পৃথিবীর সব থেকে দামি তেল কি জানেন, তেলবাজি।।
হ্যালো বন্ধুরা,
সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে ভিন্ন ধরনের একটি ব্লগ শেয়ার করবো। আর সেটা হলো তেলবাজি। আশা করি ব্লগটি পড়লে অনেক মজা পাবেন।
পৃথিবীর সব থেকে দামি তেল কি জানেন, তেলবাজি। আর সেটা আমরা বাংলাদেশিরা ব্যবহার করে থাকি। এই তেল আমদের দেশের মানুষ বিভিন্ন জাগায়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকে। আমাদের দেশে টাকা পয়সা দিয়ে যে কাজ না হয়, সেটা তেলবাজি দিয়ে হয়ে যায়। এমন হাজারো উদাহরন আমি আপনাদের সামনে পেশ করতে পারি। যেমন ধরেন কোন মহিলার নামের আগে হযরত লাগিয়ে দিয়ে বললেন হযরত সকিনা, এটা কোন লেভেলের তেলবাজি চিন্তা করেন। আবার কোন মহিলা অন্য মহিলাকে বললো যে পৃথিবীতে কোন মহিলা পীর সাহেবা নেই। কিন্তুু আমি আপনাকে আমার পীর হিসাবে মান্য করি। আপনার জন্য আমার জীবন যৌবন সব সপে দিতে রাজি আছি। এটা আরো বড় লেভেলের তেলবাজি। স্বার্থের জন্য মানুষ কত রকমের তেলবাজি করতে পারে সেটা কল্পনাও করতে পারবেন না। আবার যার তেলবাজি করছে তার ক্ষমতা শেষ হলেই,পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে অন্যজনের তেলবাজি করবে।
বাংলাদেশের সব সেক্টেরে তেলবাজি চলে। তেলবাজির মাত্রা এতই বেড়ে গেছে যে সেটা এখন পার্লামেন্টেও চলে। সেখানে এক নেতা অন্য নেতার পিছনে তেলবাজি করে। একটি পদের জন্য,চাকরির জন্য তেলবাজি করে। নতুন করে কিছু তেলবাজ বের হয়েছে। যেমন ধরেন আপনি কোন নেতার সাথে হেলিকপ্টারে করে চট্রগ্রামে গেলেন। সেখানে গিয়ে সমাবেশে বললেন ঢাকা থেকে চট্রগ্রামের রাস্তা এত সুন্দর যে দেখে মনে হয় ইউরোপ আমেরিকাতে আছি। চিন্তা করে এটা কোন লেভেলের তেলবাজি,হেলিকপ্টারে গিয়ে রাস্তার প্রশংসা করে। আমাদের দেশের ক্রিকেটারগনও আজকাল তেলবাজি শুরু করেছে। যারা তেলবাজি করে তারা খারাপ খেললেও দলে জায়গা থাকে। আর যারা তেলবাজি করতে পারে না তারা ভালো খেললেও দল থেকে দুরে রাখে। পরে দর্শকরা আন্দোলন বা মানব বন্দন করে তাদের দলে ফিরাতে হয়।
আমাদের দেশে যেকোন কাজের সব থেকে বড় সার্টিফিকেট হলো তেলবাজি। এটা করতে পারলে আমাদের দেশে যোগ্যতা ছাড়াও অনেক পদে জায়গা পাওয়া যায়। যেমন ধরেন ডাক্তারির সার্টিফেট নাই,মেডিকেল টার্ম সম্পর্কে তেমন ভালো ধারনা নেই সেও তেলবাজি করে স্বাস্থমন্ত্রী হতে পারে। কৃষি বিষয়ে পড়াশোনা করেও পরমাণু শক্তি কমিশনের সচিব হতে পারে। মাস্টার্স ডিগ্রি পাশ করেই তেলবাজির কারনে বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী,সচিব হওয়া যায়। বাংলাদেশে তেলবাজি করতে পারলে সব কিছু সম্ভব।
আমাদের দেশে সব জাগায় তেলবাজি আছে। এখন আমাদের অফিসের কথা বলি। কিছু মানুষ সম্পূর্ণ যোগ্যতা নিয়ে,ন্যায় নিষ্ঠার সাথে কঠোর পরিশ্রম করে ১৭/১৮ বছরে এসিসট্যান্ট ম্যানাজার বা সর্বউচ্চ ম্যানাজারের দায়িত্ব পায়। আর কিছু লোক তেলবাজি করে মাত্র ৮/৯ বছরে এজিএম,ডিজিএমের এর পদ নিয়ে নেয়। এত অল্প সময়ে কিভাবে এত বড় পদ পেল...এক মাত্র তেলবাজি।
