ন্যায় ও হালাল জীবনের পথে সংগ্রাম।।

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।

বর্তমান সময়টা এমন এক কঠিন বাস্তবতায় ভরা যেখানে মানুষ বৈধ ও অবৈধ উভয় পথের সংস্পর্শে থাকে। আমরা দেখি চারপাশে মানুষ ইনকামের জন্য হন্যে হয়ে ছুটছে। কেউ বৈধ উপায়ে পরিশ্রম করে উপার্জন করছে, আবার কেউ অবৈধ পথে দ্রুত ধনী হওয়ার চেষ্টা করছে। সুদ, ঘুষ, প্রতারণা, অন্যের হক মেরে নেওয়া, এসব যেন এখন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, সমাজে অবৈধ পথে সম্পদ অর্জনকারীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে, আর তাদের ভিড়ের মধ্যে সত্যিকার সৎ মানুষগুলো যেন হারিয়ে যাচ্ছে।

তবে আশার জায়গা হলো, এই বিপুল ভিড়ের মধ্যেও কিছু মানুষ এখনো হালাল ও ন্যায়ের পথ আঁকড়ে ধরে আছেন। তারা জানেন এই পথে হাঁটা কঠিন, জীবনযাপন করতে অনেক কষ্ট হয়, তবুও তারা সৎ থেকে নিজেদের রিজিক উপার্জন করেন। সত্যের পথে টিকে থাকা কখনোই সহজ ছিল না, এখনো নেই। কিন্তু একজন সৎ মানুষ জানেন, হালাল রিজিকে বরকত আছে, আর অবৈধ রিজিকে শান্তি নেই। তাই হাজারো প্রলোভনের মাঝেও তারা হার মানেন না।

আজকের সমাজে সৎ মানুষদের সবচেয়ে বড় কষ্টের জায়গা হলো- বাজারের অর্থনীতি। আমরা যখন বাজারে যাই, দেখি দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। একটি পণ্য ১০০ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা হলেও তা ১৫০ বা ২০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। কেন? কারণ বাজারে যে সমস্ত মানুষ অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করে তারা পণ্যের ন্যায্য দামের চাইতেও বেশি দিতে রাজি থাকে। এতে করে বাজারদর কৃত্রিমভাবে বেড়ে যায়। এর সরাসরি ভুক্তভোগী হয় তারা, যারা ঘুষ খায় না, সুদ নেয় না, প্রতারণা করে না বরং কঠোর পরিশ্রম করে সামান্য আয় করেন। তাদের আয় দিয়ে সংসার চালানো দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে।

এই বাস্তবতাটা আমাকে ভীষণ মর্মাহত করে। মনে হয়, যদি সবাই সৎ পথে চলতো, তবে বাজারে এই অস্থিরতা তৈরি হতো না। পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকতো, মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারতো। অবৈধ অর্থ সমাজের অর্থনীতিতে ঢুকে পড়ার কারণে সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অথচ আমরা সবাই জানি অন্যের হক মেরে খাওয়ার মধ্যে কোনো সুখ নেই, অবৈধ রিজিকে কোনো বরকত নেই। তবুও মানুষ এই পথ বেছে নেয় শুধুই দ্রুত ধনী হওয়ার লোভে।

কখনো কখনো মনে হয়, সৎ পথে থাকা মানুষগুলোই যেন সবচেয়ে বোকা, কারণ তারা যেখানে কষ্ট করে জীবনযাপন করছে, সেখানে অসৎ মানুষগুলো বিলাসিতায় জীবন কাটাচ্ছে। কিন্তু গভীরভাবে চিন্তা করলে বিষয়টা উল্টো। সৎ মানুষ হয়তো দুনিয়ার কষ্ট পাচ্ছে, কিন্তু তাদের মন শান্ত। তারা রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে, তাদের অন্তরে অপরাধবোধ নেই, তারা জানে তাদের এক টাকাও অন্যায়ভাবে অর্জিত নয়। আর অসৎ মানুষের ভোগ-বিলাস যতই থাকুক, অন্তরে শান্তি থাকে না, তারা সর্বদা ভয়ে থাকে ধরা পড়ে যাবে, সমাজে কলঙ্কিত হবে কিংবা আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

আমাদের সমাজে যদি সবাই একসঙ্গে সৎ থাকার চেষ্টা করতো, তবে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো। বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকতো, মানুষের ভোগান্তি কমতো, এবং সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হতো। দুঃখজনক হলেও সত্য, সেই চেষ্টাটা আমরা করছি না। তাই সমাজে নৈতিক অবক্ষয় বেড়ে যাচ্ছে।

সবশেষে বলবো ন্যায় ও হালাল পথে থাকা যত কঠিনই হোক না কেন, এটা-ই প্রকৃত সফলতার পথ। হয়তো সাময়িক কষ্ট আছে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এর ফল মিষ্টি। সৎ মানুষদের সংখ্যা কম হলেও তারা সমাজের আসল সৌন্দর্য। তাদের কারণেই এখনো পৃথিবীতে কিছুটা ন্যায় ও শান্তি টিকে আছে। তাই আসুন আমরা সবাই চেষ্টা করি সত্য ও বৈধ পথে চলতে, অন্যের হক মেরে নয় বরং নিজের পরিশ্রমে ইনকাম করে জীবন পরিচালনা করতে। এভাবেই ধীরে ধীরে অবৈধ অর্থনীতির চাপ কমবে এবং সমাজে প্রকৃত ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হবে।

সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।

Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP

Click Here For Join Heroism Discord Server

💖💖💖সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