হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি আমাদের তেঁতুল গাছে উঠে তেঁতুল পাড়ার অনুভূতি নিয়ে। যেখানে অতীতের বেশ কিছু স্মৃতি স্মরণ করব এবং সুন্দর অনুভূতি প্রকাশ করব। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

আমি যখন ছোট, তখন থেকে লক্ষ্য করে আসছি আমাদের বাড়িতে বেশ কিছু তেঁতুল গাছ রয়েছে। প্রত্যেক বছর খেয়াল করেছি মাঘ মাসের দিকে তেঁতুল পাকে। আর এই মুহূর্তে পাড়াগাঁয়ের অনেক মানুষ তেতুল পাওয়ার আশায় ভিড় জমায় আমাদের বাড়িতে। আর সে থেকে তেঁতুল বেশ সুপরিচিত একটি ফল আমাদের। তবে বর্তমান আমাদের বাড়িতে আগের মতো ৪ টা তেঁতুল গাছ এখন আর নেই। এখন মাত্র একটি তেঁতুল গাছ রয়েছে, সবচেয়ে বড় গাছটা। আর সেই ছোট থেকে আজ পর্যন্ত প্রত্যেক বছর তেঁতুল গাছে উঠে আমি এখনো তেঁতুল পাড়ি। তাই এবারও মাঘ মাসের দিকে ফাল্গুন মাসের দিকে তেঁতুল গাছে উঠে তেঁতুল পেড়েছি বেশ কয়েক ব্যাগ। আমাদের এই তেঁতুল গাছটা পুকুরপাড়ে। পুকুরটা আমাদের বাড়ির দক্ষিণ সাইটে। একটা সমস্যা ফেস করে থাকি সব সময়। তেঁতুল পারতে গেলে বেশিরভাগ পুকুরে পড়ে। বিশেষ করে পাকা তেঁতুল অর্থাৎ মাঘ ফাল্গুন মাসে এই সমস্যাটা বেশি হয়ে থাকে।



মাঘ ফাল্গুন মাসে তেতুল পাকার পূর্বে একবার গাছে ওঠে চলাচলের পথ পরিষ্কার করে আসা হয়। অর্থাৎ আমরা জানি তেঁতুল গাছের সব সময় নতুন নতুন ডাল কুশি গজাতে থাকে মোটা ডালের গায়ে। আর তেঁতুল গাছে উঠলে বেশ হাত পা কেটে যায় ছুলে যায়। এজন্য আমরা সবসময় চেষ্টা করে থাকি তেঁতুল পাকার আগ মুহূর্তে একবার গাছে ওঠার লাইনগুলো পরিষ্কার করে দিতে। আর সেই সাথে কঞ্চির এক-দুইটা আঙ্গোসি তৈরি করে গাছে রেখে আসি। এবারও ঠিক সেভাবেই গাছে রেখে এসেছিলাম। আর ওটার মাধ্যমেই তেঁতুল পাড়ার চেষ্টা করেছি। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, প্রত্যেক বছর আমাদের গাছে অনেক অনেক তেঁতুল ধরে। গাছের ফটো দেখে বুঝতে পারছেন কত তেঁতুল ধরেছে। আর বাস্তবে দেখলে তো অবাক হয়ে যাবেন।


আর একটা বিষয় হচ্ছে তেঁতুল পাকার পূর্বে গাছের পাতা সব পড়ে যায়। এইজন্য গাছের তেঁতুল ঝুলে থাকা দেখতে আরো ভালো লাগে। সেই ছোট থেকে প্রত্যেক বছর একইভাবে তেঁতুল পেড়ে থাকি। তবে এমন একটা সময় ছিল প্রায় দিন তেঁতুল গাছে উঠতাম, এমনকি দিনে দুই তিনবার উঠেছি। যখন হাই স্কুল লাইফে ছিলাম তখন বন্ধুরা মিলে গাছে উঠতাম। এরপর যখন কলেজ লাইফে আসলাম তখন বন্ধুরা কাছ থেকে দূরে যেতে থাকলো, তখন একা একাই গাছে উঠতাম। আর এখন এমন একটা সময় চলে এসেছে ইচ্ছে থাকলেও প্রতিনিয়ত গাছে ওঠা সম্ভব হয় না। শুধুমাত্র অতি প্রয়োজনে আশায় থেকে থেকে দুই এক দিন উঠা হয় কিনা। তবুও প্রয়োজনে পাড়তে হয় গাছে ওঠে।




