বই রিভিউ ( ইস্তানবুল প্রিয়- ইমরান কায়েস )!!

বাংলাদেশের মেয়ে শিরিন। পেশায় ডাক্তার বয়সটা প্রায় চল্লিশ। নিজেকে সবকিছু থেকে একটু বের করতে ঘুরতে চলে যায় তুরস্কের ইস্তানবুল শহরে। ইস্তানবুলে শিরিনের বান্ধবী তহমিনা থাকত। দুজনের পরিচয় ঢাকায় থাকতে ফ্রেঞ্চ ভাষা শিখতে গিয়ে। তহমিনা ইস্তানবুলের একটা কলেজের হিস্ট্রি শিক্ষক। তহমিনার কাছে গিয়ে বেশ অন‍্যরকম অনূভব করে শিরিন। সঙ্গে সঙ্গে সে খেয়াল করে ইস্তানবুল শহরের কয়েকটা অদ্ভূত ব‍্যাপার। শহরে মানুষের থেকে বিড়ালের সংখ্যা বেশি। ওখানে বিড়াল হারালে তার মালিক বিজ্ঞাপন দেয়। তবে সেই বিড়াল আর খুজে পাওয়া যায় না। শিরিন ইস্তানবুল ঘুরতে যায়নি। শিরিন গিয়েছিল নিজের অতীতের কিছু স্মৃতি ভুলতে। কিন্তু সে সেটা কোনভাবেই পারে না।

ইস্তানবুল গিয়ে শিরিনের পরিচয় হয় তহমিনার ফ্রেন্ড মুরাদের সঙ্গে। মুরাদ ওখানকার স্থানীয়। এরপর মুরাদ শিরিনকে একে একে ইস্তানবুল শহরটা ঘুরিয়ে দেখাতে শুরু করে। যেখানে আয়া সোফিয়া থেকে শুরু করে পুরো অটোম‍্যান সম্রাজ‍্যের স্থাপত্য গুলো সব। ইস্তানবুল শহরটা বেশ প্রাণবন্ত। শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে বসফরাস নদী। সেই নদীটাই যেন শহরের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করেছে। সঙ্গে সঙ্গে শিরিন তার অতীতেও ফিরে যায়। শিরিনের চিন্তাই আসে কেন তার স্বামী সাবের তাকে ছেড়ে গেল। ঠিক কী কারণে সাবের তারই জুনিয়র ডাক্তারের প্রেমে পড়ল। মেয়ে জয়ীতার দূরে থাকা ছোট ভাই মাহবুবের অকালে মৃত্যু। বাবার চলে যাওয়া মায়ের একটা বাজে ঘটনা। সবকিছু মিলে শিরিন যেন অতীত থেকে পালিয়ে যেতে চাইছিল সবসময়।

---

---

ইস্তানবুলে গিয়ে মুরাদ শিরিনকে পরিচয় করায় ওখানকার একজন কাজী সাহেবের সাথে। মুরাদ বলে লোকটা নাকী মানুষের মন পড়তে পারে। শিরিন তার সাথে দেখা করে নিজেও বুঝতে পারে। আসলেই ব‍্যাপার টা ঠিক। শিরিন নিজের অতীত কে দূরে থাকার কষ্ট না পাবার কিছু সত্য কথা জানতে পারি কাজী সাহেবের থেকে। বাকি দিনগুলো পুরো শহর শিরিনকে ঘুরিয়েছে মুরাদ। মুরাদেরও একটা অতীত ছিল। শিরিন যখন বাংলাদেশে ফিরে আসবে এয়ারপোর্টে বসে আছে। তখন একটা চিঠি পায় তার ব‍্যাগে। চিঠিটা মুরাদ লিখেছে। এই কদিনের দেখা কথা একসঙ্গে হেঁটে শহর দেখার মধ্যে শিরিনের প্রতি একটা ভালোবাসার সৃষ্টি হয়েছে মুরাদের। এবং সেই চিঠিতে সে সেটা প্রকাশ করে। একটা অপ্রত্যাশিত অপ্রকাশিত অনূভুতির মাধ্যমে যেন বইটা শেষ হয়।

---

---

ব‍্যক্তিগত মতামত

---

---

ভ্রমণ কী শুধু শহরের হয়। নাকী মানুষের মনেরও ভ্রমণ হয়ে থাকে। বইটা ঠিক এমনই। যেখানে ইস্তানবুল শহরের সাথে সাথে শিরিন তার নিজের মনের উপরও ভ্রমণ করে। আমরা আসলে খুবই অদ্ভুত আমরা আমাদের কষ্টের অতীত টা ভুলে যেতে চাই এবং সুখের অতীত টা মনে রাখতে চাই। কিন্তু সেটা কখনোই সম্ভব না। ভুলতে হলে পুরোটাই ভুলতে হয়। দারুণ কিছু সত্য উঠে এসেছে বইটার মধ্যে। মানুষের জীবনের সহজ কিছু সত্য লেখক ইমরান কায়েস বইটার মধ্যে তুলে ধরেছে। আমার মোটামুটি বেশ ভালো লেগেছে বইটা। বিশেষ করে মানুষের মনের উপর এমন ভ্রমণ নিয়ে লেখা খুব কমই আছে।

---

---

সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।

---

---

Facebook
Twitter
You Tube

---

---

অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।

---

আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।

---

---

---

---

---

---

---

---