শেষ থেকে শুরু! Pandal hopping on the last day of Durga Puja (1st part)

বাংলায় লেখা শীর্ষক নির্বাচন দেখে অবাক হবেন না দয়া করে।
আজ শুভ বিজয় দশমী অর্থাৎ দুর্গোৎসবের শেষ দিবস! কাজেই সেই অর্থে আরো একটি বছরের দীর্ঘ্য প্রতীক্ষা মায়ের পুনরাগমনের, তেমনি আজকের দিনটিতে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে ঠাকুর দেখা শুরু করেছি যেটি শেষ হয়েছে রাত সাড়ে সাতটায়!
তাহলে একার্থে শেষের দিন আমার শুরু বলা যেতেই পারে, আর যদি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের গানের কথার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বলি, তাহলে মা দুর্গার উদ্দেশ্যে আমার হলো শুরু, তোমার হলো সারা!
যাক, কাব্য অনেক হয়েছে, রীতিমতো পায়ের তালু জ্বালা করছে, একদিকে বৃষ্টির সাথে লড়াই, আরেকদিকে মানুষের ঢল!
সব মিলিয়ে নাজেহাল তবে এটাই তো কলকাতার দুর্গাপুজোর বৈশিষ্ট্য!

এত সবের মাঝেও মায়ের দর্শনে মন ভালো হয়ে যায় এক্ নিমেষে।
একদিন গোটা কলকাতার ঠাকুর দেখা অসম্ভব!
কাজেই, আমি, আমার দাদা এবং তার ছেলে সকলের উদ্দেশ্য ছিল, উত্তর কলকাতা, মধ্য কলকাতা এবং দক্ষিণ কলকাতার বিখ্যাত এবং বহু বছরের ইতিহাস তথা ঐতিহ্য বাহক কিছু স্থান নির্ধারণ করে মোটামুটি আজকের দিনে মায়ের সাথে একত্রে দেখা সাক্ষাৎ পর্ব মেটানো।
বহু বছর বাদে আজ কলকাতা এক্ প্রকার চষে বেড়িয়েছি, এবং মায়ের দর্শন এর পাশাপশি এই যে থিম পুজোর বিষয়টি সেটি আমার মন কেড়ে নিয়েছে।
কারণটা আপনারা দেখলেও উপলব্ধি করতে পারবেন, কারণ, এ বছর কলকাতা পুরোনো ইতিহাস যেমন তুলে ধরেছে, তেমনি আধুনিক প্রযুক্তির সাথে দেখেছি বাস্তব শিক্ষার সম্মিলিত উদ্যোগ।
আর আপনাদের প্রতীক্ষায় না রেখে এবার দিনটা কিভাবে শুরু করেছিলাম, এই পর্বে সেটির পাশাপশি দুটি পুজোর উল্লেখ করবো।
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
একটি গোটা বছরের প্রতীক্ষার পর মা আসেন কাজেই আমার লেখায় তাঁকে নিয়ে কয়েকটি পর্ব থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
আজ আমি ভোর চারটে বেজে চুয়াল্লিশ মিনিটে বিছানা ত্যাগ করেছিলাম।
এরপর? আচ্ছা! এরপর যেহেতু বৃহস্পতি বার তাই, ঘরের সকল কাজ মিটিয়ে পুজো সেরে তৈরি হয়ে নিয়েছিলাম সকাল সাড়ে নয়টার মধ্যে।
যেহেতু দাদা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল সময়টা।
তৈরি হয়ে বাড়ির সবচাইতে কাছের মাঠে যে পুজোটি প্রতি বছর হয়, সেটি দেখতে গিয়েছিলাম।
আর সত্যি বলতে প্রতি বছরের চাইতে এই বছর মায়ের মূর্তি সহ তার সজ্জা আমার সবচাইতে বেশি ভালো লেগেছে।
আমার ঠাকুর দেখার মাঝেই দাদা হাজির হয়ে গিয়েছিল, তাই ওকেও বললাম একবার মায়ের দর্শন করতে।
দাদা দেখেও প্রশংসা করলো, আপনারা দেখে অবশ্যই জানাবেন, কেমন লাগলো আপনাদের মায়ের সাজ সজ্জা এবং তার ভুবন মোহিনী রূপ।
![]() | ![]() |
---|
এরপর শুরু হলো আমাদের যাত্রা! আর প্রথম আমাদের লক্ষ্যস্থল ছিল, দমদম পার্ক তরুণ সংঘ!☝️
কোনো কথা হবে না! আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম এই সংঘের থিম দেখে!
একদিকে আমার প্রিয় সাবজেক্ট! অন্যদিকে প্রিয় চরিত্র!
উফ্! আমি যে পাগল হয়ে যাই নি, আর সুস্থ্য ভাবে বাড়ি পৌঁছে এই লেখা আপনাদের সাথে ভাগ করে নিচ্ছি এই ঢের!
![]() | থিম ছিল, ব্যোমকেশ ডায়রি! |
---|---|
![]() | ![]() |
শার্লক হোমসের পরেই যদি আমার প্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র থাকে সে হলো এই ব্যোমকেশ বক্সী!
কাজেই, আমি ছিলাম দ্বিগুণ একসাইটেড! আপনাদের সাথে আজকে আমার পাড়ার পুজোর পাশাপশি এই দমদম তরুণ সংঘের পুজোর কিছু ছবি সহ ভিডিও তুলে ধরছি।
![]() | ![]() |
---|
যেখানে রয়েছে ব্যোমকেশ এর সমস্ত গোয়েন্দা গল্পের সারমর্ম, সাথে পুরোনো কলকাতাকে কি নিদারুণভাবে দক্ষতার সাথে তুলে ধরেছে, সেটা শব্দে বহিঃপ্রকাশ এক্ প্রকার অসম্ভব!