আমার নিজের চোখে দেখা একটি উদাহরন বলি। আমাদের পরিচালক মহদ্বয় অনলাইনে একটি কনফারেন্স ডেকেছে। সেখানে যাওয়ার জন্য আমারও ডাক পড়লো। কনফারেন্স শুরু হওয়ার কথা বিকাল তিনটার সময়। যাদের ডাক পড়েছে আমরা সবাই তিনটার সময়ে গিয়ে বসে আছি। আমাদের সামনে বিশাল বড় পর্দা। বিডিও এর মাধ্যমে কনফারেন্স করবেন। তো সবাই বসে থাকতে থাকতে সাড়ে তিনটা বেজে গেল। পরিচালক মহদ্বয় আসতেছে না। এমন সময় একজন তেলবাজের ওয়াশরুমে যাওয়ার প্রয়োজন পড়লো। সে ওয়াশ রুমে চলে গেল। আর তখনই পরিচালক মহদ্বয় এসে সাথে সাথে কনফারেন্স শুরু করে দিলেন। প্রথমেই ঐ ওয়াশরুমে থাকা তেলবাজের নাম ধরে ডাকতে শুরু করলেন। কিন্তুু সে তো ওয়াশরুমে।
সেই তেলবাজের একজন চামচা তার মোবাইলে কল দিয়ে জানালো যে পরিচালক মহদ্বয় তাকে ডাকছে। তখন সে ওয়াশ রুম থেকে দৌড়ে আসলো। আসতে আসতে পেন্টের বেল্টটা লাগালো কিন্তুু পেন্টের চেইনটা লাগানোর সময় পায়নি.হা হা হা।এসেই জী স্যার,জী স্যার,আমি আছি স্যার শুরু করলো। তখন বুঝতে পেরেছি কত বড় তেলবাজ। এটা মাত্র সেম্পল বললাম। আরো অনেক কাহিনী শুনেছি সে গুলো উল্লেখ করলাম না। ওয়াশ রুমে আছে সেটা বললে কি চাকরি চলে যেত...? মানুষের কি ওয়াশরুমে যাওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে না...। সে আবার অফিসে কে কোন গাড়িতে আসবে যাবে সে বিষয়টা ডিল করে। বর্তমানে হরতাল অবরোধে কাউকে গাড়ি না দিলেও সে নিজে অফিসের গাড়ি ব্যবহার করে। চিন্তা করেন কত নাম্বারের খারাপ মানুষ।
যদি পরিচালক মহদ্বয় বলে থাকে যে যতদিন হরতাল অবরোধ থাকবে ততদিন রাস্তাঘাটে গাড়ি বের করা নিরাপদ নয়। তাহলে সবার গাড়ি বন্ধ থাকবে। সে নিজে একা একটি গাড়ি নিয়ে চলে যায় আর বাকিরা নিজ নিজ দায়িত্বে পাবলিক গাড়ি দিয়ে যাওয়া আসার করতে হয়। আন্দোলন কারীরা তেলবাজের বাড়ি দেখলে তাকে সালাম করবে। অফিসের যে কোন কাজে বা অনুষ্ঠানে সে এবং তার লোক গুলো তেলবাজি করে। হয়তো সবার কর্মস্থলেই এমন তেলবাজ লোক দেখতে পাবেন। তাদেরকে দেখলে আপনার মনে কি অনভূতি হয় কমেন্ট করে জানাবেন। আমার মন চাই তাদের ধরে ধরে শীতের মধ্যে বুড়িগঙ্গার পানিতে সারারাত দাড় করিয়ে রাখি,হি হি হি। আজ বিদায়।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা,ডিজাইন করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
বাঙালিরা তেলবাজির উপর টিকে আছে। আপনি যখন কাউকে অনেক প্রশংসা করবেন বা তাকে অন্যদের তুলনায় ভিন্নভাবে উপস্থাপন করবেন যেটা তার কাছে খুবই আনন্দের হবে কিন্তু প্রকৃত সার্থকতা এখানে বিদ্যাবর নেই । যাই হোক সে বিষয়ে অনেকগুলো উদাহরণ টেনেছেন কি আর করার তেল বাজিতে চলবে।
জী ভাইয়া তাদের তেল বাজি দেখলে মনে হয় ,ইহার উপরে ডিগ্রী নিয়েছে,হা হা হা। ধন্যবাদ।
