গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান। নিজে বাঁচার পরিবেশ গড়ে তুলুন।
কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। তবে প্রচন্ড রোদ গরমে অতিষ্ঠ। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য। এই পোষ্টের মাঝে আপনারা দেখতে পারবেন সুমনর ভাইয়া আম গাছ লাগানো। বিয়ে হয়ে আসার ৪/৫ বছরের মধ্যে একটা বিষয় উনার মধ্যে বেশি লক্ষ্য করে আসছি। প্রত্যেক বছর বর্ষার সময় উনি যে কোন গাছ লাগিয়ে থাকেন। তবে এবার সুযোগ হয়েছিল উনার সাথে আম গাছ লাগানোর। আর সেই বিষয়ে বিস্তারিত আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব।

photography device: Infinix Hot 11s
রাজের আব্বু চারটা চার প্রকার আমের চারা কিনে এনেছিল। তবে আমের চারা গুলো লাগানোর সুযোগ করতে পারছিল না স্কুলের জন্য। যে সময় তারাগুলো বাড়িতে আনলো তখন তার স্কুল ছিল রানিং, এদিকে প্রাইভেট পড়ানো। তাই গাছ লাগানোর দায়িত্ব দিয়ে দিল ভাইয়ার উপর। আর বুঝতেই পারছেন ভাইয়া গাছ পেলে তো মেতে ওঠে। তবে গাছ লাগাতে দুই দিন দেরি হয়ে গেল। ভাইয়া বলেছিল আমার গাছ লাগানো যদি ফটো করে রাখা যায় তাহলে ব্লগ শেয়ার করা যাবে। এতে অনেকে উৎসাহিত ভাবে গাছ লাগানোর প্রতি। কিন্তু এতেও রাতের আব্বু সুযোগ দিতে পারল না। অতঃপর আমি নিজেই ভাইয়াকে সহযোগিতা করেছিলাম গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাবে আর পাশাপাশি ফটো ধারণ করেছিলাম। প্রথমে বাড়ির মধ্যে জায়গা নির্বাচন করলেন। এরপর কোদাল সাবোল এর সহযোগিতায় মাটি খনন করলেন। মাটির নিচে বেশ ইট ও ইটের খোয়া ছিল। সাবধানতার সাথে মাটি খনন করে ফেললেন।







এরপর আম গাছের একটি চারা দেওয়ালের পাশ থেকে এনে ভাইয়ার কাছে দিলাম। ভাইয়া গাছের চারাটা মাটির সাথে রেখে, নিচের শিকড়ের মাটি ধরে রাখার জন্য যেই রশি ও প্যাকেট জড়ানো ছিল সেগুলো খুলতে থাকলেন। উনি খুব ভালো করে জানেন কতটা সাবধানতা অবলম্বন করলে গাছের জন্য ভালো। কারণ সে দীর্ঘদিন গাছ লাগিয়ে আসছেন। এমনকি গাছের ডাল কেটে কলম গাছ তৈরি করেন।




এরপর খুব সাবধানতার সাথে গাছটি গর্তের মধ্যে প্রবেশ করালেন। আমি ভাইয়াকে প্রশ্ন করলাম কোন জৈব কম্পোষ্ট সার দেওয়া লাগবে না এই মুহূর্তে? উনি বলেছিলেন আমাদের এখানকার মাটি খুবই উর্বর আর বর্ষার মুহূর্তে সারের প্রয়োজন হয় না বৃষ্টির পানির সাথে নাইট্রোজেন থাকে। আর সারের মূল উপাদান নাইট্রোজেন। ঠিক এভাবেই অনেক কিছু আমাকে বুঝিয়ে বললেন। এরপর আমি ভাইয়াকে সহযোগিতা করে পানি এনে দিলাম। এদিকে ভাইয়া গাছের গোড়ায় মাটি গুলো দিয়ে দিলেন কিন্তু মাটিগুলো চাপলেন না। যেহেতু ভাইয়ার হাতে কাদা ছিল তাই উনি আগে কাদার ধুয়ে নিলেন। উনি বললেন গাছের গোড়ায় পানি দিলে মাটির নিজের মত বসে যাবে।



এরপর বালতির মধ্য থেকে পানি বদনায় করে তুলে গাছের গোড়ায় দিতে থাকলেন। এভাবে আমি দুই বালতি পানি এনে উনার কাছে রেখে দিলাম এবং উনি পানি দিতে থাকলেন। উনার কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমিও ফটো ধারণ করতে থাকলাম এবং অনেক কিছু জানতে পারলাম গাছ লাগানোর বিষয়ে। উনি বললেন আমি একদম হাই স্কুল লাইফ থেকে এভাবে অনেক গাছ লাগিয়ে আসছি। বাড়িতে অধিকাংশ গাছ উনার নিজের হাতে লাগানো। এমনকি আমার জানালার পাশে লিচু গাছে এবার লিচু ধরেছে সেই গাছটা ভাইয়া ২০০৬ সালে লাগিয়েছেন।




প্রচন্ড এই গরমে এখন বুঝতে পারছি গাছ লাগানো কত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুমন ভাইয়ার মত সচেতন মানুষগুলো ছিল বলে আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য যথেষ্ট টিকে রয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আমগাছটা বেঁচে গেছে। কত সুন্দর নতুন কুশি বের হয়েছে। বর্ষার শেষের দিকে শীতের আগে গাছ লাগালে সেই গাছ সহজে নষ্ট হয় না। এই বিষয়টা আমি ভাইয়ার থেকে জেনেছি। এই আমগাছটা লাগানো হয়েছিল সেপ্টেম্বর মাসে। আজ পর্যন্ত তেমন কোন সার দেওয়া হয়নি। শুধু গাছটাকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য মাঝেমধ্যে এভাবেই বাঁশ খুঁটি পুতে ভাইয়া যত্ন নিয়ে থাকেন। সকলে দোয়া করবেন আমগাছটা যেন দ্রুত বড় হয় এবং অনেক অনেক আম ধরে।


সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।

গাছ লাগানো খুবই ভালো একটি গুণ। আর সুমন ভাইয়ার এই গুণের কথা জেনে অনেক ভালো লাগলো। অবশেষে গাছটিতে নতুন পাতা গজিয়েছে দেখে সত্যিই ভালো লাগলো। আশা করছি গাছটি খুব দ্রুত বড় হবে আর আপনাকে সুস্বাদু আম প্রদান করবে। আপু আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আশা করছি এই পোস্টটি দেখে সবাই উৎসাহ পাবে গাছ লাগানোর।
হ্যাঁ মানুষকে উৎসাহিত করার জন্য পোস্ট টা শেয়ার করেছি।
বাহ আপনি আজকে আমাদের মাঝে বেশ দারুন একটি শিক্ষানীয় পোস্ট শেয়ার করেছেন। আপনার পোস্টটি দেখে সত্যি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। সুমন মামা আম গাছ লাগানোর জন্য মাটি খনন করছে দেখতে পেলাম। আসলে গাছ লাগাতে হলে বেশ পরিশ্রম হয়। আপনারা গাছ লাগিয়ে পরিবেশ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন যেন সবথেকে বেশি ভালো লাগলো। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ মাটি খনন করাটা একটু কষ্ট
সুমন ভাই গাছ লাগালো এবং আপনি পাশাপাশি উনাকে গাছ লাগাতে সাহায্য করলেন এটা দেখে খুবই ভালো লাগলো। আর আপনি দুই বলতে পানি এনে সুমন ভাইকে দিলেন এটা জেনেও বেশ খুশি হলাম কারণ একসঙ্গে কাজ করার মধ্যে আনন্দ পাওয়া যায়। যেভাবে আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে আমার মনে হয় এর জন্য অবশ্যই আমাদের বেশি ,বেশি গাছ লাগানো প্রয়োজন আর গাছ আমাদের প্রকৃত বন্ধু। খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্টটা ধন্যবাদ।
হ্যাঁ আমি সহযোগিতা করেছিলাম
বর্তমান আবহাওয়ার বীরূপ প্রভাবের কারণে আমরা অনেকটাই সচেতন হচ্ছি। এটা যদি আরো আগে থেকে সচেতন হতে পারতাম তাহলে হয়তো এই দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হতো না। ছোটবেলা দেখতাম বাজারে একটি নির্দিষ্ট দিনে অনেক বড় হাট লাগতো যেখানে বিভিন্ন ধরনের চারা গাছ দেখতে পেতাম। বাড়ির অভিভাবক অনেকগুলো গাছ বাড়িতে নিয়ে আসতো বিভিন্ন জায়গায় লাগানোর জন্য। বর্তমানে সেটা দেখতেই পাই না ভালো একটি কাজ যেটা পরিবেশের ভারসাম রক্ষা করে।
হ্যাঁ মাঝে মধ্যে এমন আবহাওয়া দরকার আছে, এতে মানুষ সজাগ হয়।
আপনাদের গাছ লাগানোর মুহূর্ত দেখে বেশ ভালো লাগলো। পরিবেশ বাঁচাতে হলে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো উচিত। শহরে গরমের টিকতে না পেরে গ্রামে চলে এসেছি। শহরে যে পরিমাণ গরম গ্রামে ততটা না। কারণ গ্রামে অনেক গাছপালা আছে।যাইহোক ধন্যবাদ আপু গাছ লাগানোর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।
আশা করি গ্রামে ভালো আছেন
গাছ পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে মূল্যবান ভূমিকা রাখে। তাই আমাদের উচিত অধিক পরিমাণে গাছ লাগানো। আপনি সুমন ভাইয়ার সাথে আম গাছ লাগানোর মুহূর্ত সুন্দর ভাবে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছন দেখে খুবই ভালো লাগলো। সুমন ভাইয়ের গাছ লাগানো অনেক অভিজ্ঞতা আছে দেখছি। তাই মূল কথা হলো আমরা গাছ লাগাবো পরিবেশকে বাঁচাবো। আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু।
হ্যাঁ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে আমাদের গাছ লাগাতে হবে।
আজকে গাছ না লাগানোর ফল সবাই হারে হারে বুঝতে পারছে। অনেকে জায়গা আছে বাট গাছ লাগায় না। আর অনেকের গাছ লাগানোর মন-মানুষিকতা আছে তবে গাছ লাগানের জায়গা নেই। সুমন ভাইয়ার থাকার কারনে গাছ গুলো লাগাতে পেরেছেন। আশা করা যায় কয়েক বছরের মধ্যেই ফল পাবেন। ধন্যবাদ।
আমাদের এই বিষয়ের সচেতন হতে হবে
চমৎকার উদ্যোগ গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান। আমাদের পরিবেশ কে আমাদের সবাইকে রক্ষা করতে হবে। গাছ লাগানোর মুহূর্ত বাহ্ দারুন লাগলো দেখে। আপনি বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে পোস্ট লিখেছেন। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকবেন।
হ্যাঁ আমাদের সবার এই কাজে অংশ নেয়া উচিত।