গ্যাসের সংকটে রাইসকুকারের কেরামতি।
পরম করুনাময় অসীম দয়াল মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করিতেছি।
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় অনেক ভাল আছি, সুস্থ আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি নতুন ব্লগ নিয়ে আজ রয়েছি। আমার আজকে ব্লক টি হল গ্যাসের সংকট নিয়ে।ঢাকা শহরে যারা বসবাস করেন, তাদের প্রায়ই একটা সমস্যায় ভুগতে হয়। আর সেটি হচ্ছে গ্যাসের সংকট। আর এই বিষয় নিয়ে আপনাদের মাঝে ব্লগ লিখতে চলেছি। চলুন আমার আজকের ব্লগের সম্পূর্ণ মনের ভাব প্রকাশ করি।
এখন পবিত্র মাহে রমজানে মাস যাচ্ছে। সবাই সারাদিন রোজা রেখে বিকালের দিকে ইফতারি তৈরি করেন । তেমনি আমিও প্রতিদিনের মতো সকল কাজ সেড়ে রান্নার জন্য যখন গ্যাস অন করলাম। তখন দেখি গ্যাস নেই। রমজান মাসেও যে গ্যাস চলে যাবে তা ভাবি নি। আমরা যারা শহরের বাসিন্দা তাদের একটা সমস্যায় কিছুদিন পরপর ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আর সেটি হচ্ছে এই লাইনের গ্যাস। লাইনের গ্যাস গুলো কিছুদিন পর পর সমস্যা করে। আমার বাবার বাড়িতেও লাইনের গ্যাস আছে। তবে শহরের মতো ঘন ঘন এভাবে গ্যাস চলে যায় না। আমি আবার সিলিন্ডার গ্যাসে রান্না করতে ভয় পায়। কেননা সিলিন্ডার গ্যাস যেকোনো সময় ব্লাস্ট হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া সিলিন্ডারের গ্যাস গুলো ঝুঁকিপূর্ণ। সে জন্য আমি সিলিন্ডারের গ্যাস ব্যবহার করি না।
আজ বিকেল বেলায় ইফতারি বানানোর জন্য গ্যাসের চুলা অন করতেই দেখি আগুন জলসা না। তখন বোঝার আর বাকি রইল না যে গ্যাস অফ রয়েছে। তৎক্ষণাৎ আমার হাজব্যান্ড নিজে আমাকে ফোন দিয়ে বলেছে গ্যাস আছে কিনা। তিনার অফিসেও নাকি গ্যাস চলে গেছে। তখন আমি কি করবো ভাবছি। ভাবতে ভাবতে হঠাৎ রাইস কুকারের কথা মনে পড়ে গেল। তাই আর দেরি না করে রাইস কুকার তেল গরম করে বেগুনি, বরা, ও বুট বাজি করে নিলাম। তবে গ্যাসের চুলার মত রাইস কুকারে তেমন হিট নেই যার জন্য চার পাঁচটা বেগুনি ভাজতেই অনেক সময় লেগে গেছে। তখন আমার অনেকটাই খারাপ লেগেছে। যে সারাদিন যদি গ্যাস নাও থাকতো তাহলে কোন প্রবলেম ছিল না। তবে বিকাল বেলায় গ্যাস নেওয়া টা উচিত হয়নি। কেননা প্রত্যেকটা মুসলিম ভাই বোনেরাই রোজা রেখেছে। তারা সারাদিন না খেয়ে সন্ধ্যা বেলায় ইফতারি করবে। ঠিক বিকালে গ্যাস চলে যাওয়াটা খুবই খারাপ একটা দিক।
আমরা দুইজন মানুষ তাই অল্প অল্প করে সবকিছুই রাইস কুকারে ভেজে নিয়েছি। আমার একটি মেয়ে আছে আপনারা সবাই জানেন। তার এক বছর পূর্ণ হয়েছে কিছুদিন আগে। তার জন্য রাইস কুকারটি একটু উঁচু জায়গায় বসিয়েছি। তাছাড়া তেলেভাজা জিনিসগুলো সাবধানতার সাথে করতে হয়।আর আমার মেয়েটা একটু চঞ্চল টাইপের। সে কুকারে বারবার হাত দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তাই টিটেবিলের উপরে আরেকটি জলচৌকি দিয়ে তাতে রাইসকুকার বসিয়েছি। হঠাৎ মনে হল আজকের এই ঘটনাটা আপনাদের মাঝে শেয়ার করি তাই এক দুইটা ফটোগ্রাফি ক্যাপচার করে শেয়ার করেছি।