আপনার জেনারেল রাইটিং পোস্টগুলি পড়তে আমার ভীষণ ভালো লাগে ভাইয়া। অনেক মজা পেয়ে থাকি পোস্টগুলি পড়তে।বাস্তবসম্মত কিছু কথা। জি ভাইয়া অনেক সময় টাকা পয়সা দিয়েও কোন কাজ হয় না কিন্তু তেল বাজি দিয়ে ঠিকই হয়ে যায়। প্রতিটা মানুষ স্বার্থের জন্য তেলবাজি করতে থাকে। স্বার্থ যখন শেষ হয়ে যায় তার তেলবাজি ও শেষ হয়ে যায়। বিশেষ করে নেতাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। আমি দেখেছিলাম সম্ভবত নায়ক রিয়াজ বলেছিল যে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের রাস্তা ইউরোপের মত। ভাইয়া এখন প্রতিটা মানুষ তেল মারতেছে যে ভালো তেল মারতে পারে তারই ভালো। যোগ্যতা ছাড়াও অনেক পদে জায়গা হয়ে যায় সেটা হচ্ছে তেলবাজির কারণে। বর্তমানে যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষ কিন্তু চাকরি পাড়ছে না কিন্তু মামা খালু থাকায় তারা এমনিতেই চাকরি পেয়ে যাচ্ছে। উদাহরণ দিতে গেলে চারিদিকে অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে ভাইয়া। যাই হোক আপনি বাস্তবসম্মত একটা বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। ভালো লাগলো
জী ভাইয়া এখন সবাই তেল বাজির উপরে টিকে আছে। লজ্জা করে না তাদের। ধন্যবাদ।
বাংলাদেশে তেল সস্তা ভাই।তাই এত এত তেলবাজ।যে যত তেল দিতে পারবে তার উন্নতি তত দ্রুত হবে।আর এই তেলবাজ গুলো একদম মেরুদন্ডহীন হয়।আপনার উদাহরণটি পড়ে মজা পেলাম।ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।
জী ভাইয়া বাংলাদেশের এখন যা হয় সব কিছু তেল দিয়ে হয়। তেল ছাড়া কিছু হয় না। ধন্যবাদ।
একদম পারফেক্ট বলছেন আপনি। এই পৃথিবীতে যে যত তেলবাজি করতে পারে তার স্থান তত বেশি শক্ত। সেটা অফিস আদালতে কিংবা যে কোন কাজের ক্ষেত্রে। এছাড়াও বন্ধু-বান্ধবের ক্ষেত্রে বলেন অথবা সমাজের ক্ষেত্রে বলেন। যে কোন পর্যায়ে তেলবাজি টা বেশ চলতেছে এখন। আমার কাছে আপনার লেখা গুলো খুবই পছন্দ হয়েছে।
এমন কোন জায়গা নেই যে,বাঙ্গালীরা তেল ব্যবহার করে না। ধন্যবাদ।
আমি একটা কথায় জানি তেলবাজি করা মানুষ কখনো ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন হতে পারে না। ঐ তেলবাজি ক্ষমতা টাকা পয়সার লোভেই বেশি করা হয় ভাই। তেলবাজি করতে এতো অভ্যস্ত যে প্যান্টের চেইন লাগাতে ভুলে গেছে ভেবে দেখেছেন হা হা। আর এগুলো যারা করে তাদের তো দোষ আছেই যারা এগুলো সাধুবাদ জানাই তাদের দোষ আরও বেশি।
জী ভাইয়া কিছু কিছু মানুষ আছে,তেল বাজির লিমিটি ক্রস করে ফেলে। ধন্যবাদ।
বুড়িগঙ্গার জলে চুবালেও তেলবাজদের তেলবাজি কমবে না ভাইয়া।তেলবাজদের কাজেই তেলবাজি করা।তেলবাজের ঘটনা গুলো হাস্যকর।পোস্ট টিতে বিনোদন আছে।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট টি আমাদের সাথে শেয়ারে করার জন্য।
তাদের ধরে ধরে হাঙ্গরের সামনে ফেলে দেওয়া দরকার,হে হে হে। ধন্যবাদ।