Assembled the Temple of God bought online! আমার সাধের ছোট্ট মন্দির তৈরি!
![]() |
---|
স্থান যখন সল্প পরিসরের মধ্যে সীমিত হয়ে থাকে, তখন ইচ্ছে থাকলেও উপায় থাকে না অনেক কিছু করবার।
ভাবছেন হেয়ালী করছি? একেবারেই নয়, বেশ কয়েক বছর ধরে ঠাকুর রাখবার যথার্থ স্থান করে উঠতে পারছিলাম না।
কারণ উল্লেখিত পরিসর সল্প! তবে, এই পরিস্থিতি এখন অনেকের কারণ বেশিরভাগ শহরের মানুষ ফ্ল্যাটে বসবাস করেন।
তাই আধুনিক পরিস্থিতি বুঝে অনলাইন ব্যবসায়ীরা অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা বের করে দিয়েছেন।
এই যেমন দেখুন আমার ক্ষেত্রেই, বেশ কয়েকদিন ধরে ঠাকুর স্থানের জন্য উপযুক্ত মন্দির, যেটি ছোটো জায়গায় রাখতে পারবো খুঁজে চলছিলাম।
এরপর, যথারীতি একটি ছোট আকারের মন্দির বেশ পছন্দ হলো, যে জায়গাটি ঠাকুরের জন্য নির্ধারণ করেছি, সেই জায়গার জন্য উপযুক্ত।
খানিক রিভিউ দেখে অর্ডার করেছিলাম, এরপর যখন পৌঁছিল, তখন দেখলাম সমস্ত অংশ খুলে বাক্স বন্দী করে পাঠিয়েছে।

বেশ উৎসাহ পেলাম, কারণ শৈশবের ব্লক সাজানোর মত খানিক খেলা খেলছি মনে হচ্ছিল, আবার খানিক নিজেকে ইঞ্জিনিয়ারের মেয়ে ভেবে গর্বিত লাগছিল।
সব কাজ ফেলে বসে গেলাম ম্যানুয়াল নিয়ে মন্দির তৈরি করতে।
প্রথমে একটু বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল কিছু ছোটো ছোটো টুকরো করা প্লাই কেনো দিয়েছে ভেবে।

তাই, ম্যানুয়াল ভালো করে পড়ে নিয়ে লেগে পড়লাম মন্দির তৈরি করতে।
আর ভাবলাম, জীবনের অনেক কিছুই ঠিক এমনি এলোমেলো, যদি এই মন্দিরের মতই সেগুলোকেও পুনরুজ্জীবিত করা যেতো ম্যানুয়াল থাকলে, কি যে ভালো হতো!
তবে, জীবন এর সাথে বস্তুর এখানেই বোধহয় পার্থক্য।
ডাইনিং রুমের মেঝেতে একেবারে যোগাসনে বসে একের পর এক টুকরো জুড়ে তৈরি সম্পন্ন করলাম আমার সাধের ছোট মন্দিরটি।
তৈরির পরে সেটাকে দেওয়ালে লাগাবার পালা, এখন আরেকটি জিনিষ অনলাইন থেকে খুব সহজেই পাওয়া যায়, যেটি দেয়াল ফুটো না করে অনেক ভারী বস্তু তার সাথে যুক্ত করা সম্ভব এমন পিভিসি আর স্টিলের তৈরি হাঙ্গিং হুক।
সেটার অর্ডার দিয়েছিলাম, কারণ আগের কেনা হুক এদিক ওদিক করে প্রায় শেষের পথে, তাই আর ঝুঁকি না নিয়ে নতুন এক্ প্যাকেট অর্ডার করে দিয়েছিলাম।
কিছু ছবি মন্দির তৈরি করবার সময় তুলে রেখেছিলাম, আর দুটো ছবির একটা দেওয়ালে অর্ধেক স্থাপনের সময় তোলা অপরটি ঠাকুর রাখবার পরে।

এই প্ল্যাটফর্মে যেটুকু দায়িত্ব আছে তার বাইরে যেটুকু সময় অবশিষ্ট থাকে ঘরের কাজ শেষ করে, সেটা আমি ঈশ্বরের সাথে বাক্যালাপে ব্যয় করি, কারণ মানুষের সাথে মিশে দেখেছি সেখানে কেবল লাভ লোকসানের হিসেব ছাড়া কিছুই নেই।
মায়া, মমতা, আপন, পর সবটাই নির্ভর করে সামনের ব্যাক্তি নিজের কতখানি প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম তার উপর!
তাই, নিজের সমস্ত অনুভূতি এখন ওই এক জায়গায় জমা করি। এখন আমি মানুষের থেকে যতখানি সম্ভব দূরত্ব বজায় রাখতে পছন্দ করি।
নাটক দেখতে দেখতে সমস্ত নাটকের শেষটা এখন আগে থেকেই বুঝে যাই, আর সাসপেন্স বলে কিছুই থাকে না, তাই এই বেশ আছি জানেন!
আমি আর ঈশ্বর যেখানে ছলনা নেই, অনুভূতি নিয়ে কেউ খেলা করে না, যেখানে শুধুই ভালো লাগা, আর প্রশান্তি।
আপনাদের কেমন লাগলো আমার এই ছোট্ট মন্দিরটি, মন্তব্যের মাধ্যমে জানতে ভুলবেন না, কেমন!

