ক্ষুধা! starvation!
![]() |
---|
দৈনন্দিন জীবনে আমাদের অভিযোগের শেষ নেই!
চাহিদা পূরণ সময়মতো না হলে লঙ্কাকাণ্ড!
সব পেয়েও তালিকায় রয়ে যায় কত অভিযোগ!
কেউ বড়ো বড়ো রেস্তোরাঁয় বসে ভালো মন্দ খেয়ে তার ছবি ফলাও করে ছাপিয়ে ক্ষমতা জাহির করে!
আজকের শীর্ষক বেছে নিয়েছি পুরোনো কিছু ঘটনার কথা মাথায় নিয়ে!
একদিন অফিস ফিরতি পথে ফুটপাতের দিকে চোখ যেতেই দেখি এক মহিলা বেশ পেল্লাই একটা বালতি নিয়ে রাস্তা পার করছেন!
রাস্তার অপর প্রান্তেই ভদ্র মহিলার বাড়ি, সেটা তার পোশাক দেখে বুঝলাম, আর পায়ে হেঁটে ফিরছিলাম তাই বিষয়টি নজর এড়ায় নি!
দেখলাম, মহিলা রাস্তা পার করতেই একদল সারমেয় তার সামনে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে পড়লো, আমিও বুঝে গেলাম, এটা তাদের খাবার সময় আর এই মহিলা বালতিতে করে তাদের খাবার বিয়ে এনেছেন।
কাজটি, তিনি প্রতিদিন করেন সেটা সারমেয় দের আচরণে স্পষ্ট।
মনে মনে ভাবলাম, জীবনের সবচাইতে বড় জ্বালা হলো এই ক্ষিদের জ্বালা!
আর এটা একমাত্র তারাই অনুভব করতে সক্ষম যারা এই জ্বালার মধ্যে দিয়ে প্রতিদিন যান!
![]() |
---|
এটা কখনোই তারা বুঝবেন না, যারা তালিকা প্রকাশ করে নিজেদের খাবারের আয়োজন প্রকাশ করে ক্ষমতা জাহির করেন, অথবা তারা যারা নাক উঁচু করে বলেন, এসব সাব স্ট্যান্ডার্ড খাবার আমরা খাই না!
অফিসে কাজ করার সময়, অনেকেই এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করতো, দিদি লাঞ্চ ব্রেক কখন দেবে?
আমি নিজে কেবলমাত্র ব্ল্যাক কফি পান করেই থাকতাম, তাদের সেই প্রশ্নের জবাবে বলতাম, ভেবে দেখেছো কখনো কত পরিবার প্রতিদিন তিনবেলা খাবার পায় না?
সামান্য ক্ষিদে তোমরা সহ্য করতে পারছো না, তাহলে সেই ক্ষুদে শিশু, আর সেই পরিবার গুলোর কথা ভেবে দেখো একবার!
ক্ষিদের জ্বালা মেটাতেই প্রতিদিনের সংঘর্ষ! |
---|
তখন বেশ বিরক্তবোধ করতো অনেকেই আমার উপরে সেটা অভিব্যক্তিতে প্রকাশ পেতো, তবে ওইটুকু খেতে দেরি এরকম অনেক মানুষ সহ্য করতে পারেন না।
এর আগেও উল্লেখ করেছি, অনেকেই দরিদ্রদের বাড়তি খাবার দেবার চাইতে, রাস্তার পশুদের বাড়তি খাবার দেবার চাইতে, আস্তাকুঁড়ে বেছে নিতে বেশি পছন্দ করেন।
![]() |
---|
![]() |
---|
![]() |
---|
খেতে ভালোবাসা অপরাধ নয়! তবে সেটা যেনো আস্তাকুঁড়ে না যায়! |
---|
আরেকদিন নজরে পড়লো একটি মাঝে বয়সী মানুষ ফেলে দেওয়া খাবারের স্তূপ থেকে পেট নিজের ক্ষিদে মেটাবার সাধন যোগানোর প্রয়াস করছেন!
কি হবে যদি তিনবেলা পেট ভর্তি খাবার নিয়েও সন্তুষ্ট থাকতে না পারি?
কি হবে কেবলমাত্র খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ করে?
কি হবে বাড়তি খাবার, অথবা নিজের পছন্দ হয়নি বলে, খান না বলে সেই খাবার স্থান পেয়েছে আবর্জনায়?
কোনোদিন সময় মতো খাবার না পেলে, পছন্দের রান্না না হলে কতই না অভিযোগ!
একবার সেই মানুষগুলোর ক্ষিদের মূল্যায়ন করেছেন কোনোদিন যারা আপনাদের ফেলে দেওয়া খাবার পেয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন!
এই ক্ষিদের আবার প্রকারভেদ দেখা যায় বিভিন্ন স্তরের তথা সামাজিক প্রেক্ষাপটে দাড়িয়ে।
কারোর উন্নতির ক্ষিদে!
কারোর লক্ষ্যের ক্ষিদে!
কারোর সফলতার ক্ষিদে!
কারোর সম্মানের ক্ষিদে!
অনেক থাকা সত্ত্বেও আরো চাই এর ক্ষিদে!
এরকম ধরনের ক্ষিদে ও কিন্তু আমাদের মধ্যে কাজ করে, তবে পেটের ক্ষিদের থেকে বড় বোধহয় কিছুই নয়!
আরে মশাই বাঁচলে তো বাকি ক্ষিদে পূর্ণতা পাবে, তাই না?
একবার, খাবার ফেলার আগে ভেবে দেখবেন, জোগান যিনি দিচ্ছেন তার হিসেব কিন্তু সকলের ক্ষেত্রে সমান শুধু সময়ের অপেক্ষা।


Congratulations! This post has been upvoted through steemcurator08. We support quality posts, good comments anywhere, and any tags.
Curated by @miftahulrizky