আমার না হয় রাইসকুকার আছে। তাই সাময়িক সময়ের জন্য গ্যাসের সংকটে রান্না করতে পেরেছি। তবে যাদের সিলিন্ডার গ্যাস বা রাইসকুকার নেই। তারা হয়তো দোকান থেকে কিনে ইফতার করেছে। তবে আমি মনে করি, গ্যাসের সংকটে রাইসকুকারের কেরামতি কিন্তু ফলপ্রসূ। বড়া বেগুনি, বুট ভাজি কিন্তু খুবই সুন্দর করে বাজা হয়েছে। তবে সময়টা একটু বেশি লেগেছে। যায় হোক,রাইস কুকারটি কিন্তু বিপদের বন্ধুর মত কাজে লেগেছে। হঠাৎ করে গ্যাস চলে যাওয়াটা কিন্তু একটি বিপদ। বাসায় শুধু আমি একা থাকি আমার মেয়েকে নিয়ে। আমার হাজব্যান্ড অফিসে। তিনি সারাদিন রোজা রেখে বাসায় এসে, যদি দেখতো কিছু তৈরি হয়নি। তাহলে তিনার কেমন লাগতো। তাছাড়া তিনি বাহিরের দোকানের ভাজাপোড়া জিনিস খান না। বাড়িতে তৈরি করলে সেগুলো খেতে পছন্দ করেন। তাই আমি চাইনি দোকান থেকে কোন কিছু কিনে আনা হোক। প্রত্যেকটা জিনিস সময় নিয়ে ঘরে তৈরি করার চেষ্টা করি। এভাবেই গ্যাসের সংকট পার করে আজকের ইফতার করলাম।
বন্ধুরা আজ আর কথা বাড়াচ্ছি না। এখান থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে। আমাদের মত কারা কারা গ্যাসের সংকটে ভুগেন কমেন্টসের মাধ্যমে জানাবেন। আর সবাই সবার জন্য দোয়া করবেন। পবিত্র মাহে রমজানে সবাই যেন সঠিক আমল করে আল্লাহতালা কে খুশি করতে পারি। আল্লাহ হাফেজ।
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
![image.png](
রাইস কুকারে যে তেলে ভাজার মত রান্না গুলো করা যায় সে কথা আপু আমি আগে সত্যিই জানতাম না। আমারও রাইস কুকার রয়েছে সেখানে আমি ডাল করেছি ভাত করেছি যে কোন ভাপা রান্না করেছি। বিশেষ করে মম বা সেদ্ধ পুলি বাজে কোন ধরনের পাতুরি রান্না গুলো খুব ভালো হয়। তবে রোজার দিনগুলোতে বিকেল বেলায় গ্যাস না থাকাটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তবুও আপনি যে রাইস কুকার দিয়ে কাজ চালিয়ে নিয়েছেন এটাই শুনে আপনাকে বাহবা দেখছি। আপু বাড়িতে একটা টেম্পোরারি ছোট হিট আর রাখবেন বা ইন্ডাকশন ওভেন যেটা এরকম বিপদের দিনে আপনার কাজে আসবে।
জ্বী আপু ভাবছি একটি ছোট হিটার নিয়ে আসবো। তাহলে হয়তো বিপদের দিনে কাজে আসতে পারে। ধন্যবাদ আপু।
রমজান মাসে ইফতারের সময় বিদ্যুৎ চলে গেলে কিংবা গ্যাস চলে গেলে তো খুব বিরক্ত লাগার কথা। আমরা তো সিলিন্ডার ইউজ করি আমাদের কোন টেনশন থাকে না। আর রাইস কুকারে রান্না করতে গেলে বেশি ঝামেলা পোহাতে হয়। আপনার ব্লগটি পড়ে বেশ খারাপ লাগলো।
জি আপু একদম খুবই বিরক্ত লেগেছিল। সিলিন্ডার গ্যাস আছে তবে আমি লাইন সংযুক্ত করতে পারি না। যার জন্য রাইস কুকার ব্যবহার করেছি। ঘটনাটা সবারই খারাপ লাগবে আপু।
গ্যাসের সমস্যা অনেক এলাকায় ই লক্ষ্য করা যায়। সারাদিন না থাকলে ও সমস্যা হয়না।কিন্তু ইফতারের সময় গ্যাস না থাকলো খুবই সমস্যায় পরতে হয়।আপনি রাইস কুকারে সময় নিয়ে ইফতার রেডি করেছেন জানতে পেয়ে ভীষণ ভালো লাগলো। বাইরের খাবার আমার ও পছন্দ নয়।অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার হাসবেন্ড যদি বাইরের খাবার খেত। তাহলে আমি কষ্টকরে রাইস কুকারে ইফতারি তৈরি করতাম না। দোকান থেকে কিনে নিয়ে আসলাম। তবে বাইরের খাবারগুলো স্বাস্হসম্মত নয়। তাই এরকম করলাম আর কি। আপনাকেও স্বাগতম আপু।
বর্তমান সময়ে সকল প্রকার ব্যবস্থা রাখাটা বড় জরুরী। কারণ এই সময়ে সময়মতো রান্না করতে হলে রাইস কুকার প্রয়োজন এদিকে গ্যাস প্রয়োজন। আবির গ্যাসের প্রবলেম হলে তো আরেক ঝামেলা। আজকে আমাদের গ্যাস নতুন সিলিন্ডার নিয়ে আসলাম। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অন্যান্য জিনিসের সহযোগিতা নিতে হয়।
জ্বী ভাইয়া কিছু কিছু সময় হলে অন্য জিনিসের সহযোগিতা নিতে হয়। আর সেগুলো যদি হাতের কাছে না থাকে। তাহলে মহাবিপদ।