আবোল-তাবোল জীবনের গল্প [ পরিবার ]
হ্যালো বন্ধুরা,
আমাদের জীবনে আমরা তখনই সব দিক হতে সেরা সময় পার করি কিংবা সকল সুবিধা দারুণভাবে উপভোগ করি, যখন আমরা পরিবারের সাথে মিলেমিশে থাকি। কারন পরিবার মানেই মিলেমিশে থাকা, পরিবার মানেই সুখ-দুখে পাশে থাকা, পরিবার মানেই সময়গুলোকে ভিন্নভাবে উপভোগ করা, পরিবার মানেই সব সময় কাছে পাওয়া এবং সম্পর্কগুলোকে সতেজ-সজীব রাখা।
এর বাহিরেও কিছু কথা আছে, এটা আমরা জানি এবং স্বীকার করে নেই। কারন আধুনিক সভ্যতায় প্রবেশ করে আমরা বড্ড বেশী আপন কেন্দ্রীক হয়ে গেছি। যার কারনে আমাদের কাছে ব্যক্তি স্বার্থটা দিন দিন বড় হয়ে যাচ্ছে এবং আমরা অন্যের জন্য কিংবা সম্পর্কের খাতিরে ছোট খাটো বিষয়েও ছাড় দিতে রাজি হচ্ছি না। এটা আমাদের সামাজিক মূল্যবোধের উপর দারুণ একটা আঘাত বলে আমি মনে করি এবং এর পেছনে আমরা নিজেরাই প্রকৃত দায়ী।
কারন আমাদের মানসিকতার পরিবর্তনের কারণেই আজ পরিবারগুলোর সম্পর্ক হুমকির মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে, আমাদের ব্যক্তি কেন্দ্রীক স্বার্থের জন্যই আজ যৌথ পরিবারগুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে এবং আমরা দিন দিন একাকিত্বকে বরণ করে নিচ্ছি। কিন্তু প্রশ্ন হলো এরপরও কি আমরা ভালো থাকছি? আমাদের স্বার্থগুলো কি পূর্ণতা পাচ্ছে? যদি না-ই হয় তাহলে কেন আমরা পরিবার হতে দূরে সরে যাচ্ছি এবং নিজেকে স্বার্থবাদী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছি। আসলে আমাদের নিজ কেন্দ্রীক ভাবনাগুলো আমাদের পরিবার হতে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
আমি জানি হয়তো আপনি আমার সাথে ভিন্ন মত পোষণ করতে পারেন, হয়তো আপনার কাছে হাজারও যুক্তি থাকতে পারে কিন্তু আপনি এটা জানেন না আমিও একটা সময় আপনার মতো চিন্তা পোষণ করতাম এবং নিজের ভালোটা ভিন্নভাবে বুঝার চেষ্টা করতাম। কিন্তু একটা সময় পর আমার ভুল ভাঙ্গে এবং আমিও বুঝতে পারি, পরিবার মানেই পরিবার এর কোন বিকল্প হয় না আর পরিবার ছাড়া সময়গুলোকে কোনভাবে রঙীন করা যায়না। তার মাঝে হয়তো দামী কিছু ভোগ করার সুযোগ থাকে কিন্তু বিশ্বাস করে সেখানে নির্মল আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায় না।
আর একটা বিষয় পরিবারে সবাই একই রকম হয় না, কেউ যেমন একটু কম বুঝে ঠিক তেমনি কেউ একটু বেশী বুঝি। হাতের পাঁচটা আঙুল যেমন সমান হয় না ঠিক তেমনি পরিবারের সকলের অবস্থান এবং বোধশক্তি একই রকম হয় না। আবার কারো অবস্থান যেমন উপরে থাকে, ইনকাম একটু বেশী হতে পারে ঠিক তেমনি কারো অবস্থান নিচু হতে পারে এবং ইনকাম কিছুটা কম হতে পারে। কিন্তুে এগুলোকে দুর্বলতা বিবেচনায় নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা একদমই ঠিক না। হতে পারে তার অবস্থান নিচ কিন্তু তবুও তিনি আমাদের পরিবারের সদস্য এবং আপনজন।
কিন্তু বাস্তবতা হলো আমরা কখনো এই বিষয়গুলোকে বিবেচনায় রাখি না এবং অন্যদের জন্য কোন ব্যাপারে কোন ধরনের ছাড় দেয়ার চেষ্টা করি না। বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদের সাথে একটা ঝামেলা তৈরীর মাধ্যমে দূরত্ব সৃষ্টি করার চেষ্টা করি এবং তারপর নিজের সুবিধার কথা বলে পরিবার হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই। জীবন সত্যি অনেক নির্মম, অনেক কিছুর নির্মম স্বাক্ষী হয়ে থাকে আর আমরা সেই নির্মম সময়ের মাঝ দিয়ে ভিন্ন কিছু পাওয়ার মিথ্যে চেষ্টায় লেগে থাকি।
