|| হোলির আনন্দে মাতোয়ারা ||

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

দোলযাত্রা বা হোলি হলো রঙের উৎসব বা বসন্তের উৎসব। তাছাড়া প্রেমের উৎসব নামেও পরিচিত এই হোলি অন্যতম জনপ্রিয় এবং উল্লেখযোগ্য উৎস। বৃন্দাবনে রাধা ও কৃষ্ণের দ্বারা হোলি খেলা উৎসব পালিত হয়েছিল প্রথম। এরপর থেকে আসলে আমরা এই দিনটা অনেক সুন্দর করে উদযাপন করার চেষ্টা করি। তবে গত বছর আমার পরীক্ষা থাকার কারণে তেমন সুন্দর করে দোল উৎসব পালন করতে পারিনি। তবে এই বছর বনগাঁ তে আসার পর থেকেই মোটামুটি প্ল্যান করে রেখেছিলাম যে পরিবারের সবাই মিলে দোল উৎসব পালন করার চেষ্টা করব। সেই লক্ষ্যে দোলের ঠিক দুই দিন আগে সমস্ত রং কিনে রেখে দিয়েছিলাম বাবাকে দিয়ে। যদিও বাবা কাজে প্রচন্ড ব্যস্ত থাকে, তারপরও বাবাকে বলে রেখেছিলাম যেন দোলের দিন সকালবেলা আমাদের সাথে সময় কাটায়। যাই হোক কথা দিলেও পরবর্তীতে বাবা কথা রাখতে পারেনি পুরোপুরি। তাই মা ই ছিল একমাত্র ভরসা যার সাথে দোল খেলা যায়।

InShot_20240325_212534585.jpg

দোলের দিন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই বেশ আশ্চর্য হলাম যে, আমার পাশের বাড়ির এক দিদি হঠাৎ করে বাড়িতে এসে বলল, "যে পূজা তুই কি ঘরে আছিস"? এই দিদির সাথে প্রায় দুই বছর আগে হোলি খেলেছিলাম। এরপর আর তেমন কোন সুযোগ হয়নি তাই হঠাৎ করে দিদিকে দেখে অনেক বেশি ভালো লাগা কাজ করলো। তাই বললাম দাঁড়া, আমি একটু গুছিয়ে আসি ঘর থেকে। এতে করে ফটো ভালো আসবে, আবার সুন্দর করে সময় কাটানো যাবে অনেক সময় ধরে। যাই হোক মোটামুটি আমার যাবতীয় কাজ শেষ করে দিদির সাথে চলে গেলাম ছাদে। সেখানে প্রথমে হালকা আবির মাখিয়ে টুকটাক কিছু ফটো তুলে নিলাম দিদির সাথে। তারপর নিজে কিছু পোজ দিয়ে ফটো তুললাম।

IMG-20240325-WA0125.jpg

এরপর তো শুরু হল রং মাখামাখির চরম পর্যায়। অর্থাৎ যে যার মুখে যতটা মাখিয়ে দিতে পারে। আমাকে তো প্রথমে ভূত বানিয়ে দিল। এরপর দিদিকে ভূত বানিয়ে দিয়ে অনেক সময় ধরে অনেক ফটো তুললাম । এরপর টুকটাক কিছু খাওয়া দাওয়া করেছিলাম ছাদের উপর বসে। আর তখনই আমার মনে পড়ল যে বাড়িতে তো মা কে একা রেখে এসেছি। আমি ছাড়া তো সে অন্য কারো সাথে হোলি খেলবে না। বাড়িতে এসে দেখলাম যে মা আমার জন্য অপেক্ষা করে বসে আছে। তাই আর দেরি না করে মায়ের পায়ে প্রণাম করে মুখে আবির লাগিয়ে দিলাম। এর মধ্যেই দেখলাম যে বাবা চলে এসেছে কোথা থেকে ভূত হয়ে। অর্থাৎ তার বন্ধুবান্ধব বাবাকে আবির লাগিয়ে একেবারে ভূত বানিয়ে দিয়েছে। আমরা যে বাবার মুখে আবির লাগাবো সেই জায়গাটুকু খুঁজে পাচ্ছিলাম না। হা হা হা..

IMG-20240325-WA0078.jpg

যাইহোক তারপরেও আবির লাগালাম। এরপর বাবা আমাদের সকলের জন্য মিষ্টি নিয়ে এসেছিল সেগুলো খেয়ে নিলাম। সমস্ত কিছু শেষ করে আমাদের পাশের বাড়ির যে দিদিটা এসেছিল ও চলে গেল ওদের বাড়িতে। তবে সমস্যা হয়ে দাঁড়ালো রং খেলার পরে। অর্থাৎ এইবার রং উঠাতে হবে কি করে। যতই ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ডলি না কেন, আরো বেশি মুখে রং লেগে যাচ্ছে। একপর্যায়ে তিন চারবার মুখ ধোয়ার পর আর চেষ্টা করেনি। পরে দেখলাম যে অনেকগুলো রং একসাথে মুখে মিশে রীতিমত একটা বিশ্রী কালার হয়ে গেছে। তবে যতই মুখে রং লাগুক, এই দিনটা আমাদের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সারা বছর অপেক্ষা করে থাকি এই দিনটার জন্য। পরিবারের সাথে এত সুন্দর একটা সময় কাটাতে পেরে সত্যিই আজকের দিনটা অনেক বেশি স্পেশাল লেগেছিল আমার কাছে।