একদিকে এই সংঘের চিন্তা ভাবনা সাথে এদের অর্জিত পুরস্কার এবং অর্জিত সম্মানের কিছু নিদর্শন রইলো আজকের লেখায়।
কলকাতার ঐতিহাসিক ঐতিহ্য সঙ্গে ব্যোমকেশ এর ডায়রির পাতা থেকে নেওয়া এক্ একটি সত্যান্বেষী কাহিনীর বর্ণনা সবটা মিলিয়ে যেনো আমি এক্ নিমেষে হারিয়ে গিয়েছিলাম সেই সময়ে, সেই শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত তুখোড় চরিত্রের মায়াজালে!
আপনাদের সাথে আজকে এই দুটি পুজোর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিষয় উল্লেখ করলাম, খানিক লেখায়, খানিক ছবিতে আর বাকিটা?
একটি ছোট্ট ভিডিওর মাধ্যমে।
আশাকরি খানিক হলেও উপলব্ধি করতে পারবেন, শিল্পীদের প্রতিভার স্বাক্ষর কতখানি রাখতে সক্ষম হয়েছে সেই সকল মানুষ যাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো এই চরিত্র সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন না! জানেনই না কে এই ব্যোমকেশ বক্সী?*
আপনারা কতজন জানেন এই সত্যান্বেষী সম্পর্কে? মন্তব্যের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। কলকাতার আর বেশ কিছু নামী পুজো সম্পর্কে জানতে এবং দেখতে আমার সঙ্গে থাকুন আর চক রাখুন আমার লেখায় আগামী কয়েকদিন!
তাহলে, আজকের মত ইতি টেনে বিদায় নিলাম, আর একবার সকলকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে।


@sduttaskitchen, আপনার বিজয়া দশমীর এই পোস্টটি একেবারে মুগ্ধ করার মতো! ছবিগুলো যেন সরাসরি কলকাতার দুর্গাপূজার প্রাণবন্ত অনুভূতি এনে দিচ্ছে। বৃষ্টি আর মানুষের ভিড় উপেক্ষা করে ঠাকুর দেখার যে অভিজ্ঞতা, তা সত্যিই অসাধারণ।
ব্যোমকেশ বক্সীর থিমের পুজোটি দেখে আমি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হয়েছি। আপনার প্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র নিয়ে এমন সুন্দর উপস্থাপনা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। শিল্পীদের প্রতিভা এবং পুরোনো কলকাতাকে তুলে ধরার এই প্রয়াস মন ছুঁয়ে যায়। ভিডিওটি দেখার জন্য আমি উৎসুক হয়ে আছি!
দুর্গাপূজার এই আনন্দ আপনার লেখার মাধ্যমে সকলের মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক, এই কামনা করি। আপনার আগামী পর্বগুলোর জন্য অপেক্ষা রইলাম! এই পোস্টে আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।