কাঁচা আমের মজাদার জ্বাল টক ভর্তা রেসিপি।।
আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ
হ্যালো আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি, আলহামদুলিল্লাহ। আবার গরমের তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। সবাই একটু সতর্ক থাকবেন। আজকে আপনাদের সাথে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকের ব্লগের বিষয় হলো কাঁচা আমের মজাদার টক জ্বাল মিষ্টি ভর্তা রেসিপি। আমের ভর্তার নাম শুনেই জিহ্বে জল চলে আসলো তাই না,হা হা হা। বাসায় বানিয়ে খেয়ে ফেলুন। আমি যেটা বানিয়েছিলাম সেটা খেয়ে শেষ করে ফেলেছি। আপনাদের দেখানোর আগেই পেটে চালান হয়ে গেছে। নজর লাগাতে পারবেন না,হা হা হা। চলুন এবার নিচের দিকে যায়।
আমার সব থেকে পছন্দের ফল গুলোর মধ্যে একটি হলো আম। আমের মৌসুম আসলে আমি প্রচুর পরিমানে আম খায়। আমাদের নিজেদের ছোট একটি আম গাছ আছে। তবে সেই গাছের আম খাওয়ার মত ভাগ্য আমার সব সময় হয় না। যদি মা যত্ন করে সংরক্ষন করে রাখে তাহলে খেতে পারি। আর গাছটি ছোট হওয়ার কারনে আম আসে কম। তাই সব মৌসুমে খেতে পারি না। যে কয়টা আম আসে তার ৫০% পড়ে যায় ঝড়-বাতাসে আর ২৫% বড় হওয়ার সাথে সাথেই প্রতিবেশিরা খায় আর ২৫% আমাদের ভাগ্যে থাকে। সর্বউচ্চ ৫০ থেকে ৬০টা আম আমরা ভাগে পায়।
কিছুদিন আগে বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় মোখার কিছুটা প্রভাব পড়েছিল। যার ফলে আম গাছ থেকে প্রচুর পরিমানে আম জড়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড় মোখা চলে যাওয়ার সাথে সাথেই বাজারে প্রচুর পরিমানে কাঁচা আমের উপস্থিতি দেখা গেল। মাত্র ২০ টাকা কেজি ধরে কাঁচা আম গুলো বিক্রয় করেছে। এখনও মাঝে মাঝে রাস্তায় ভ্যান গাড়িতে কাঁচা আম বিক্রয় করতে দেখা যায়। কাঁচা আম গুলো দেখে মনে মনে চিন্তা করলাম আমের মৌসুমে আমের ভর্তা না খেলে কেমন লাগে। ব্যবসায়ী এত কষ্ট করে কাঁচা আম গুলো সংগ্রহ করে নিয়ে এসেছে। তাদের তো আমাদের উপর একটা হক আছে, তাই না। সব সময় শুধু সবজিই খাবো...মাঝে মাঝে আমও কিনে খেতে হয়। তাই এক কেজি কাঁচা আম নিয়ে আসলাম ভর্তা খাওয়ার জন্য। ভর্তাটা করেছি বেশি কয়েকদিন আগে। আজকে শেয়ার করলাম। ভর্তাটা স্বাদের দিক দিয়ে একশতে একশো হয়েছে। তাই যেদিন বানিয়েছিলাম সেদিনই পাচঁ মিনিটের মধ্যে ফিনিশ করে দিয়েছি। একটু জ্বাল হয়েছিলে। ভর্তা যদি জ্বাল না হয় তাহলে খেয়ে মজা পাওয়া যায় না। যায়হোক চলুন মূল কাজটা শুরু করি।
প্রয়োজনীয় উপকরন
- কাঁচা আম আটটি
- শুকনা লঙ্কা ছয়টি
- চিনি পরিমান মত
- বিট লবন পরিমান মত
- সরিষা বাটা
এবার স্টেপ বাই স্টেপ ভর্তা বানানোর প্রক্রিয়াটা দেখানো হলো।

প্রথম স্টেপ
প্রথমে কাঁচা আম সংগ্রহ করে সে গুলো ভাল করে ধুয়ে একটি প্লাষ্টিকের জালিতে রাখলাম। আম গুলো কিন্তুু বড় সাইজের। ছবিতে ছোট দেখাচ্ছে।
দ্বিতীয় স্টেপ
তারপর আম গুলোর চামড়া ছাড়িয়ে ধুয়ে একটি স্টিলের গামলাতে রাখলাম। এখন আবার যে কোন সবজির চামড়া ছাড়ানোর জন্য এক প্রকারের মেশিন বের হয়েছে। খুব তারাতারি চামড়া ছাড়ানো যায়।
তৃতীয় স্টেপ
এই পর্যায়ে আম গুলো কুচি কুচি কাটতে লাগলাম। এখানেও আধুনিকের ছোয়াঁ। দেখতে পাচ্ছেন একটি স্টিলের মেশিন। আমটা ধরে ঘষা দিলেই কুচি কুচি হয়ে যায়।
চতুর্থ স্টেপ
আম কুচি কুচি করে কাটার কাজ শেষ। দেখুন অল্প সময়ের মধ্যে আম কুচি করার কাজ শেষ করে ফেললাম। হাতের আঙ্গুলের কোন ক্ষতি হলো না দা দিয়ে কাটলে ক্ষতি হতো।
পঞ্চম স্টেপ
চুলাতে কড়াই বসিয়ে শুকনা লঙ্কা গুলো ভাজা ভাজা করে নিলাম। গ্রামে হলে রান্না করার ছাই দিয়ে শুকনা লঙ্ক গুলো পুড়িয়ে নিতাম।
ষষ্ট স্টেপ
