সামিয়া বাবুর টিকা দিতে নিয়ে যাওয়ার অনুভূতি
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকের পোস্টে আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলেছি আমার বাচ্চার টিকা প্রদান করার অনুভূতি। আশা করবো এই পোষ্টের মধ্য দিয়ে আপনারা সবাই বাচ্চাদের প্রতি সাবধান ও সতর্ক হবেন। টিকা প্রদানের প্রতি অবশ্যই সজাগ থাকবেন।
একটি নবজাতক শিশু জন্মের পর থেকেই বিভিন্ন যত্নের মধ্যে বেড়ে ওঠে। নবজাতককে ঘিরে অনেক চিন্তা চেতনা থাকে পিতা-মাতার। তবে সমস্ত কিছুর মধ্যে টিকা প্রদান করাটা অন্যতম প্রধান বিষয়। প্রত্যেকটা বাবুর জন্মের পর পর বেশ কয়েকটা টিকা দিতে হয়। বাচ্চার জন্মের আগে মায়ের যেমন টিকা দেওয়া জরুরী। বাচ্চার জন্মের পর নির্দিষ্ট সময়ে টিকা প্রদান করার জরুরী। একটা সময় টিকার অভাবে বাচ্চাদের রাতকানা রোগ হতো, বিকলাঙ্গ হয়ে যেত, হাত পা বাঁকা হয়ে যেত, বিভিন্ন রকমের অসুবিধা দেখা দিত। এই সমস্ত রোগ প্রতিরোধ করার জন্যই যুগ যুগ ধরে টিকা প্রদানের ব্যবস্থা চালু হয়েছে সারা দেশব্যাপী সরকারিভাবে। তাই আগের তুলনায় এখন অনেক শিশুরা আশঙ্কা মুক্ত এবং সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে।
ইতোমধ্যে আমার একমাত্র সন্তান সামিয়া বাবুর দশ মাস পূর্ণ হয়েছে। ২০২৪ সালের পহেলা মার্চে আমার বাবুর জন্ম। এই দশ মাসের মধ্যে বেশ কয়েকবার তাকে টিকা প্রদান করা হয়েছে। ছয় মাস পূর্ণ হওয়ার সময় বলেছিল নয় মাসের বেলায় আরো একটি টিকা দিতে হবে। তবে এই টিকাটা নির্দিষ্ট সময়ে দেওয়া মিস হয়ে গেছিল। গ্রামে টিকা প্রদান করতে আসেন এক আন্টি। নির্দিষ্ট সময়ে বাবু বাড়িতে না থাকায় সেই আন্টির কাছে টিকা দিতে যেতে হয়েছিল, ইউনিয়ন পর্যায়ের হসপিটালে। প্রথমে বাবু এবং বাবুর আম্মুকে বাসা থেকে রেডি করে মোটরসাইকেলে পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে গেলাম। হসপিটালে উপস্থিত হয়ে দেখলাম দরজা খোলা রয়েছে এবং উনারা উপস্থিত হয়েছেন। আমাদের স্থানীয় পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের নাম ১৬ টাকা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য। নির্দিষ্ট রুমে দেখলাম বেশ অনেক মহিলারা এসেছেন বাবুদের টিকা প্রদান করানোর জন্য, এছাড়াও গর্ভবতী মহিলাদের টিকা নেওয়ার জন্য। বাবুর আম্মুকে ভেতরে উপস্থিত থেকে টিকা দিয়ে নিতে বললাম এবং আমি বাইরে অবস্থান করলাম। লক্ষ্য করে দেখলাম মানুষের উপস্থিতি বেশ। তবে আরো ভালো লাগলো হসপিটালটার সমস্ত এরিয়া ব্যাপী আলু আর পেঁয়াজ লাগানো হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা জানি আমাদের দেশে পেঁয়াজ আর আলুর প্রচণ্ড দাম গেল। তাহলে হয়তো সে চিন্তা মাথায় রেখে কোন এক মহান ব্যক্তি স্থানটা হাতে নিয়েছেন এবং কাজে লাগিয়েছেন। বাইরে অপেক্ষা করার মুহূর্তে এই সমস্ত জিনিস গুলোই লক্ষ্য করতে থাকলাম।
কিছুক্ষণ পর আমার বাবুর টিকা দেওয়ার মুহূর্ত আসলো। আমি ওর সাথে উপস্থিত হলাম টিকা প্রদানকারী আন্টির কাছে। এত পূর্বে যে দুইবার টিকা প্রদান করা হয়েছিল এতে কিন্তু আমার বাবু কান্না করেনি। কিন্তু এবার পায়ের দাবনাতে দেওয়াতে বেশ কান্না করলো। বাবুর কান্নাটা আমার কাছে খুবই কষ্ট লেগেছিল। কারণ টিকা দেওয়ার স্থানে বেশ রক্ত বের হয়েছিল। আর ওই মুহূর্তে বাবুর শরীরটা বেশ অসুস্থ অসুস্থ ছিল। সর্দি দূর হলেও কাশির বেগটা ছিল অনেক বেশি। তাই সেখানে আর এক আপুর কাছ থেকে কাশির ঔষধ নেয়া হয়েছিল। আলহামদুলিল্লাহ বর্তমান সর্দি কাশিটা কম রয়েছে। আপনারা সবাই আমার বাবুর জন্য দোয়া করবেন।
এরপর আমরা আবারো হসপিটালের এরিয়া থেকে বাইরে চলে আসলাম। এরিয়ার বাইরে দেখলাম পাশে প্রাইমারি বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টা অনেক সুন্দর ভাবে পাঁচিল দিয়ে ঘেরাও করা হয়েছে। তবে একটা বিষয় আমার কাছে বেশ খারাপ লাগছিল। পাঁচিলের উপরে অনেক কয়টা ছেলেকে বসে থাকতে দেখলাম। তারা যদি ওর উপর থেকে পড়ে যায় তাহলে অবশ্যই হাত-পা ভাঙবে। কিন্তু স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা অথবা আয়া পিয়নদের কোন নজরদারি নেই। অবশ্যই এই বিষয়টা তাদের নজরে আনাটা প্রয়োজন। আমি আমার বাবুর সুস্থতার জন্য টিকা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আর এখানে অনেক বাবা মা সন্তানদের মানুষ করার জন্য বিদ্যালয় পাঠিয়েছে কিন্তু তাদের নিরাপত্তার অভাব। যে কোন মুহূর্তে এক্সিডেন্টের সম্মুখীন হতে পারে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই আমি বাচ্চাদেরকে নেমে যেতে বললাম। তাদের বুঝিয়ে বললাম। একটা বিষয় জেনে খারাপ লাগলো, বাচ্চারা বলল কালকে এ সময় আমাদের ক্লাস নিয়েছে আজকে নিচ্ছে না। ম্যাডামরা অফিসের মধ্যে কি জানি করছে। প্রশ্ন করলাম বাইরে থেকে কেউ এসেছে? বাচ্চারা উত্তর দিল না কেউ আসেনি স্যার ম্যাডাম রাই গল্প করছে। তখন ভাবলাম হ্যাঁ এটা তো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর এভাবেই বাবুর টিকা প্রদান শেষ করে বাড়ির দিকে রওনা হলাম।
বিষয় | টিকা প্রদান |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
লোকেশন | গাংনী-মেহেরপুর |
ব্লগার | @sumon09 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
03-10-25
X-promotion