পাবলিক লাইব্রেরির সদস্য সংগ্রহ
আমি বই প্রেমিক মানুষ। ছোট থেকেই বউ পড়তে প্রচুর ভালবাসি। বলতে পারেন বই পড়া মোটামুটি নেশার মত। কতদিন যে গেছে বই পড়তে নিয়ে খাওয়া-দাওয়া ঘুম শিকেয় তুলে বই পড়েছি তার ইয়ত্তা নেই৷ আরেকটা মজার কথা বলি,আমি সব থেকে বেশি গল্পের বই শেষ করেছি পরীক্ষার মাঝে।
পরীক্ষার মাঝে পড়ার বই এর বদলে আমার আগ্রহ বাড়ে গল্পের বইয়ের। যাই হোক অনেকদিন যাবৎ বই পড়া থেমে আছে। কারন নতুন বই কেনা হচ্ছে না। বেশ কষ্টে ছিলাম।এর মাঝে একদিন রাতে একজন বন্ধু নক দিল।বলল বন্ধু আমরা এলাকায় একটি পাবলিক লাইব্রেরি করতে চাচ্ছি। আগামীকাল মিটিং বিকেলে চলে আসিস।
এমন একটি ভাল কাজের অংশ না হয়ে থাকা যায়। পরেরদিন মিটিং এ মোটামুটি একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হল,এরপর আমরা আমাদের থানা নির্বাহী অফিসার এর সাথে যোগাযোগ করলাম আমরা। কেননা বর্তমানে প্রতিটি থানার দায়িত্ব থানা নির্বাহী অফিসার। উনাকে জানাতেই উনিও খুশি হয়ে উঠলেন। বললেন তোমরা দারুন একটি উদ্যোগ নিয়েছ। আমি গোবিন্দগঞ্জ এর মত জায়গায় একটি লাইব্রেরি নেই এটি আমাকেও ভিষন কষ্ট দিত। তোমরা উদ্যোগ নাও আমি আছি পাশে।
সেদিন থেকেই আমাদের প্রচার প্রচারণা শুরু হল। আমরা প্রথমে ফেসবুকে প্রচার চালালাম,তারপর স্কুলে স্কুলে গেলাম। এরপর সদস্য সংগ্রহের তারিখ ঘোষণা করলাম। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম বেশি সারা পাব না।কারন বর্তমান প্রজন্ম ফোনেই বেশি আসক্ত।তাদের সময় কাটে শর্টস আর রিলস দেখে।তারা যে বইয়ের প্রতি আগ্রহ দেখাবে এটা ভাবাও বোকামি।
যাই হোক গত শুক্রবার ছিল আমাদের সদস্য সংগ্রহের প্রথম দিন। আমরা সদস্য ফর্ম বিতরণ করছিলাম এবং সাথে সাথেই তা পূরণ করে নিচ্ছিলাম।আমাদের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল সকাল ১০টায়। আমাদের সবার ধারণা ব্যর্থ করে দিয়ে প্রচুর বইপ্রেমী ভিড় জমালো।আমরা ফর্ম দিতে নিতে হিমশিম খাচ্ছিলাম।
প্রাইমারি লেভেল এর শীক্ষার্থী থেকে শুরু করে কর্মজীবী ও গৃহীনী পর্যন্ত। এর মাঝে থানা নির্বাহী অফিসার এসে একটি সুসংবাদ দিলেন। আমাদের লাইব্রেরির জন্য নির্দিষ্ট কোন কক্ষ ছিল না। আমাদের কার্যক্রম চালাচ্ছিলাম মুক্তমঞ্চে। থানা নির্বাহী অফিসার আমাদের জন্য একটি রুমের বন্দোবস্ত করে দিয়েছেন এবং এটাও জানালেন যে আমাদের বইয়ের জন্য উনি বরাদ্দের ব্যবস্থা করে দেবেন।
আমাদের কার্যক্রম চালালাম বিকাল ৪টা পর্যন্ত।এর মাঝে প্রায় ৮০০সদস্য আমরা সংগ্রহ করে ফেলেছি। যেটা আমাদের ধারনার থেকেও চারগুণ বেশি।বর্তমান প্রজন্মের উপর থেকে আমার ভরসা প্রায় উঠেই গেছিল,তবে আজ কিছুটা আশা ফিরে পেলাম।
OR
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
টুইটার লিংক
আপনি বই পড়তে অনেক পছন্দ করেন আমরা সবাই জানি। বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত সবার। পাবলিক লাইব্রেরির সদস্য সংগ্রহ করতে লেগে পড়েছেন জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। শুভকামনা রইলো ভাইয়া।
সত্যি দেখে বেশ ভালো লাগল আপনাদের উদ্যোগটা। এবং একেবারে ৮০০ সদস্য সত্যি ভাবা যায় না। আশাকরি আপনাদের পাবলিক লাইব্রেরি টা খুব দ্রুতই এগিয়ে যাবে। ইদানিং আমিও মোটামুটি বই পড়ি। সত্যি বলতে এর চেয়ি সুন্দর মূহর্ত আর হয় না।
ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনার প্রার্থনা ঈশ্বর মঞ্জুর করুন।
পরীক্ষার মাঝে গল্পের বই পড়ে, এরকম লোক খুবই কম খুঁজে পাওয়া যাবে ভাই। যাইহোক, আপনাদের সবার এই উদ্যোগটাকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হয়। এখনকার যুগে সবাই তো মোবাইল আর শর্ট রিলস নিয়েই ব্যস্ত। যাইহোক, আপনারা যে এখনো পর্যন্ত ৮০০ জন লোকের বই পড়ানোর ব্যবস্থা করতে পেরেছেন, এটাই অনেক। আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো ভাই।
বর্তমান সব ছাত্রছাত্রী দের পাবলিক লাইব্রেরি তে যেতে দেখি।পড়ালেখা করার জন্য লাইব্রেরি অনেকের খুব পছন্দের একটি জায়গা হয়ে উঠেছে। আপনিও সদস্যপদ গ্রহণ করেছেন।শুভকামনা আপনার জন্য,ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপু। হ্যা লাইব্রেরি পড়ালেখার আদর্শ জায়গা।