্ক ও লাইন সবকিছুই এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ধাপ ৫:

---

ডিজাইন শেষ হলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি যাতে মেহেদি ভালোভাবে শুকায়। এরপর আমি ২০ ৩০ মিনিট পর শুকানো মেহেদি তুলে ফেললে ফুটে ওঠে গাঢ় লালচে রঙ, যেটা দেখে মন ভরে যায়।

মেহেদি আমাদের ঐতিহ্যের একটি জীবন্ত রূপ, যা যুগের পর যুগ ধরে মেয়েদের সৌন্দর্যচর্চার অংশ হয়ে আছে। এই ডিজাইনটি আমার নিজের হাতে তৈরি এবং এটি কেবল একটি রঙিন আলপনা নয় । এটি আমার শিল্প, আমার ধৈর্য এবং ভালোবাসার প্রকাশ। আশা করি আমার এই ধাপে ধাপে বিশ্লেষণ আপনাদের কাজে আসবে, উৎসাহ জোগাবে, এবং হয়তো আপনিও একদিন নিজে নিজের হাতে মেহেদির ফুল ফোটাবেন।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।