আমার স্মৃতিময় ইন্টারমিডিয়েট লাইফ||

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago (edited)
❤️আসসালামুআলাইকুম/আদাব❤️

আমি@rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে।কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশী বন্ধুরা?আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।বন্ধুরা প্রতিদিনের মতো আজকেও ফিরে এসেছি আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে।

candles-1899626_1920.jpg
সোর্স


আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার ইন্টারমিডিয়েট লাইফ এর স্মৃতি গুলো শেয়ার করতে চলে এলাম।সেদিন বাসায় টেবিলের উপর প্রসপেক্টাস আর লাইব্রেরি কার্ড টা দেখে ছবি তুলে রেখেছিলাম।আমার কাছে যেকোনো কিছুর মূল্য অনেক বেশি।এজন্য খুব অসহ্য না লাগলে কোনো কিছু ফেলতে চাইনা।আমার স্টুডেন্ট লাইফের সব বই খাতা রেখে দিয়েছিলাম এমনকি এসএসসির প্রশ্নপত্র ,প্র্যাকটিকাল খাতা গুলোও আমার কাছে ছিল।তবে দুঃখের বিষয় আমার কাছে ইন্টারমিডিয়েট লাইফের কিছুই নেই।শুধুমাত্র প্রসপেক্টাস,লাইব্রেরি কার্ড এর আমার আইডি কার্ড দুইটা রয়ে গেছে ।আমার স্টুডেন্ট লাইফের সবচেয়ে ব্যর্থতার সময় ছিল ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার রেজাল্টের দিন।আসলে হঠাৎ করে আন এক্সপেক্টেড কোনো জিনিস ঘটলে সেগুলো মেনে নেওয়াটা যে কারো পক্ষেই দুঃখের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।তো আমার জন্য বিষয়টি অনেকটা ওরকমই ছিল।তার জন্যই মূলত ইন্টারমিডিয়েট এর সমস্ত বই আর আমার সংগ্রহে নেই।

যখন ইন্টারমিডিয়েট ফার্স্ট ইয়ার ভর্তি হই আমার শিক্ষাবর্ষ ছিল ২০১৬-২০১৭।স্কুল লাইফ শেষ করে কলেজ লাইফে আসার যে দারুন একটি অনুভূতি সেটা আসলেই বলে শেষ করা যাবেনা।আমাদের কলেজটি ছিল বাংলাদেশের সেরা পাঁচটি মহিলা কলেজের মধ্যে।এছাড়া আমাদের এই দক্ষিণ বঙ্গের সেরা মহিলা কলেজ এটি।যখন স্কুলে ছিলাম তখন ভাবতাম চান্স কি পাব স্বপ্নের কলেজে।আসলে ঐ সময়টাতে আমাদের প্রত্যেকের স্বপ্নের কলেজ ছিল এটি।আমাদের এক বান্ধবী আবার খুব কনফিডেন্ট ছিল।সে সবসময় বলতো আমরা না পেলে পাবে কারা।যাইহোক অবশেষে খুব সহজেই জিপিএর ভিত্তিতে আমরা স্কুলের প্রত্যেকেই চান্স পেয়ে যায়।আমরা কয়েকজন গ শাখায় পড়ে যায় আর কয়েকজন খ শাখায়।দুর্ভাগ্যবশত ক শাখায় ভর্তি হতে পারিনা কেউই।আসলে শহরের যারা তারা খুব ভোরে এসেই লাইনে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল।ওই সময়টা আমরা সেভাবে বুঝিনি যে আগে গেলে আগে ভর্তি হওয়া যাবে।তবে শাখা সবগুলোই এক।ক্লাস একইভাবে সব শাখায় নেওয়া হতো।এরই মধ্যে প্রসপেক্টাস, লাইব্রেরি কার্ড ,আইডি কার্ড ,ইস্যু হয়ে গেল সবার নামে।

