লাইফ স্টাইল//আমার পুকুর পাড়ে লাগানো মরিচ গাছ থেকে কাঁচা মরিচ সংগ্রহের অনুভূতি।

in আমার বাংলা ব্লগlast year



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ বৃহস্পতিবার। ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

IMG_20231023_090108_886.jpg



সুপ্রিয় বন্ধুগণ, কাঁচা মরিচ একটি মসলা জাতীয় ফসল। আমাদের প্রতিদিনের তরকারি রান্নার কাজে কাঁচামরিচের ব্যবহার আবশ্যিক। তাই চলতি বছরে আমাদের দেশে কাঁচামরিচের উৎপাদন কিছুটা কম হওয়ার কারণে রেকর্ড পরিমাণে কাঁচামরিচের মূল্য বৃদ্ধি হয়েছিল। আমাদের গাংনী বাজারে কাঁচামরিচের সর্বোচ্চ মূল্য হয়েছিল প্রতি কেজি ৭৬৫ টাকা। আমাদের এলাকার জন্য যেটা বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়ে কাঁচা মরিচের সর্বোচ্চ মূল্য। কাঁচা মরিচের এরকম দাম দেখে আমরা তো বলতে শুরু করেছিলাম যে, ঝালে ঝাল লেগেছে। তবে কাঁচা মরিচের দাম রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি হলেও এর প্রভাব আমরা বুঝতে পারিনি। ঠিক যেমন "বেল পাকলে কাকের কি" এরকম অবস্থা। কারণ আমার পুকুর পাড়ে লাগানো ছিল প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ টি কাঁচা মরিচের গাছ।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, পুকুর পাড়ে লাগানো প্রত্যেকটি মরিচ গাছে এ বছর প্রচুর পরিমাণে মরিচ এসেছিল। যখন মরিচের দাম একেবারেই তুঙ্গে ঠিক তখন পর্যাপ্ত পরিমাণ মরিচ ছিল আমার পুকুর পাড়ের মরিচ গাছে। প্রত্যেক সপ্তাহে দুই দিন আমার মরিচ গাছ গুলো থেকে মরিচ সংগ্রহ করতাম। মরিচ সংগ্রহের সময় খুবই আনন্দ পেতাম। কেননা বাজারে তো ঝালে ঝাল লেগেছিল। শুধু তাই নয়, ঝাল ক্রয় করতে গিয়ে মানুষের পকেটেও ঝাল লেগে গিয়েছিল। ঠিক এরকম মুহুর্তে কাঁচা মরিচ নিয়ে আমাদের পরিবারের কারো কখনোই চিন্তা করা লাগেনি। পুকুরপাড় থেকে কাঁচা মরিচ সংগ্রহের সময় ভাবতাম যে, যদি এ বছর একটু বেশি পরিশ্রম করে ২০০-৩০০ কাঁচামরিচের গাছ পুকুর পাড়ে করতে পারতাম তাহলে অনেক টাকার কাঁচা মরিচ বিক্রয় করতে পারতাম। কিন্তু সেটা তো আর করা হয়নি।