এই পর্যায়ে কুচি কুচি করা আমের সাথে চিনি,বিট লবন,সরিষা বাটা দিয়ে দিলাম। সব কিছু ভাল করে মিক্স করে নিলাম। হয়ে গেল আমার মাজারদার টক জ্বাল মিষ্টি আমের ভর্তা। আহ কি ঘ্রান। নজর দিয়েন না। পরের বার বানালে দাওয়াত দিবো,হা হা হ।
পরিবেশন
বন্ধুরা কেমন হলো আমার আজকের রেসিপিটা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আমি জানি আপনারা সবাই কাঁচা আমের ভর্তা খুবই পছন্দ করেন। দুপুর বারোটার সময় এই ভর্তাটা খেয়েছিলাম। এত সুস্বাদু হয়েছে যে আরেকবার আম কিনে এনে ভর্তা বানানোর ইচ্ছা রয়েছে। আপনারাও একবার ট্রাই করে দেখবেন। আজকে এখান থেকেই বিদায় নিলাম। আবার দেখা হবে নতুন কিছু নিয়ে। সবাই ভাল থাকবেন। সুস্থা থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
রেসিপির নাম | কাঁচা আমের মজাদার জ্বাল টক ভর্তা রেসিপি।। |
স্থান | নিজের বাসা |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
ভাই আপনার আম মাখা রেসিপিটি দেখেই তো মুখে পানি চলে আসছে । আসলে আম মাখা খেতে সবারই মনে হয় ভীষণ ভালো লাগে । তবে কখনো এভাবে শুকনা মরিচ দিয়ে আম মাখা খাওয়া হয়নি । সবসময় কাঁচা মরিচ দিয়ে খেয়েছি । ওটাই আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। তারপরও আপনার রেসিপিটি দেখে বেশ ভালো লাগছে । ধন্যবাদ আপনাকে ।
আপু কাচাঁ মরিচ দিয়ে আমরাও ছোট সময় খেয়েছি। আবার ভর্তা করেও খেয়েছি। ধন্যবাদ আপু।
কাঁচা আমের ভর্তা তো দারুন ভাবে তৈরি করেছেন টক ঝাল করে কাজটা কিন্তু ভালো করলেন না আপনি এত রাতে আমের ভর্তা রেসিপি শেয়ার করে। আবার শেয়ার করছেন কিন্তু সব গুলো খেয়ে ফেলার পরে শেয়ার করলেন হা হা হা। ঠিক বলছেন ঝড় তুফানের কারণে কাঁচা আম ঝরে যাওয়াই একটু দাম কমে যায়। তাই সবার ভাগ্য কাঁচা আম খাওয়ার ভাগ্যে জুটে। বেশ ভালো করছেন কাঁচা আম কিনে এনে ভর্তা করছেন।
আপু ভর্তা তো করেছিলাম দিনের বেলা কিন্তুু পোষ্ট করতে করতে দেরি হয়ে গেছে। ধন্যবাদ আপু।
আম ভর্তা খেতে আমার অনেক ভালো লাগে। আপনার রেসিপিটি দেখতে অনেক লোভনীয় হয়েছে। রেসিপিটি দেখে জিভে জল চলে আসলো। এত সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।
জী আপু আম ভর্তার পোষ্ট সত্যিই লোভনীয়। ধন্যবাদ আপু।
কাঁচা আম মাখা খুব মজা হয় খেতে।এই গরমে টক যেকোনো খাবার খুবই সুস্বাদু হয়।আপনার রেসিপি দেখে জিভে জল চলে এলো। মজার স্বাদের আম মাখানো রেসিপি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
জী আপু গরমের সময় টক খেতে অনেক ভাল লাগে। ধন্যবাদ আপু।
কাঁচা আমের এই ভর্তা খেতে খুবই ভালো লাগে। এই সিজনে সবাই একসাথে বসে ঝাল কাঁচা আমের ভর্তা খেতে অনেক সুস্বাদু লাগে। আপনার এই পোস্ট দেখে আমার ছোটবেলার কথা পড়ে গেল আমরা ছোট বেলায় ভাই বোনেরা মিলে এভাবে ভর্তা বানিয়ে একসাথে বসে খেতাম। তখন খাওয়ার মজাই আলাদা ছিল। আপনার ভর্তা রেসিপির ধাপগুলো খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। ধন্যবাদ।
জী আপু সবাই মিলে এক সাথে বসে আমের ভর্তা খাওয়ার মজাই আলাদা। ধন্যবাদ আপু।
এই সিজনে আমিও অনেক আম ভর্তা খেয়েছি ভাইয়া। আম ভর্তা রেসিপি দেখে জিভে জল চলে এলো। টক ঝাল এই রেসিপি খেতে অসম্ভব ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে আম ভর্তা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জী আপু এখনতো আমের সিজন। এই সিজনে আমের ভর্তা না খেলে আফসোস থেকে যাবে। ধন্যবাদ আপু।
কাঁচা আমের ভর্তা দেখে জিভে পানি আসবে না সেটা তো হতে পারে না। সত্যি বলতে কাঁচা আমের ভর্তা দেখে আমার তো জিভে পানি চলে এলো ভাই। এই রেসিপিটা এই সিজনে অনেকবার খেয়েছি। গরমের সময় এমন ভর্তা খেতে দারুণ লাগে। যাইহোক রেসিপিটা দেখে খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাইয়া আপনাদের তো মনে হয় আমের গাছ আছে না কি..?