নতুন কলেজ আরো কিছু নতুন বান্ধবী হলো।যে স্কুল লাইফে বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল সে কয়েকমাস পর বিভাগ পরিবর্তন করলো ।আমার সেই কনফিডেন্ট ওয়ালা বান্ধবী।এর মধ্যে আমি কয়েকদিন একা হয়ে গেলাম।তারপর আরো একজন বান্ধবী হলো ।এখানে মজার বিষয় ও আমাকে একা বসে থাকতে দেখে প্রথমদিন এসে আমার সাথে পরিচিত হয় হাত ধরে বন্ধুত্ব করে আমার নাম জিজ্ঞেস করে,হাহা।এতটা বড় হওয়ার পর আমার বন্ধুত্ব এভাবে হয়েছিল।আমার সহজে বন্ধু বান্ধবী হতনা।যাদের সাথে হয়েছিল তারা নিজেরা এসে বন্ধুত্ব করেছিল এজন্য আরকি হলো।আমি কারো সাথে আগে গিয়ে মিশতে পারিনা,এটা আমার একটা মেজর সমস্যা বলতে পারেন।তাই আমার বান্ধবী যারা হয় তারা অতিরিক্ত মিশুক টাইপের হয় ।তারপর কলেজ লাইফে কিছুদিন পর আরো একজন বান্ধবী হলো।তারা দুজনেই এক স্কুলের ছিল।অবশেষে তিন বেস্ট ফ্রেন্ড হলাম আমরা।একসাথে থাকতে শুরু করলাম মেসে ।কারণ অনেকগুলো প্রাইভেট পড়তে হতো যাওয়া আসা করে অনেকটা ক্লান্ত লাগতে শুরু করলো।বাসা থেকে শহর ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে ছিল।তারপর সারাদিন দৌড়াদৌড়ি সকাল,দুপুর,বিকেলে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে প্রাইভেট পড়তে যাওয়া।আর প্রাইভেট থেকে বেরিয়ে জুয়েল ভাইয়ের দোকানের ফুসকা,চটপটি,আর আইস্ক্রিম।এর মধ্যে মনের মত টিচার না পাওয়ায় কয়েকমাস পরপর স্যার পরিবর্তন।সব মিলিয়ে সংখ্যা গিয়ে দাড়ালো ২৪ ।মানে এক বিষয়ে চারজন পরিবর্তন গড়ে।এখানে মানিয়ে না নিয়ে বারবার পরিবর্তনটা আমার একটি বড় ভুল ছিল।এভাবে করে প্রায় শেষের দিকে চলে এলো সময় আর তখন সময় খুবই কম হাতে।কিছুদিনের মধ্যেই ফাইনাল পরীক্ষা বুঝতেই পারলাম না কিভাবে দুইটা বছর শেষ হয়ে গেল। এত মধুর স্মৃতিময় ক্যাম্পাস এর সংক্ষিপ্ত সময়টা কেটে গেল।তারপর বেস্ট ফ্রেন্ডরা সবাই ভিন্ন ভিন্ন দিকে।

ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আমার আজকের ব্লগটি আপনাদের কেমন লেগেছে কমেন্টে জানতে ভুলবেন না কিন্তু বন্ধুরা । আবার নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো।



❤️আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি❤️
আমি রাহনুমানূর দিশা।আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী।আমি বর্তমান অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনা করছি।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাথে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় থেকে যুক্ত রয়েছি।বাংলা ভাষায় লিখতে, পড়তে এবং নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার ভালো লাগে।এছাড়াও ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতে অনেক ভালো লাগে।অবসর সময়ে গান শুনতে এবং বাংলা নাটক দেখতে পছন্দ করি।

Post by-@rahnumanurdisha
Date-27th June,2024


Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

❤️আল্লাহ হাফেজ❤️

Sort:  
 9 months ago 

২০১৬-১৭ আপনার স্কুল লাইফ শেষ আর এদিকে আমাদের অনার্স লাইফ শেষ। তাহলে বুঝতে পারছেন কতটা মিস করি স্টাডি লাইফ। আজকে আপনি ইন্টারনেটের শেষ অনুভূতি বিশেষ বিশেষ অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে ব্যক্ত করার চেষ্টা করেছেন। আর সে অনুভূতির সাথে কিন্তু আমারও মনের মধ্যে ভেসে আসলো আমার অতীতের সেই দিনগুলো। সব বন্ধু বান্ধবীরা একত্রে একটি কক্ষের মধ্যে উপস্থিত হতাম ক্লাস করার জন্য আজ যে যার মত সেটেল হয়ে গেছে নিজ নিজ জীবনে। ইচ্ছে থাকলেও আর একত্রে একসাথে দেখা আর সম্ভব নয় সেই দিনের মতো।

 9 months ago 

আসলেই ইচ্ছে থাকলেও আর সম্ভব হয়না একত্র হওয়া।

 9 months ago 

ইন্টারমিডিয়েট লাইফটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দপূর্ণ একটি লাইফ। অনেক স্টুডেন্ট ইন্টারমিডিয়েট লাইফ শেষ করেই বিভিন্ন কারনে তাদের স্টুডেন্ট লাইফ শেষ হয়ে যায়। আবার কেউ ভার্সিটি লাইফে গেলেও ভার্সিটি লাইফটা তেমন উপভোগ করতে পারে না। তাদের জন্যও ইন্টারমিডিয়েট লাইফটা স্মৃতি হয়ে থাকে। আমার জীবনের সেটা দুইটি বছর হলো ইন্টারমিডিয়েট লাইফ। যেটা আমি কখনো ভুলতে পারবো না। বরং বার বার সেই লাইফে ফেরত যেতে মন চাই। ধন্যবাদ।

 9 months ago 

জি ভাইয়া ওই জীবনটা প্রত্যেকেরই স্মৃতিময় জীবন।