দীর্ঘ দিন পর গিয়েছিলাম আমাদের হাঁড়িভাঙ্গা আম বাগান পরিদর্শনে
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
মঙ্গলবার, ২২ ই এপ্রিল ২০২৫ ইং
হাঁড়িভাঙ্গা আম সম্পর্কে হয়তো আপনারা ইতিমধ্যে প্রত্যেকেই অবগত আছেন। হাঁড়িভাঙ্গা আম আমাদের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার একটি বিখ্যাত আম।হাঁড়িভাঙ্গা আম এই নামটাতে একরকম মিষ্টি সুর আছে। যেন নামেই লুকিয়ে আছে তার স্বাদ, তার ঘ্রাণ, আর তার গ্রীষ্মকালীন রাজকীয় উপস্থিতি। ছোটবেলায় প্রথম শুনেছিলাম এই নামটা, তখন বুঝিনি এর মাহাত্ম্য কতটা। পরবর্তীতে প্রথমবার যখন হাঁড়িভাঙ্গা আম খেয়েছিলাম, তখন জিভ যেন থেমে গিয়েছিল কিছুক্ষণ, বিস্ময়ে। এতটা মিষ্টি, এতটা রসাল, অথচ এমন মোলায়েম গঠন—এই আমে ছিল এক অন্যরকম চমক।
এই আমের সঙ্গে যে বন্ধন গড়ে উঠেছে, সেটা শুধুই স্বাদের কারণে নয়। এর গন্ধ, রঙ আর খোসার নিচে লুকিয়ে থাকা রসের প্রতিটা ফোঁটায় যেন শৈশব, গ্রামবাংলা আর গ্রীষ্মের দুপুর লুকিয়ে থাকে। হাঁড়িভাঙ্গা শুধু একটা ফল নয়, এটা একটা অনুভব। এটা সেই আম, যেটা হাতে পেয়ে কেউ এক কামড় খেয়ে থেমে যেতে চায় না, আবার ধীরে ধীরে খেয়ে শেষ করতে চায় যেন স্বাদটা দীর্ঘদিন মুখে লেগে থাকে।বাজারে অনেক রকমের আম পাওয়া যায়, কিন্তু হাঁড়িভাঙ্গার স্বতন্ত্রতা বোঝা যায় তার গন্ধেই। দূর থেকেই চেনা যায় এই জাতের আম। যারা ইতোমধ্যে হাঁড়িভাঙ্গা আম খেয়েছিলেন তারা হয়তো প্রত্যেকেই এই বিষয়ে অবগত আছেন।
দীর্ঘ দিন পর গিয়েছিলাম আমাদের হাঁড়িভাঙ্গা আমের বাগানে। শহরের কোলাহল আর ব্যস্ততার মধ্যে সেই পরিচিত গ্রামীণ ছোঁয়া যেন এক ধরণের স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে। বাগানে পা রেখেই মনটা অন্যরকম হয়ে গেল। চারদিকে কচি পাতা আর ছোট ছোট আমের গুটি দেখে বোঝা গেল, প্রকৃতি তার আপন নিয়মেই এগিয়ে চলছে। হাঁড়িভাঙ্গা জাতের এই আমগুলো বছরের পর বছর ধরে আমাদের পরিবারের ভালোবাসা। প্রতিটা গাছের সাথে জড়িয়ে আছে অনেক স্মৃতি কারো হাতে লাগানো চারা, কারো যত্নে বেড়ে ওঠা ডাল-পালা, আবার কোনো গাছের নীচেই বসে খাওয়া হয়েছে বিকেলের জলখাবার।
বাগানের মাঝে দাঁড়িয়ে বাতাসে ভেসে আসা সেই কাঁচা আমের গন্ধ যেন শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে গেল। মনে পড়ল, ছোটবেলায় কেমন করে গাছে উঠে আম পাড়ার প্রতিযোগিতা চলত ভাই-বোনদের মাঝে। এখন গাছে চড়ার সাধ থাকলেও, সাহস আর শরীর একমত হয় না আর।এই একফাঁকে উপলব্ধি হলো—জীবন যতই ব্যস্ত হয়ে উঠুক, শিকড়ে ফিরে যাওয়ার টান কখনো কমে না। হাঁড়িভাঙ্গা আমের বাগান শুধু একটা জায়গা নয়, এটা একটা আবেগ, একটা ফিরে পাওয়া। সময় সুযোগ করে আবারও ফিরব, যতবার পারা যায়।
এই আমের জনপ্রিয়তা এখন শুধু উত্তরবঙ্গে নয়, ছড়িয়ে পড়েছে সারা বাংলাদেশে। অনেকে বিদেশেও পাঠাচ্ছে, যেন দেশের বাইরে থেকেও কেউ গ্রীষ্মের এই প্রিয় স্বাদটা মিস না করে। তবু, নিজের হাতে পেড়ে খাওয়ার আনন্দ, গাছের নীচে বসে একবারে গোটা একটা হাঁড়িভাঙ্গা শেষ করার সুখ, তার তুলনা হয় না কিছুতেই। যখন আমের সিজন শুরু হয়ে যায়, তখন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আম কেনাকাটা করার জন্য আমাদের মিঠাপুকুর চলে আসেন। আবার অনেকেই রিসেলার হিসেবে অনলাইনে আমের ব্যবসা করে থাকেন।সব কিছু মিলিয়ে আমের সিজনে আমাদের এলাকার মধ্যে একটি উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Device | iPhone 11 |
---|---|
Camera | 11+11 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
Daily task
Link
https://x.com/Riyadx2P/status/1914684994183946434?t=i1_wDbnKtqpNJs47zaepMA&s=19
https://x.com/Riyadx2P/status/1914684170401669138?t=i1_wDbnKtqpNJs47zaepMA&s=19
https://x.com/Riyadx2P/status/1914684517761343847?t=i1_wDbnKtqpNJs47zaepMA&s=19
https://x.com/Riyadx2P/status/1914684856329756724?t=i1_wDbnKtqpNJs47zaepMA&s=19
Screenshot
বাগান দেখে খুব ভালো লাগল! গাছগুলো কী সুন্দরভাবে বেড়ে উঠেছে, আর আমগুলোর রং তো দেখতে মনোমুগ্ধকর।বাগানটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেখাচ্ছে।দীর্ঘদিন পর বাগানে গিয়ে নিশ্চয়ই অনেক স্মৃতি মনে পড়েছে।এমন বাগান স্থানীয় কৃষি ও পরিবেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে আজকের পোস্টটি শেয়ার করেছেন এজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
হাড়িভাঙ্গা আমের নাম অনেক শুনেছি এবং এগুলো আমাদের এলাকায় আসে। আমরা এগুলো কিনে খেয়ে থাকি৷ তবে কখনো এরকম বাগানে যাওয়ার সুযোগ হয়নি৷ আজকে আপনার কাছ থেকে এরকম একটি সুন্দর পোস্ট দেখে খুব ভালো লাগছে । যেভাবে আপনি এখানে এই হাড়িভাঙ্গা আমের বাগানে গিয়েছেন এবং এখানে খুব সুন্দরভাবে সময় অতিবাহিত করেছেন তা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন তা পড়ে খুবই ভালো লাগছে৷ আপনি খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফিও শেয়ার করেছেন৷ অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে৷