আসুন একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করি সব কিছু, পরিবার এবং পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে। সময় ঠিক চলে যাবে কিন্তু আমাদের ভুল মানসিকতার কারনে আমরা হারাবো অনেক কিছু, পরবর্তীতে আফসুস করলেও সেই সুযোগ আর ফিরে আসবে না। তাই সুযোগ থাকতেই সুযোগ ব্যবহার করার চিন্তা করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। পরিবর্তন আসুক আমাদের মানসিকতায় এই প্রত্যাশায় আজ বিদায় নিলাম তবে পরিবার নিয়ে আরো একটি পর্ব শেয়ার করবো পরবর্তীতে।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||




আপনি খুব সুন্দর কথা লিখেছেন ভাইয়া। আর বিশেষ করে আজকের লেখাটির মূল বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।কারণ আমাদের চারপাশের সমাজের বা আমাদের নিজের পরিবারেই অনেক সময় দেখি যে যারা একটু বেশি ইনকাম করে তাদের অনেক দাম এবং যারা একটু কম ইনকাম করে তাদের খুব কম দাম দেওয়া হয়। আমি মনে করি এটি ঠিক নয়। কারণ সবার এবিলিটি তো আর একরকম হতে পারে না!
অধিকাংশ পরিবারের দৃশ্যপট এখন এই রকম আপু, যার ইনকাম বেশী সে একসাথে থাকতে চায় না একদমই।
হ্যাঁ ভাইয়া আপনি বরাবরের মতোই শিক্ষণীয় বিষয় কিছু না কিছু রাখবেন। এবং কি আজকের পোস্টটিতে আমি যা দেখলাম সম্পুর্ন এই আমাদের জন্য একটা শিক্ষনীয় বিষয়। আমরা দিন দিন মানুষ বড় স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছি। শুধু ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং ব্যক্তিস্বার্থের পিছনে দৌড়াচ্ছি। আমরা বুলে যাচ্ছি আমাদের পরিবার আছে, আমরা বুলে যাচ্ছি আমাদের আত্মীয় স্বজন আছে, আমাদেরকে এই দিকগুলো থেকে ফিরে আসতে হবে। আগে মানুষের ঘরে চাউল ছিলনা দিনে তিনবেলা খেতে পারতো না এক বেলা খেতে কষ্ট হয় কিন্তু প্রতিটি পরিবারে সুখের অভাব ছিল না। আর আমি মনে করি এই বিষয়গুলোর সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে হিংসা। আর হিংসা টা মানুষ মানুষের ভিতরে তৈরি করছে। নিজে থেকে কেউ কখনো পরিবর্তন হয়না। সমাজ সমাজের মানুষ তাকে পরিবর্তন করতে বাধ্য করে। তাই আমি মনে করি আমরা আমাদের নিজেদের জ্ঞান বুদ্ধি কে কাজে লাগিয়ে আমাদের পরিবারকে সব সময় ঠিক রাখা এবং পরিবারের সাথে যুক্ত থাকা। আপনি যা বলেছেন তাই যদি আমরা স্বার্থসিদ্ধি উদ্ধারের জন্য আলাদা হয়ে যাই একাকীত্ব বসবাস করতে চাই কিন্তু আসলে আমরা ওই সুখ পাই না। একেবারে সত্যি এখানে বিন্দুমাত্র কোনো মিথ্যার ছায়া নেই। সর্বোপরি আমাদের সবার উচিত নিজের জ্ঞান নিজে খরচ করে চলা। আমাদেরকে এত সুন্দর একটা পোস্ট উপহার দেওয়ার জন্য ভালোবাসা অবিরাম ভাইয়া।
চেষ্টা করি ভাই, যতটা সম্ভব নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার। আপনাদের ভালো লাগে এটাই আমার স্বার্থকতা।
অনেক সুন্দর ভাবে কথাগুলো উপস্থাপন করেছেন ভাইয়া, তবে এটা সত্যি কথা, এই পারিবারিক সম্পর্ক গুলো নিয়ে একেক জন একেক কথায় মন্তব্য করবে,
আমরা হয়তো সময় আর পরিস্থিতির কারণে ভেবে থাকি যে পরিবার থেকে বা আত্মীয় স্বজন থেকে দূরে থাকাটাই ভালো,
কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দিন শেষে দেখা যায়, আমরা তাদেরকেই স্মরণ করি, সময়ের সাথে সাথে আমাদের এই অস্বাভাবিক দিনকাল কে ও প্রাধান্য দিচ্ছি বেশি, তবে দিনশেষে এটাই চাইবো, যে, আমরা আমাদের ভুল বুঝতে পারি, ও সময় এর যেন সঠিক ব্যবহার করি।