IMG_20231023_090040_206.jpg

IMG_20231024_082223_081.jpg

IMG_20231024_082523_978.jpg

IMG_20231024_082611_114.jpg



তবে আমার পুকুর পাড়ে লাগানো কাঁচা মরিচের গাছগুলো দ্বারা এ বছর অনেকগুলো টাকা বাঁচাতে সক্ষম হয়েছি। কারণ বাজার থেকে তো একটি কাঁচামরিচও কেনার প্রয়োজন পড়েনি। বরং অল্প কয়েক কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রয় করার সুযোগ হয়েছিল। আমার পুকুর পাড়ে লাগানো কাঁচা মরিচের গাছগুলো ছিল দুই ধরনের। অর্থাৎ দুই রকম জাতের কাঁচামরিচের গাছ ছিল। প্রথম জাতের কাঁচামরিচের গাছের আকৃতিটা বেশ ঝাঁকড়া হয়েছিল। এ জাতের কাঁচামরিচের গাছে ডালপালার সংখ্যা তুলনামূলক অনেক বেশি ছিল। তাই এ রকম গাছে কাঁচা মরিচ এসেছিল অনেক পরিমাণে। এরকম গাছের কাঁচামরিচগুলো ছিল লম্বা ধরনের। গাছে কাঁচা মরিচগুলো নিচের দিকে ঝুলে থাকতো। এ ধরনের কাঁচা মরিচ গাছ থেকে সংগ্রহ করা খুবই সহজ ছিল। লম্বা কাঁচা মরিচ গাছ থেকে সংগ্রহের সময় মনের মধ্যে খুবই আনন্দ অনুভব হতো।

আমার পুকুর পাড়ে লাগানো দ্বিতীয় জাতের মরিচ গাছটি হলো আকাশী জাতের মরিচের গাছ। এই জাতের মরিচ গাছটি খুব একটা ঝাঁকড়া এবং বড় হয় না। তবে এই মরিচ গাছের সব মরিচগুলো আকাশের দিকে খাড়া হয়ে থাকে। একই সাথে এ ধরনের মরিচগুলো তুলনামূলক কম লম্বা হয়। তবে আকাশী মরিচে ঝালের মাত্রাটা অধিক। মরিচ গাছ থেকে আকাশী জাতের মরিচ সংগ্রহ করা খুবই সহজ। আকাশী জাতের কাঁচামরিচ গুলো গাছে থাকা অবস্থায় দেখতে অসাধারণ সুন্দর লাগে। এখনো আমার পুকুর পাড়ের মরিচ গাছগুলোতে অনেক কাঁচামরিচ রয়েছে। পুকুর পাড়ে কাঁচা মরিচের গাছগুলো লাগানো ছিল বিধায় এ বছর কাঁচা মরিচের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রভাব থেকে বেঁচে গেছি।

IMG_20231023_090108_886.jpg

IMG_20231023_090423_109.jpg

IMG_20231024_081735_557.jpg

IMG_20231023_082327_955.jpg

IMG_20231023_090319_325.jpg



আমার মরিচ গাছগুলো থেকে ঝাল সংগ্রহের পাশাপাশি আমি মরিচ গাছগুলোর পর্যাপ্ত পরিমাণে যত্ন নিয়ে থাকি। পুকুরপাড় উঁচু একটি জায়গা তাই মরিচ গাছগুলোকে মাঝেমধ্যে পানি সেচ দেওয়া প্রয়োজন। নিয়মিত মরিচ গাছগুলোতে পানি সেচ দেওয়ার ফলে প্রায় সবগুলো মরিচ গাছে নতুন করে আবার ফুল এসেছে। মরিচ গাছ থেকে মরিচ সংগ্রহ যেমন আমার কাছে আনন্দদায়ক ঠিক তেমনি মরিচ গাছে নতুন ফুল আসা দেখে আরো বেশি আনন্দ অনুভব করছি। আশা করছি মরিচ গাছে আরও অনেক মরিচ আসবে।

IMG_20231024_082138_401.jpg

IMG_20231024_082208_701.jpg



সুপ্রিয় বন্ধুগণ, নিজের আবাদ করা যেকোনো ফসল ঘরে তোলার মুহূর্তটা অত্যন্ত আনন্দের হয়। ঠিক তেমনি নিজ হাতে লাগানো আমার পুকুর পাড়ের মরিচ গাছ গুলো থেকে মরিচ সংগ্রহের মুহূর্তটা অত্যধিক আনন্দের হয় আমার জন্য। তাই আমি চেষ্টায় আছি আগামীতে আমার পুকুর পাড়ে আরো অধিক মরিচ গাছ লাগানোর। যাহোক, আমি আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনারা আপনাদের পুকুর পাড়ের জমিতে বা অন্য জমিতে মরিচ চাষ করতে আগ্রহী হবেন।



