নীরবতার ভাষা! The language of silence!
![]() |
---|
শব্দকোষ এ যদি নীরবতার অর্থ খুঁজে দেখা যায়, তাহলে আসবে
আচ্ছা, আমরা যখন নীরব থাকি তখন কি সত্যি নিঃশব্দতা কাজ করে?
মুনি ঋষি সাধকদের কথা অবশ্য জানা নেই, যারা একমনে ধ্যানে মগ্ন থেকে সিদ্ধি লাভ করেছেন!
তবে, তারাও কিন্ত মনে মনে সেই দেব দেবীকে অথবা সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করে তাকে একমনে মুখ বুঝে ডেকে গিয়েছেন!
সাধারণ মানুষ যখন মেডিটেশন করেন, তখনও নির্দিষ্ট কোনো কিছুকে কল্পনা করে নিজেদের ধ্যান কেন্দ্রীভূত করেন সেইদিকে!
এবার আসব দৈনন্দিন আমাদের মত ছাপোষা মানুষদের কথায়, ধরুন রোজকার জীবনের সাথে ওঠা বসা করা কোনো মানুষের কথা পছন্দ হলো না, কিংবা কোনো কারণে নিজের মন ভালো নেই, ঠিক সেই সময় তারা নীরবতাকে বেছে নেয়!
কি তাই তো? তবে, মুখে কোনো কথা না বললেও তাদের মনের মধ্যে অনেক কথা চলতে থাকে যেগুলোর হয়তো শব্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটে না, তবে তাকে আমি নীরবতা মানতে নারাজ!
অথবা, বলতে পারি নীরবতার ভাষা আছে।
![]() |
---|
আমার নীরবতার ভাষা বোঝার সঙ্গী! |
---|
এই নীরবতার ভাষা শুধু মানবকুল নয়, প্রাণী জগত সহ উদ্ভূত জগতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
কিছু মানুষের নীরবতার অর্থ তাদের অভিব্যক্তি দ্বারা খানিক অনুধাবন করা যায়, তবে বেশিরভাগ মানুষ এখন নিজেদের মন এবং চেহারার অভিব্যক্তি প্রকাশ এর ক্ষেত্রেও ছলনা শিখে গেছেন।
খানিক সংসারে শান্তি অব্যাহত রাখতে, খানিক নিজের অভিমত মূল্যহীন ভেবে, আবার মুষ্টিমেয় দায় এড়াতে, নীরবতার বিভিন্ন কারণ প্রযোজ্য বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে।
তবে, যারা এই নীরবতার ভাষা বুঝতে পারেন, তারাই আসলে আমাদের আপন, সে হতে পারে কাছের কেউ, হতে পারে নামহীন সম্পর্ক!
তবে, নীরবতার ভাষা আছে এটা কতজন উপলব্ধি করেছেন এর আগে?
জানিনা, হয়তো অনেকেই বিষয়টিকে অন্য ভাবে দেখেছেন, আমি একলা থেকে খুজে পেয়েছি নীরব প্রকৃতি থেকে অনেক প্রশ্নের উত্তর!
তারা নিজেদের মতো করে আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে, তাদের সাথে মানবকুলের পার্থক্য কোথায়?
কেনো আজ উন্নত হয়েও আমরা শান্তিতে নেই, কারণ সুখ বেছে নিতে গিয়ে জলাঞ্জলি দিয়েছি শান্তি।
![]() |
---|
নির্ভেজাল সৌন্দর্য্য উপভোগ এর পরিবর্তে যান্ত্রিক সৌন্দর্য্যের প্রতি মনোনিবেশ করেছে আধুনিক সমাজের মানুষ।
সুখ বৃদ্ধি পেয়েছে বটে, তবে বিলীন হতে বসেছে নিজেদের অজান্তেই শান্তি।
অন্যের ভালো লাগার মূল্য দিতে গিয়ে, নিজে ভালো থাকতে কবে যেনো ভুলে গেছে অধিক মানুষ!
সৃষ্টির সাথে ধ্বংস আসবে এটাই বিধির বিধান, তবে সৃষ্টি আর ধ্বংসের মাঝে নিজেদের অবদান অমর করে রাখে তাদের যারা সৃজনশীলতায় বিশ্বাসী।
নীরবতার ভাষা কখনও পড়েছেন?
খুব মন খারাপে কোনোদিন এক্ দৃষ্টিতে প্রকৃতির দিকে চেয়ে থাকবেন, আর নিজের মনের কথাগুলো মনে মনে তাদের জানাবেন, দেখবেন উত্তরগুলো কিভাবে তারা নীরবতার ভাষা দিয়ে আপনার কাছে পৌঁছে দেবে!
![]() |
---|
হে প্রকৃতি, তুমি নির্ভেজাল সত্য, তাই মানবকুলের পূর্বেই তোমার সৃষ্টি! |
---|
নিজের ক্ষেত্রে এমন অনেক সময় হয়েছে, কেনো হলো? কি দোষ? এরকম অনেক প্রশ্নের উত্তর আমাকে প্রকৃতি নীরব থেকেই দিয়েছে।
কোনো উত্তর পছন্দ না হলে, আমিও নীরব থেকেই পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছি, তবে তাতে মানুষের মত বিরক্ত না হয়ে তার শীতল বাতাস দিয়ে আমাকে শান্ত করে ভুলটা ধরিয়ে দিয়েছে।
আজ আমি মৌখিক ভাষার পাশাপশি নীরবতার ভাষায় শিক্ষিত করতে পেরেছি নিজেকে।
এই ভালো জানেন, মৌখিক আলাপচারিতার মত এখানে কোনো কম বেশি নেই, আর না আছে কাউকে ছোট নিজেকে বড় দেখাবার প্রবণতা!
প্রকৃতি সকলকে সমান ভাবে গুরুত্ব দেয়, তার কাছে সবাই সমান, ক্ষমতার নিরিখে কোনকিছু বিচার্য নয়!
তাই তার নীরবতার ভাষা আজ আমার বর্তমান পাঠশালা।

