পবিত্রতা! Sanctity!
![]() |
---|
বিশুদ্ধতা অথবা পবিত্রতা যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেনো, তার সংজ্ঞা আজ আমি একমাত্র প্রকৃতির মাঝেই খুঁজে পাই।
মানুষের মধ্যে না আজ আর এসব খুঁজতে চাই, আর সত্যি বলতে সেসব ইচ্ছেও অনেক আগে থেকেই বিলীন হয়ে গেছে।
আমি প্রায় সময় নিজের লেখায় প্রতিদিন প্রকৃতি থেকে কুড়িয়ে পাওয়া শিক্ষা, অভিজ্ঞতা তুলে ধরি, যেগুলো আজকের এই আধুনিক যুগে অচল!
কারণ, পড়ার অভ্যেস আজ তলানিতে ঠেকেছে।
এখন প্রতিদিন নিজের কায়দা করে তোলা ছবি, নয়তো ক্ষমতার অনুকূলে সাঁতার কাটতে পারলে বাজারদর অধিক।
যাক! তাতে আমার আপত্তি নেই, যারা করেন তারা নিশ্চই কিছু ভেবেই এদের অনুসরণ করছেন।
তবে, নিজের সত্ত্বা বিসর্জন? নাহ্ ওটি আমার দ্বারা হবে না!


এতো গরম পড়েছে যে সাত সকালে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে আপনা থেকেই!
আমার আলোতে ঘুম আসে না, আর এই সময় সূর্যি মামা এত তাড়াতাড়ি উদিত হচ্ছেন যে, বিছানায় শুয়ে থাকার উপায় নেই!
এরপর একটু বেলা বাড়তেই রোদ্দুরের প্রখরতা যেনো পৃথিবীর মলিনতা গিলে খেতে তৎপর!
আজকে, যেহেতু বৃহস্পতিবার তাই বসে না থেকে, ঘরের সমস্ত কাজ সম্পাদন করে, পুজো দিতে দিতে নিজের অজান্তেই কত যে কথা ঈশ্বরের সাথে বললাম তার ইয়ত্তা নেই!
পুজো শেষে আকাশের দিকে চেয়ে দেখি কি সুন্দর নীলাকাশে পেঁজা তুলোর মতো সাদা ধবধবে মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে।
এরপর দেখলাম পাশের বাড়ির ছাদে নাম না জানা এক্ থোকা সাদা আর হলুদ ফুল ফুটে আছে।
আপনারা কি জানেন এই ফুলগুলোর নাম? অবশ্য গুগল ঘেঁটে পরে বের করে নেবো, আজকাল সব তথ্যই সহজলভ্য।

মন থেকে একটাই কথা বের হলো পবিত্রতার প্রতীক।
এটাই তো পবিত্রতার প্রতীক, যেখানে খারাপের বদলে ভালোকে ফিরিয়ে দেবার মানসিকতা কাজ করে, তাই না?
মানুষের মনের মধ্যে যখন যুদ্ধ চলে, সমাজের বুকে চলে অরাজকতা!
সেই সময় এই সাদা মেঘগুলো মুহূর্তে কালো হয়ে যায়, নিজের উপর সমস্ত দায়ভার নিয়ে নেয়, আর সেই ভারের বোঝা অধিক পরিমাণে হয়ে গেলে, বৃষ্টি রূপে ধরায় ফিরিয়ে দেয়।
যদি সেই বোঝা হয় পাপের? তাহলে সেই বৃষ্টির সাথে আসে ঝড়, বন্যা এবং সুনামি!
সাদা রং এমনিতেই শান্তির প্রতীক তবে কালো ধোঁয়া আজ এদের বিশুদ্ধতা অনেকখানি কেড়ে নিয়েছে, আর তার ভারসাম্য রক্ষা করছে, এই গাছ, তথা ফুলেরা।
সর্বজ্ঞানী মানুষ আজ কথায় সময় ব্যয় করতে নারাজ, তাদের লক্ষ্যমাত্রা সম্পদ! যেটির বাজার দর আছে, যার প্রভাবে সমাজে প্রতিপত্তি বিস্তার সম্ভব।
বেশকিছুদিন খবরের দিকে নজর রেখে যাচ্ছি আর মানুষের মানসিকতায় হতবাক হয়ে যাচ্ছি।
হিংসা, হানাহানি, সুযোগসন্ধানী মনোভাব, ক্ষমতার প্রয়োগে কারচুপি না জানি আর কতকিছু!
কিসের সভ্যতা? কিসের স্বাধীনতা? এই সমস্ত বর্বরতার চাইতে পরাধীন থাকা শ্রেয় ছিল, অন্ততঃপক্ষে নিজের মানুষ নিজেরই ক্ষতি সাধন করছে, ধ্বংস লীলায় মেতেছে দেখার চাইতে।


কখনও কখনও মনে হয় এই ভিড় থেকে পালিয়ে চলে যাই এমন কোনো জায়গায় যেখানে প্রকৃতি আর আমার মাঝে অন্য কেউ থাকবে না!
বিশেষ করে মানুষ তো একেবারেই নয়, এর চাইতে জীব জন্তুদের মাঝে থাকা অনেক ভালো।
পুরোনো বইগুলি আবার বের করেছি, আজকে থেকে আরো একবার সেগুলোই পড়বো সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আমার অনেক বই রয়ে গেছে দিদির শ্বশুর বাড়িতে, এখন দিদি ওখানে থাকে না, তাই যে কয়েকটি বই এই ফ্ল্যাটে কিনেছি, সেগুলোই আবার পড়া শুরু করবো।
এখন হাতে অনেক সময়, দায়িত্বের বোঝা ঝেড়ে ফেলতে শুরু করেছি। কেউ না চাইলে জোর করে কিছুই হয় না, আর সকলের ক্ষেত্রে বলপ্রয়োগ করা যায় না কিংবা সেই অধিকার থাকে না।
বিশেষ করে কাজের জায়গায়, তাই এই বেশ ভালো, যে যেভাবে চলতে চায়, তাকে সেভাবেই চলতে দেওয়া উচিত।
ঠিক বেঠিক সময় নির্ধারণ করে দেবে।
এই পাঁচটি বছরে কম তো দেখলাম না, তবে কোনোদিন ক্ষমতার সামনে মাথা নত করিনি, অসত্য বিষয়কে প্রশ্রয় দিতে পারিনি আর তাবেদারী করে উন্নতির শিখরে ওঠার বাসনা জন্মলগ্ন থেকেই রক্তে নেই!

একাকিত্ব আমাকে অনেক কিছু ভাবার অবকাশ দিয়েছে, সেটা নিজের ভুল সিদ্ধান্ত, অনেক ভুল মানুষকে বিশ্বাস করার পরিণতি, অনেক মানুষকে আপন করবার খেসারত ইত্যাদি।
তাই আজকাল এই জানালার ফাঁক দিয়ে দেখা যাওয়া প্রকৃতি, ঈশ্বর আর বই এই নিয়েই আমার সীমিত পরিসর নির্ধারিত।
বিশুদ্ধতা কতখানি বজায় রাখতে পেরেছি সেই সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিয়েছি সৃষ্টিকর্তার হাতে, তবে প্রতিদিন শেখার সদিচ্ছা আজও অব্যাহত রেখেছি।


Hello @sduttaskitchen, thank you for your contribution to our account.