১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 

বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূল্যের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে আমাদের সকলেরই উচিত আশেপাশে এই ধরনের শাকসবজি সহ মরিচ গাছ লাগানো। আমাদের এলাকায় তো মরিচের দাম কম হয়েছিল ঢাকাতে তো দেখলাম বারোশো টাকা পর্যন্ত হয়েছিল। যাইহোক আপনাদের লাগানো গাছে অনেক মরিচ হয়েছে এটা দেখে ভালো লাগলো।

 last year 

নিজের জমিতে বা, ক্ষেতে কোন কিছু উৎপাদন হলে নিজের কাছে তখন খুবই ভালো লাগে। আর নিজের হাতে ফসল তোলার আনন্দ খুব অন্যরকম হয়ে থাকে। পুকুর পাড়ে মরিচ
চাষ করেছেন জেনে খুব ভালো লাগলো । অনেক মরিচ ধরেছে। মাঝে মাঝে মরিচের যে দাম বাড়ে তাতে নিজে চাষ করলে পরিবারের চাহিদা পূরণ করা যায়। মরিচ গাছ থেকে কাঁচা মরিচ সংগ্রহের অনুভূতি আমাদের মাঝে সুন্দর করে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

 last year 

অনেক ভালো একটি পরিকল্পনা। যেহেতু পুকুর পাড়ে খালি জায়গা গুলো পড়ে থাকে। সেখানে সবজি বাগান করলে বেশ ভালোই হয়। পানি গুলো খুব সহজে পুকুর থেকে দেওয়া যায়। অনেক খরচ কমে যায় যেহেতু মরিচের চাহিদা গুলো সেখান থেকে পূরণ করতেছেন। আপনার মত আমারও আফসোস হচ্ছে আপনি যদি বেশি মরিচ গাছ লাগাতেন তাহলে অনেক টাকার মরিচ বিক্রি করতে পারতেন। বেশ ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি পড়ে।

 last year 

যখন আমরা কোন জিনিস জমিতে রোপন করি আর সেই জিনিসটা কে যদি প্রতিনিয়ত যত্ন করা যায় তাহলে অবশ্যই সেটাতে ভালো ফলন পাওয়া যাবে এটাই স্বাভাবিক। এ যেমন ধরুন মরিচ গাছগুলো উপরে থাকায় আপনি মাঝে মাঝে সেখানে সেচের ব্যবস্থা করেছিলেন যার কারণে মরিচের গাছগুলো এখন পর্যন্ত তরতাজা এবং ভালো ফলন দিচ্ছে। পুকুর পাড়ে এরকম মরিচের গাছ লাগিয়ে অনেকটাই লাভবান হয়েছেন বোঝা যাচ্ছে। মরিচ সংগ্রহের অনুভূতি আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

আপনার পুকুর পাড়ের মরিচ গাছগুলি অনেক ভালো ফলন দিয়েছে। অনেক সুন্দর সুন্দর বিভিন্ন জাতের মরিচ গাছ আপনি রোপন করেছেন। আমার নিজের কাছেও এরকম বিভিন্ন ধরনের গাছ রোপন করতে অনেক বেশি ভালো লাগে।

 last year 

আপনার পরিকল্পনা কিন্তু বেশ ভালই ছিল। ওই সময় যদি ২০০-৩০০ কাঁচা মরিচের গাছ লাগিয়ে রাখতেন তাহলে হয়তো অনেক টাকা উপার্জন হত। তবে দুর্মূল্যের বাজারে আপনাদের কাঁচা লঙ্কা কিনে খেতে না হলেও আমাদের কিন্তু অনেক টাকা দিয়ে কিনে খেতে হয়েছিল। আমাদের এখানেও খুব সম্ভবত ৫০০ টাকা হয়ে গেছিল কাঁচা লঙ্কার দাম।