IMG-20240325-WA0077.jpg

IMG-20240325-WA0079.jpg

IMG-20240325-WA0076.jpg

IMG-20240325-WA0050.jpg

IMG-20240325-WA0048.jpg

IMG-20240325-WA0046.jpg

IMG_20240325_121718.jpg

IMG-20240325-WA0156.jpg

IMG_20240325_125536.jpg

8aab4af1b88a4f1fa2bb53b2a5894259.jpg


পোস্ট বিবরণলাইফ স্টাইল
ডিভাইসpoco m6 pro

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।





🪔আমার পরিচয়🪔

InShot_20240217_224020693.jpg

আমি পূজা ঘোষ(রাজশ্রী)। বনগাঁতে বসবাস করি। আমি বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয় থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, বিজ্ঞান বিভাগে ।পাশাপাশি কম্পিউটার এবং স্পোকেন ইংলিশের কোর্স করেছি। বর্তমানে আমি ফার্মাসিতে অধ্যায়নরত । ভবিষ্যতে এইগুলো নিয়ে ভালো কিছু করার আশায় এগোচ্ছি। কবিতা আবৃত্তি করতে আমি খুবই ভালোবাসি। ছোটো বয়েস থেকেই কবিতা আবৃত্তি শিখছি। এছাড়া ছবি আঁকতে,ঘুরতে যেতে,নতুন নতুন খাবার খেতে,গান শুনতে,ফোটোগ্রাফি করতে আর মানুষের সাথে মিশতে ভালোবাসি।

🎯 সমাপ্ত🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 2 years ago 

দিদি আজ আপনাদের হোলি।আপনি আপনার পরিবারের সাথে চমৎকার সময় কাটিয়েছেন। পাশের বাড়ির দিদির সাথে রঙ মাখামাখি করে চমৎকার ফটো ও তুলে নিলেন।এসবটাই স্মৃতি হয়ে থাকবে।গত বার এক্সাম থাকার কারনে আপনি হোলি উৎসব উদযাপন করতে পারেন নি।এবার তা পুষিয়ে নিয়েছেন।আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে আর ফটোগ্রাফিগুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে দিদি।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

আমার অনুভূতিগুলো পড়ে এবং ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আপনার কাছে ভালো লেগেছে শুনে খুশি হলাম আপু।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

বাহ আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন হোলির আনন্দে মাতোয়ারা কিছু অনুভূতি। আসলে হোলির আনন্দে দিন আপনারা আবির মাখামাখি করেছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। প্রথমে আপনাকে আবির মাখিয়ে ভূত বানিয়ে দিয়েছিল আপনার পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম। ছবিগুলো বেশ দারুন ভাবে স্টাইল নিয়ে তুলে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

দিদি দোলযাত্রার হলেই তো দেখছি নিজের পরিবারের সাথে অনেক আনন্দ ও সুন্দর মুহূর্তটি অতিবাহিত করেছেন। আমরা নিজেরাও অনেক বেশি আনন্দ করেছি। সত্যি বলেছেন দিদি আমাদের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য হোলির দিনটি একটি বহুল প্রতীক্ষিত দিন। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

আপনারাও আমাদের মত অনেক মজা করেছেন জেনে ভালো লাগলো ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার এঈ হোলির আনন্দের মুহূর্তটুকু আপনি চমৎকার ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আসলে এরকম আনন্দের মুহূর্তটুকু উপভোগ করার মজাই আলাদা। রং মাখা অবস্থায় আপনাকে দেখতে দারুণ লাগছে। অনেক আনন্দের একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাই, এরকম মুহূর্তটুকু উপভোগ করার মজাই আলাদা। সুন্দর একটি প্রশংসনীয় মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

দিদি, আমি তো গত বছরও তেমন হোলি খেলিনি, এই বছরও ঘর থেকে বের হইনি হোলি খেলার জন্য। তবে তোমার পাশের বাড়ির দিদির সাথে তুমি সুন্দর সময় কাটিয়েছো এবং হোলি খেলেছো, যেটা জেনে খুব ভালো লাগলো। তাছাড়া মায়ের মুখে হোলির রং লাগানো এবং বাবাকেও কিছুটা রং লাগিয়ে দেওয়ার ভিতরে যে মজা আছে, এটা আসলেই অসাধারণ। তোমার ফটোগ্রাফি গুলোও কিন্তু বেশ সুন্দর হয়েছে। ভালো লাগলো তোমার পোস্ট টি পড়ে।

 2 years ago 

তুমি গত বছর এবং এবছর হোলি খেলনি দেখে খারাপ লাগলো ভাই। ফটোগ্রাফি গুলো ভালো লেগেছে শুনে খুশি হলাম ভাই। ধন্যবাদ।