অনলাইনে বোরখা কেনার এক আনন্দময় অভিজ্ঞতা ।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে অনলাইনে বোরখা কেনার এক আনন্দময় অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

জীবনের প্রতিটি পরতে আমাদের পছন্দ ও স্বাদ প্রকাশ পায় পোশাকে। বিশেষ করে এমন কোনো পোশাক, যা আমরা নিত্য ব্যবহার করি কিংবা নিজেদের পরিচয় ও বিশ্বাসের অংশ হিসেবে পরিধান করি । সেটি হতে হয় আরামদায়ক, রুচিশীল ও মানসম্মত।মানুষের প্রতিদিনের জীবন যাত্রায় পোশাক শুধু শরীরের আচ্ছাদন নয়, বরং একান্ত পছন্দ, স্বাচ্ছন্দ্য এবং আত্মপরিচয়ের প্রকাশ। বিশেষ করে যারা পর্দা করেন, তাঁদের জন্য বোরখা হয়ে ওঠে আত্মার পরিধান যেটাতে থাকতে হয় মান, সৌন্দর্য ও পরিপূর্ণতা। আমি অনেক দিন ধরেই একটি সুন্দর ডিজাইনের বোরখা নিতে চাচ্ছিলাম। বদরগঞ্জের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখেছি, তবে সত্যি বলতে সেখানে আমার মনের মতো কিছু পাইনি। ডিজাইন, কাপড়ের মান কিংবা ফিটিং কোনো না কোনো কারণে পছন্দ হচ্ছিল না। ঠিক তখনই মাথায় এলো অনলাইনের কথা।

বর্তমানে অনেকেই অনলাইন শপিং করে থাকেন, তবে স্বীকার করতেই হয়, একটি আশঙ্কা সব সময় থেকেই যায়।প্রোডাক্ট কেমন আসবে, ছবির মতো হবে তো? এই ভয়টা অমূলক নয়, কারণ অনেকেই প্রতারিত হচ্ছেন, কমদামে নিম্নমানের প্রোডাক্ট পাচ্ছেন।দেখা যাবে ছবিতে একটা, হাতে পেয়ে আরেকটা এই ভাবনাগুলো অস্বস্তি তৈরি করছিল। তবু সাহস করে খোঁজ করতে লাগলাম।অনলাইনের পেজ ঘেঁটে ঘেঁটে অনেক গুলো ডিজাইন দেখলাম। প্রতিটি পেজে ঢুকে রিভিউ পড়লাম, ক্রেতাদের কমেন্ট দেখলাম, কীভাবে ডেলিভারি করে, টাকা কবে দিতে হয়।সব খুঁটিনাটি যাচাই করছিলাম। হঠাৎ একটা পেজে চোখ আটকে গেল। বেশ গোছানো, পরিচ্ছন্ন প্রেজেন্টেশন আর সবচেয়ে বড় কথা, এখানে কোনো অ্যাডভান্স দিতে হয় না। সেই সঙ্গে ছিল একটা আশ্বস্তির কথা ,প্রোডাক্ট পছন্দ না হলে ফেরত দেওয়ার সুযোগ। এই নির্ভরযোগ্যতার ওপর ভরসা করেই একটা কালো রঙের সুন্দর বোরখা পছন্দ করলাম। ছবিতে যেটা দেখলাম, সেটা ছিল বেশ ঘেরযুক্ত আর সূচিকর্মে হালকা ঢেউখেলানো সোনালি পাড়। আমার চোখে বেশ রুচিশীল আর মার্জিত মনে হলো।

সব তথ্য দিয়ে অর্ডার করে দিলাম। মনে মনে একটু উত্তেজনা কাজ করছিল।কেমন হবে, ঠিকঠাক আসবে তো? অবশেষে সেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ বিকেলে কল এল ডেলিভারি ম্যানের। আমি নিজেই গিয়ে পার্সেল হাতে নিলাম। তখনো ভাবছিলাম, খুলে দেখি না জানি কী অবস্থা। কিন্তু খুলে দেখে মনটা ভরে গেল। কাপড়টা অনেক কোমল, ঝরঝরে, আর ডিজাইনটা ও নিখুঁতভাবে করা। বাস্তবে যেন ছবির চেয়েও বেশি ভালো লাগলো। সঙ্গে সঙ্গে টাকা বুঝিয়ে দিয়ে ঘরে ফিরে এলাম।বাড়িতে এসে বোরখাটি পরে আয়নার সামনে দাঁড়াতেই যেন নিজের মধ্যে নতুন এক আত্মবিশ্বাস অনুভব করলাম। সাজগোজ না করেও কেমন এক স্নিগ্ধতা ফুটে উঠছিল নিজের ভেতরে। বাইরে বেরিয়ে ছবিও তুললাম কয়েকটি, যেন এই অভিজ্ঞতার একটা স্মৃতি ধরে রাখা যায়।

অনেকে বলেন, অনলাইন শপিংয়ে ঠকতে হয়। আমি বলি, হ্যাঁ, সেটা সত্যি, কিন্তু একটু যাচাই করে, ধৈর্য ধরে খোঁজ করলে এখনো ভালো কিছু পাওয়া সম্ভব। আমার এই অভিজ্ঞতাটাই তার প্রমাণ।খুব সাধারণ একটা অর্ডার হয়তো, কিন্তু আমার কাছে এই ছোট্ট আনন্দই অনেক বড়। একটি পরিপূর্ণ, মানসম্মত বোরখা শুধু আমার প্রয়োজনই পূরণ করেনি, বরং এনে দিয়েছে একরাশ তৃপ্তি।যারা অনলাইনে কেনাকাটা করতে ভয় পান, তাঁদের জন্য একটি ছোট্ট সাহস হতে পারে। কখনো কখনো ছোট ছোট সিদ্ধান্তই আমাদের এনে দেয় সবচেয়ে মধুর অনুভূতি।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।