দিন শেষে আমরা যখন একা হয়ে যাই তখন বিষয়টি ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারি। ধন্যবাদ
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
আপনার শেয়ার করা লেখা আমার দৈনন্দিন জীবন যাপনে আমার জন্য খুবই উপযোগী। ভাগ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
আপনাকেও ধন্যবাদ।
আপনাকে স্বাগতম
ভাইয়া সত্তি আমরা মানুষ জাতি দিন দিন স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছি। আমরা দিন দিন ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং নিজের স্বার্থকে রক্ষা করার জন্য দৌড়াচ্ছি। আবার একে অপরের প্রতি হিংসা বিদ্বেষ আমাদের মধ্যে লক্ষ্য করুন বাড়ছে। কিন্তু এটা ঠিক নয় এসমস্ত নেতিবাচক দিকগুলো পরিহার করে আমাদের সুস্থ ধারায় ফিরে আসা দরকার। ভাইয়া আপনার এই শিক্ষামূলক পোস্ট পড়ে আমার অনেক ভালো। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
হুম ঠিক বলেছেন, আসালে স্বার্থের চিন্তা হতেই আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটছে।
পরিবার থেকে দূর থাকলেই পরিবারের অপূর্ণতা বোঝা যায়। পরিবার ছাড়া কোন মানুষই সঠিকভাবে জীবন যাপন করতে পারে নাহ।প্রতিটি মানুষই বয়সের ধাপে ধাপে নিজের চিন্তা ধারা তুলে ধরতে চায়।আপনি জীবনের বাস্তবতা অনেক সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। আপনার লেখনি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। 😍😍😍
জ্বী ঠিক বলেছেন ভাই, কিন্তু আমরা শুরুতেই বুঝতে পারি না। ধন্যবাদ
আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা সুন্দরভাবে সাজিয়েছেন।আমি আপনার সঙ্গে একমত পোষণ করছি ভাইয়া, পরিবারের সম্পর্ক হয় মধুর সম্পর্ক।যা কোনো কিছু দিয়ে পরিমাপ করা যায় না, একজনের পাশে অন্যজন ঢাল হয়ে দাঁড়াতে সদা প্রস্তুত এটাই সত্যিকারের পরিবার।
সবার মাঝে ভালোবাসা,বিশ্বাস,আনন্দ,অনুপ্রেরণা, দুঃখ -কষ্ট সবকিছু ভাগ করে নেওয়ার ক্ষমতা।এককথায় বলতে গেলে একে অপরের পরিপূরক এবং দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ সবাই।তাই আমাদের ভুল মানসিকতার পরিবর্তন করে সময় ও সুযোগের যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
পরিবার মানে ভালোবাসার প্রতিটি মানুষের সাথে মিলেমিশে থাকা। যার পরিবারের একটি মাত্র সদস্য উপস্থিত সেই কেবল বুঝতে পারে পরিবারের মর্ম কতটুকু। আর এটাও ঠিক একটি পরিবারের সকল সদস্য একরকম হয় না একেকজনের ব্যবহার একেক রকম হয়ে থাকে।
আমাদের সকলেরই উচিত প্রতিটি সদস্যের সাথে ছোট ছোট কিছু আত্মত্যাগ এবং খুঁটিনাটি বিষয় বস্তু নিয়ে একসাথে মিলে মিশে থাকা।
খুব সুন্দর করে লিখেছেন আপনি ভাইয়া।
পরিবার নিয়ে এত সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন যে এখন ইমোশনাল হয়ে গেলাম।
অনেক অনেক ভালোবাসা রইলো আপনার জন্য ভাই।
প্রত্যেক টা কথা ভালো লাগছে আপনার ভাই, মনে হচ্ছে সেসব যদি আপনার মুখে শুনতে পেতাম তাহলে বুঝি আরও বেশি ভালো লাগতো।
পরিবার আসলেই অন্যরকম একটা কিছু। আপনি যত বিপদেই থাকেন না কেন, হয়তো বা আপনার ভুলের জন্য কিছু কথা শোনাবে কিন্ত আপনাকে সেখান থেকে উদ্ধার না করে ফিরবে না। এটাই হচ্ছে পরিবার। শুভ কামনা রইলো ভাই আপনার জন্য।