তেঁতুল এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ ফল। বিভিন্ন প্রয়োজনে এটা ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন রেসিপিতে। আর ডাক্তাররা সব সময় তো বলতে থাকেন যাদের প্রেসারের সমস্যা আছে তাদের তেঁতুল খেতে। প্রচন্ড গরমের দিনে তেতুলের শরবত আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারে আসে। এক কথায় বলতে গেলে এটা এক প্রকার মেডিসিন এর কাজ করে। তাই এই ফলটাকে আমি খুবই পছন্দ করি। বাড়িতে অন্যান্য ফলের চেয়ে এই ফলটার গুরুত্ব আমি বেশি দিয়ে থাকি। তাই আজও ছোট থেকে সেই আগের দিনের মতো তেঁতুল পাড়ার জন্য গাছে উঠে বসি। ছোটবেলায় গাছের একদম শেষ প্রান্তে একটি সুন্দর জায়গা আছে যেখানে বসে থাকা যায় ঠিক সেই জায়গায় এখনো উঠি এবং নিচ থেকে তেঁতুল পারতে পারতে কিছুটা টায়ার্ড হয়ে গেলে ওই জায়গায় বসি। ঠিক সেই জায়গায় বসেই ফটোগুলো ধারণ করেছিলাম। ফটোগুলো দেখে হয়তো বুঝতে পারছেন আমার ডানে-বামে চারিপাশে কত তেঁতুল ধরেছে। জীবনে অনেক স্মৃতি রয়েছে যেগুলো মন থেকে মুছে যাওয়ার পথে কিন্তু তেঁতুল গাছের এই স্মৃতি আমি আজও ভুলি নাই। কারণ সেই ছোট থেকে আজ পর্যন্ত একই ভাবে এই গাছটায় আমি উঠে চলেছি। গাছে উঠলে কত কত স্মৃতি মনে আসে কিন্তু সেগুলো স্মরণে নেই কোন কোন সালের স্মৃতি স্মরণে আসছে। তবে যেন অন্যরকম এক মধুর স্মৃতি অনুভব করি এই তেঁতুল গাছে ওঠে। যাইহোক এভাবে গাছে উঠে বেশ অনেক তেঁতুল পেড়েছিলাম একদিন।


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

বিষয় | তেঁতুল |
লোকেশন | Location |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix hot 11s |
ফটোগ্রাফার | @sumon09 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সকলে। আল্লাহ হাফেজ। |

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনাদের বাড়িতে তেঁতুল গাছও আছে এটা আমি জানতাম না। তবে আগে চারটা গাছ ছিল এখন একটি বড় গাছ রয়েছে। আর সেই গাছে উঠে আপনি নিজে তেঁতুল পেরেছেন। আপনার তেঁতুল গাছে উঠে তেঁতুল পাড়ার অনুভূতিটা দারুন ছিল বেশ ভালো লাগলো পড়ে। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
আমি জন্ম হইতেছে আমাদের বাড়িতে তেতুল গাছ
তেঁতুল গাছ থেকে তেঁতুল পাড়ার আমারও অনেক স্মৃতি রয়েছে। ছাত্র জীবনে স্কুল ছুটির পরে তেতুল পাড়ার জন্য গাছে উঠতাম। তেঁতুল গাছে ভুত থাকে বলে কত ভয়ভীতি দেখাতো মানুষ। সেগুলো পরোয়া না করে নিজের গতিতে এগিয়ে যেত। ধন্যবাদ আপনাকে এমন স্মৃতিময় একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ ভাই আমার মধুর স্মৃতি আমিও কিন্তু প্রকাশ করব
এই তেঁতুল গাছটা তাহলে আপনি ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছেন। অনেক তেতুল ধরেছে দেখছি গাছটাতে। তেতুলের কথা শুনলেই তো জিভে জল চলে আসে। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বেশ ভালো লাগলো। গাছের উপর থেকে ফটোগ্রাফি করেছেন দেখছি। অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ এটা আমাদের সবচেয়ে বড় গাছটা
আমাদের তো তেতুঁল গাছ নেই,তাই কখন তেতুঁল পাকে,রাস্তা করে রাখতে হয় সে গুলো জানি না। তবে অনেক বার অন্যের তেতুঁল গাছের উঠে তেতুঁল পাড়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আপনাদের গাছে পাতা থেকে তেতুঁল বেশি দেখা যায়। ছোট সময় অনেক তেতুঁলও খেয়েছি। তবে এখন খায় না। যায়হোক আপনার অভিজ্ঞতা দারুন ছিল। ধন্যবাদ।
তেতুল এমনিতেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ফল যেভাবে হোক খাওয়া প্রয়োজন
আগেকার সময় দেখতাম অনেক বড় বড় তেতুল গাছ দেখা যেত। এখন গাছের সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। চারটি তেঁতুল গাছের মধ্যে আপনাদের একটি তেঁতুল গাছ আছে আর সেই তেঁতুল গাছ থেকে তেতুল পাড়ার সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
হ্যাঁ আপু গাছটা আমরা রেখে দিয়েছি।